ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

হৃদরোগের নীরব সংকেত: ৭টি লক্ষণ যা অবহেলা করলে প্রাণ যেতে পারে

প্রকাশিত: ২২:৪২, ১৬ জুলাই ২০২৫

হৃদরোগের নীরব সংকেত: ৭টি লক্ষণ যা অবহেলা করলে প্রাণ যেতে পারে

হৃদযন্ত্র ঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে না পারলে তা হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা বা হার্ট ফেইলিউর হিসেবে পরিচিত হয়। এই রোগের কিছু লক্ষণ এতটাই সূক্ষ্ম ও সহজেই উপেক্ষাযোগ্য যে অনেকেই তা গুরুত্ব না দিয়ে ফেলেন। কিন্তু শুরুতে অবহেলা করলেও, এই রোগ সময়ের সঙ্গে আরও খারাপ হতে থাকে। তাই নিচের লক্ষণগুলোর যে কোনওটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

হার্ট ফেইলিউরের ৭টি নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ:

  1. শ্বাসকষ্ট: হাঁটাহাঁটি বা শুয়ে থাকার সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হলে সেটি হৃদযন্ত্রের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এমনকি রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত হতে পারে।

  2. অস্বাভাবিক দুর্বলতা বা ক্লান্তি: সামান্য কাজেই যদি অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, সেটা চিন্তার কারণ।

  3. পা, গোড়ালি ও পেট ফুলে যাওয়া: শরীরে তরল জমার কারণে এই লক্ষণ দেখা দেয়।

  4. ধীরে ধীরে ব্যায়ামক্ষমতা হ্রাস: আগে যা করতে পারতেন, এখন তা করতে গেলে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন?

  5. বুকে চাপ ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন: হৃদস্পন্দন দ্রুত বা এলোমেলো হয়ে পড়া বা বুক ধড়ফড় করা।

  6. অবিরাম কাশি ও ঘড়ঘড়ানি: সাদা বা গোলাপি কফসহ কাশি হতে পারে ফুসফুসে পানি জমার কারণে।

  7. ক্ষুধামান্দ্য ও বমি বমি ভাব: মনে হলেও এটি সাধারণ বদহজম নয়, হার্ট ফেইলিউরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে।

অন্যান্য লক্ষণ যা অবহেলা করা উচিত নয়:

  • হঠাৎ ও দ্রুত ওজন বেড়ে যাওয়া (তরল জমার কারণে)

  • রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

  • বুক ধড়ফড় বা ব্যথা

  • মনোযোগে ঘাটতি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি

হৃদযন্ত্রের সমস্যার সম্ভাব্য কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণরা কারা?

  • বয়স: ৬৫ বছরের বেশি হলে ঝুঁকি বেশি

  • উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস

  • ধূমপান বা তামাক সেবন

  • মোটাপনা ও অতিরিক্ত ওজন

  • পারিবারিক ইতিহাসে হার্ট ফেইলিউর থাকলে

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?

নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা গ্রহণ করুন:

  • বুকে প্রচণ্ড ব্যথা

  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা মারাত্মক দুর্বলতা

  • দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট

  • হঠাৎ তীব্র শ্বাসকষ্ট ও সাদা/গোলাপি ফেনাযুক্ত কফ ত্যাগ

হার্ট ফেইলিউর ধরা পড়লে যথাযথ চিকিৎসা, জীবনযাপনে পরিবর্তন (যেমন ওজন কমানো, কম লবণ খাওয়া, ব্যায়াম, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ) ও নিয়মিত চেকআপে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। মনে রাখবেন, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত হলে দীর্ঘজীবন ও উন্নত জীবনযাপন সম্ভব— ডা. রূপা আর, পরামর্শক ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট, অ্যাপোলো হাসপাতাল, বেঙ্গালুরু ।

 

Jahan

×