ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টার্গেট ঠিক করা আছে শিগগিরই ইসরাইলে ইরানের হামলা

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ১১ জুন ২০২৫

টার্গেট ঠিক করা আছে শিগগিরই ইসরাইলে ইরানের হামলা

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, ইসরাইল যদি ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ইরান সরাসরি ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে। সোমবার এক বিবৃতিতে পরিষদ জানায়, ইরানী গোয়েন্দা বাহিনীর একটি জটিল ও কৌশলগত অভিযানের মাধ্যমে তারা ইসরাইলের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত অসংখ্য গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করেছে।

পরিষদ আরও জানায়, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ইতোমধ্যেই ইসরাইলের সব পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তুর তালিকা রয়েছে। যেকোনো আগ্রাসনের ক্ষেত্রে সেগুলোতে তাৎক্ষণিক হামলা চালানো হবে। পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, এই গোপন অভিযানের মাধ্যমে ইরানের গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে একে "বুদ্ধিবৃত্তিক মাস্টারপিস" হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, এই সফলতা ইসরাইলের বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক ও তথ্যভিত্তিক বিজয়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবি জানায়, ৭ জুন ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা যে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে, তাতে ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর অবস্থান, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব রোববার জানান, এই গোপন নথিপত্র ইতিমধ্যে ইরানে পৌঁছেছে এবং তা শিগগিরই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে এই হুমকি-পাল্টা হুমকি গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। ইসরাইল এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে অতীতে তারা একাধিকবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাইবার ও সামরিক হামলা চালিয়েছে।

ইসরাইল ১৯৫২ সালে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে এবং ধারণা করা হয়, ১৯৬৮ সালের মধ্যেই তারা প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে। ১৯৮৬ সালে ডিমোনা পারমাণবিক কেন্দ্রে কর্মরত প্রযুক্তিবিদ মারদেখাই ভানুও এই গোপন কর্মসূচির তথ্য ফাঁস করেন, যার জন্য তাকে ১৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

ইরানের সর্বশেষ হুশিয়ারি আন্তর্জাতিক মহলে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দুই দেশের মধ্যে সামান্য উত্তেজনাও বৃহৎ সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে, যার প্রভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্ব রাজনীতিতে।


ফরিদ 

×