ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

যদি খাওয়ার পর এই কাজটা না করেন, হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে পারবেন না!

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ১০ জুলাই ২০২৫

যদি খাওয়ার পর এই কাজটা না করেন, হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে পারবেন না!

ছবি: সংগৃহীত

আমরা সবাই এ বিষয়ে বহুবার শুনেছি, নতুন নতুন গবেষণা পড়েছি, এমনকি হার্ট অ্যাটাকের পেছনের নানা কারণও জেনেছি। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি, কেবল কোলেস্টেরলই কি এই রোগের আসল কারণ? কখনো কি মনে হয়েছে, যদি আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো একটু গোছানো হতো, তাহলে হয়তো কোলেস্টেরলই বড় সমস্যা হতো না, আর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে যেত?

নতুন গবেষণা বলছে, দৈনন্দিন কিছু সাধারণ অভ্যাস যেমন—ভুল ঘুম, অলসতা আর দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ—নীরবে আমাদের হার্টের ক্ষতি করে চলে। এখন সময় সচেতন হওয়ার, আমাদের প্রতিদিনের এই ছোট ছোট অথচ ক্ষতিকর সিদ্ধান্তগুলোর দিকে নজর দেওয়ার।

৫ মিনিটেই বদলে ফেলুন জীবনযাপন—যা সত্যিই কাজে দেয়

চিকিৎসকেরা সাধারণত ওষুধ বা নানা ধরনের টেস্ট লিখে দেন, কিন্তু প্রায়ই ভুলে যান যে, দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস ওষুধের থেকেও বেশি কার্যকর হতে পারে। খুব ছোট, মাত্র ৫ মিনিটের কিছু অভ্যাসই আমাদের শরীরের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। যেমন—চেয়ার ছেড়ে একটু দাঁড়িয়ে স্ট্রেচিং, গভীর মনোযোগ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কিংবা খাওয়ার পর একটু হাঁটা—এসব ছোট ছোট অভ্যাসও অনেক গুরুত্ব রাখে।

ভাবুন তো, হয়তো আপনার হার্ট রক্ষার সবচেয়ে বড় অস্ত্র লুকিয়ে আছে আপনার দৈনন্দিন সময়সূচিতে, আর সেটা আপনার ওষুধের বক্সে নেই!

খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটা—হার্টের জন্য আশীর্বাদ

খাওয়ার পর হাঁটা শুধু হজমেই সাহায্য করে না, বরং শরীরের প্রদাহ কমায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
নিয়মিত খাবার—নাশতা, দুপুর বা রাতের খাবার—শেষে ১০ মিনিটের একটি হালকা হাঁটা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

যদি প্রতিদিন এই অভ্যাসটি চালু করেন, ধীরে ধীরে এটি আপনার হার্টের জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষা তৈরি করবে। প্রমাণিত, হার্ট সুস্থ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হতে পারে আকাশের নিচে একটু হাঁটা। শুধু হার্ট নয়, ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে এই অভ্যাস।

হার্ট বাঁচাতে চাইলে ঘুম ঠিক করুন

জানলে অবাক হবেন—খারাপ ঘুম হার্টের রোগের ঝুঁকি প্রায় ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
ঘুম মানে শুধু বিশ্রাম নয়, বরং পুরো শরীরের জন্য এক ধরনের পুনর্গঠন বা ‘রিপেয়ার’।

ঘুমের অভাব শরীরের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ এবং প্রদাহের মাত্রা সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত করে।
প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম অপরিহার্য। সকালে সূর্যের আলোয় কিছুক্ষণ সময় কাটানো ঘুমের স্বাভাবিক নিয়ম ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

আরও ওষুধ খাওয়ার আগে ঘুমের নিয়ম ঠিক করুন—এটাই হার্টের সবচেয়ে অবহেলিত কিন্তু কার্যকর ওষুধ।

প্লাস্টিক—নীরব বিষ, সাবধান!

আপনি কি এখনও প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করেন বা সংরক্ষণ করেন? তাহলে নিজেকেই ধীরে ধীরে বিষ খাওয়াচ্ছেন।
এখনই বন্ধ করুন!

প্লাস্টিক থেকে নির্গত হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক, যা শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।
আর এই দুইটি বিষয়ই হার্ট রোগের বড় কারণ।

প্লাস্টিকের বদলে ব্যবহার করুন কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র। নিয়মিত পানি ফিল্টার করেও শরীরের বিষাক্ত উপাদান দূর করতে পারেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, হার্ট রাখুন নিরাপদ

সুস্থ শরীরের জন্য কোমর ও শরীরের ওজন ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। এতে শরীরের ওপর চাপ কমে, হার্টের কাজ সহজ হয়।
স্বল্প পরিমাণ ওজন কমালেও হার্টের সুস্থতায় বড় পরিবর্তন আসে।

স্থায়ী পরিবর্তন আসে ছোট ছোট অভ্যাস থেকেই

হার্টের রোগ হঠাৎ করেই হয় না। এটা তৈরি হয় আপনার প্রতিদিনের খাওয়া-দাওয়া, ব্যায়াম, বিশ্রাম—এই সবকিছু দিয়ে। ভাগ্যের ব্যাপার নয়, এটা প্রতিদিনের অভ্যাসের ফল।

আর সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো, প্রতিরোধও ঠিক এইভাবেই কাজ করে।
ছোট ছোট অভ্যাস যেমন—হাঁটা, শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম—এসব নিয়মিত চর্চা আপনাকে দীর্ঘদিনের জন্য সুস্থ রাখে।

কোনো যাদু নেই, কোনো একদিনে বদলে যাওয়ার গল্প নয়—আপনার প্রতিদিনের অভ্যাসই আপনার সবচেয়ে বড় সুরক্ষা। অতি ছোট পরিবর্তনও সময়ের সাথে বড় ফল দেয়।

আবির

×