ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

রান্নাঘরের বিপদ ৯টি তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, আছে ক্যান্সারের ঝুঁকি!

প্রকাশিত: ২২:৫১, ৪ মে ২০২৫; আপডেট: ২২:৫৪, ৪ মে ২০২৫

রান্নাঘরের বিপদ ৯টি তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, আছে ক্যান্সারের ঝুঁকি!

ছবিঃ সংগৃহীত

রান্নার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হল তেল। তবে আপনি কি জানেন, কিছু রান্নার তেল মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে? সম্প্রতি ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট তেল গরম করলে বা বারবার ব্যবহার করলে সেই তেল থেকে এমন কিছু রাসায়নিক যৌগ তৈরি হয়—যেমন অ্যালডিহাইডস ও পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনস (PAHs)—যেগুলো ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, ও জেনোটক্সিসিটির মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রান্নার সময় এই ধরনের তেল পরিহার করাই সবচেয়ে নিরাপদ। নিচে এমন ৯টি তেলের তালিকা দেওয়া হল, যেগুলো এড়িয়ে চলা উচিত:

১. ক্যানোলা অয়েল:
রেপসিড থেকে তৈরি এই তেলটি উচ্চমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত এবং জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড হয়ে থাকে। এতে থাকা অতিরিক্ত ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

২. সয়াবিন তেল:
সস্তা ও বহুল ব্যবহৃত হলেও এটি উচ্চ ওমেগা-৬ যুক্ত এবং উচ্চ তাপে গরম করলে টক্সিক যৌগ তৈরি করে। অধিকাংশ সয়াবিন তেল তৈরি হয় হেক্সেন নামক পেট্রোলিয়াম-ভিত্তিক দ্রাবক দিয়ে, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।

৩. কর্ন অয়েল:
জিএমও ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাপপ্রবণ এই তেল উচ্চ ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত। পুনরায় গরম করলে এতে ক্ষতিকর অ্যালডিহাইডস তৈরি হয়।

৪. কটনসিড অয়েল:
একটি অখাদ্য উদ্ভিদের বীজ থেকে তৈরি হওয়ায় এতে প্রাকৃতিক টক্সিন যেমন ‘গসিপল’ থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে ক্ষতি করতে পারে।

৫. রিফাইন্ড সানফ্লাওয়ার অয়েল:
ধোঁয়ার পয়েন্ট অতিক্রম করলে এটি অক্সিডাইজ হয়ে বিষাক্ত যৌগ তৈরি করে। রিফাইনিংয়ের সময় প্রক্রিয়াজাত করার ফলে এতে থাকা উপকারী উপাদান ধ্বংস হয়ে যায়।

৬. স্যাফফ্লাওয়ার অয়েল:
এতে থাকা পলিইনস্যাচুরেটেড ফ্যাট গরম হলে সহজেই ভেঙে পড়ে এবং ফ্রি র‍্যাডিক্যাল তৈরি করে, যা ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

৭. ভেজিটেবল অয়েল:
নাম শুনে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও এটি বিভিন্ন সস্তা বীজতেলের মিশ্রণ। এতে ট্রান্স ফ্যাট এবং ইনফ্ল্যামেটরি যৌগ থাকে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

৮. রিফাইন্ড গ্রেপসিড অয়েল:
স্বাস্থ্যকর বলে প্রচারিত হলেও এটি ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর। তাপ প্রয়োগে এতে ট্রান্স ফ্যাট ও অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়।

৯. রাইস ব্রান অয়েল:
উচ্চ ওমেগা-৬ মাত্রা ও হেক্সেন দ্বারা উত্তোলনের ফলে এটি ব্যবহার করলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

তেল বারবার গরম করা কেন বিপজ্জনক?
রান্নার সময় একই তেল বারবার গরম করলে তা ভেঙে গিয়ে অ্যালডিহাইড, অ্যাক্রোলিন এবং ট্রান্স ফ্যাট তৈরি করে। এগুলো দেহে ইনফ্ল্যামেশন, হৃদরোগ এবং এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

অতিরিক্ত তেল গ্রহণের ক্ষতি:
অতিরিক্ত তেল খেলে ওজন বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, ইনসুলিন রেজিস্টেন্স, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। কিছু তেলে থাকা উপাদান রক্তনালিকে প্রসারিত করে হঠাৎ রক্তচাপ কমিয়ে ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:
পরিশোধিত ও হেক্সেন-প্রক্রিয়াজাত তেল এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, কিংবা অ্যাভোকাডো অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিন। রান্নার পাশাপাশি সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন, শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খান।
 

সূত্রঃ https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/food-news/9-toxic-cooking-oils-to-avoid-in-the-home-kitchen/photostory/120769080.cms?picid=120841899

রিফাত

×