ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

লং কোভিডে ভুগছেন কোটি মানুষ, সম্ভাব্য যুগান্তকারী চিকিৎসার ট্রায়াল শুরু করলেন বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ২১:১৯, ৪ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:১৯, ৪ মে ২০২৫

লং কোভিডে ভুগছেন কোটি মানুষ, সম্ভাব্য যুগান্তকারী চিকিৎসার ট্রায়াল শুরু করলেন বিজ্ঞানীরা

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ লং কোভিডে ভুগছেন। কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরও অনেকের শরীরে থেকে যায় নানা রকম উপসর্গ—যার মধ্যে রয়েছে চরম ক্লান্তি, মস্তিষ্কের অস্পষ্টতা (ব্রেইন ফগ), শ্বাসকষ্টসহ আরও অনেক জটিলতা। এই দীর্ঘমেয়াদি উপসর্গগুলোকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় লং কোভিড। রোগটি এখনো পুরোপুরি বোঝা যায়নি, আর উপসর্গগুলিও ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে পারে।

এই অবস্থায় নতুন আশার আলো জেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের নোভার সাউথইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (NSU) ও শমিড ইনিশিয়েটিভ ফর কোভিড (SILC)-এর যৌথ উদ্যোগে চালু হওয়া একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেকে।

সিপাভিবার্ট: নতুন আশার নাম

এই ট্রায়ালে পরীক্ষা করা হচ্ছে সিপাভিবার্ট নামের একটি দীর্ঘস্থায়ী মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যা তৈরি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এটি আগে থেকেই জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অনুমোদিত। তবে লং কোভিডের উপসর্গ উপশমে এই প্রথমবার এটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এফডিএ (যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) চলতি বছরের শুরুতেই সিপাভিবার্টকে অনুমোদন দিয়েছে। ট্রায়ালটিতে ইতোমধ্যেই ১০০ জন রোগী অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং গবেষকরা কয়েক বছরের মধ্যে ফলাফল বিশ্লেষণ করবেন।

জটিল ও বিভ্রান্তিকর একটি রোগ

লং কোভিডে ২০০টিরও বেশি উপসর্গ দেখা যেতে পারে। কেউ হালকা উপসর্গ নিয়ে দিন পার করেন, আবার কেউ মারাত্মকভাবে জীবনযাত্রায় বাধা পান।

ড. ন্যান্সি ক্লিমাস, NSU-এর নিউরো-ইমিউন মেডিসিন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বলেন, “লং কোভিড একটি জটিল ও অজানা রোগ। এর জন্য কার্যকর চিকিৎসা পেলে রোগীদের জন্য সেটি হবে জীবন বদলে দেওয়ার মতো একটি ঘটনা।”

বিশ্বজুড়ে প্রভাব ও প্রত্যাশা

ড. জন রেড, SILC-এর সিইও, বলেন, “বিশ্বজুড়ে অন্তত ৬.৫ কোটি মানুষ লং কোভিডে ভুগছেন। উপসর্গের সংখ্যা ২০০-রও বেশি, যা অনেক ক্ষেত্রেই জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এই ট্রায়াল আমাদের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অঙ্গীকারের প্রতিফলন।”

সমন্বিত প্রচেষ্টায় চিকিৎসা সম্ভাবনা

NSU-এর গবেষণা ও উদ্ভাবন বিভাগ থেকে ড. কেন ডসন-স্কালি জানান, “আমরা আমাদের গবেষণা দক্ষতা কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বদলে দিতে চাই। সিপাভিবার্টের এই ট্রায়াল একটি সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ।”

এই উদ্যোগ শুধুই একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নয়, এটি লং কোভিড মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি। বিশ্বজুড়ে ভুক্তভোগীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে এটি হতে পারে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।

 

সূত্রঃ https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/health-fitness/health-news/long-covid-affects-millions-scientists-begin-trial-for-potential-breakthrough-treatment/articleshow/120870807.cms

রিফাত

×