ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

রাবিতে জুনিয়র দুই শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ০১:০৭, ৫ মে ২০২৫; আপডেট: ০১:০৮, ৫ মে ২০২৫

রাবিতে জুনিয়র দুই শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ

ছবি: প্রতীকী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগে অধ্যয়নরত দুই জুনিয়র শিক্ষার্থী নিজ বিভাগের কতিপয় সিনিয়র কর্তৃক র‌্যাগিং ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শনিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে রোববার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন একই বিভাগের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল্লাহ শেখ এবং মেজবাহ দেওয়ান।

অন্যদিকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুকমিনুল ইসলাম চৌধুরি, গোলাম রাব্বী, মাহাবুব হোসেন, মেহেদী হাসান মিঠু, শাহ পরান ও শাহাদাত হোসেন। ঘটনার সময় তাদের ব্যাচের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শনিবার সন্ধ্যায় আমাদের বিভাগের সদ্য সিনিয়র কয়েকজন ভাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ছাদে আমাদের কয়েকজন বন্ধুকে ডেকে নিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর সামনে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে মানসিকভাবে নির্যাতন করে। এ সময় তারা আমাদেরকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করে গালিগালাজ করে। এরপর আমাদের দিয়ে বিভিন্ন অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে। সেই সঙ্গে আমাদের দিয়ে অশ্লীল কবিতা আবৃত্তি করার পাশাপাশি কুকুরের মতো হয়ে যৌন অঙ্গভঙ্গি দেখানোর জন্য বাধ্য করে। এতে আমরা অনাগ্রহ প্রকাশ করলে আমাদের বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করে যা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের জন্য চরম অবমাননাকর।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের মোবাইল ফোন জমা রেখে এসব কর্মকাণ্ড করেছে যাতে কেউ কোনো প্রমাণ রাখতে না পারে। তারা এ-ও বলেছে, এগুলো নিয়ে অভিযোগ দিয়ে কেউ কিছু করতে পারবে না। গতকালের এ বিষয়টি আমাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গতকালের ঘটনাটি আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক এবং ভীতকর অভিজ্ঞতা।’

অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করে তাঁরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম রাব্বী বলেন, ‘খেলায় জয়ী হওয়ায় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা সবাই একাডেমিক ভবনের ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। নাচ-গান ও খাওয়া দাওয়ার বাইরে সেখানে অন্যকিছু হয়নি।’ আরেক অভিযুক্ত মাহাবুব হোসেনও র‌্যাগিংয়ের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘জুনিয়র শিক্ষার্থীরা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফলে তাদের নিয়ে আড্ডা ও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ মেহেদী হাসান মিঠুও একই কথা বলে অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলে দুইজন শিক্ষার্থী অভিযোগ জমা দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের সঙ্গে এখনো কথা বলছি। এছাড়া ওই ব্যাচের ক্লাস ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা বলছি। তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও সঙ্গে কথা বলে মূল ঘটনা জানার চেষ্টা করা হবে। যদি র‌্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, সে যেই হোক না কেন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লুবনা শারমিন/রাকিব

আরো পড়ুন  

×