
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) বিভিন্ন পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেক সদস্য বছরের পর বছর এলাকায় অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিতভাবে সম্মানী ভাতা নিচ্ছেন। এতে প্রশ্ন উঠেছে দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও প্রশাসনিক নজরদারির ঘাটতি নিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কোম্পানি কমান্ডার ইমদাদুল হক পলাশ দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যশোরে একটি বেসরকারি সংস্থা (ব্র্যাক) অফিসে কর্মরত রয়েছেন। অথচ তার নামে নিয়মিত সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মহিলা দলনেত্রী রওশনারা বিবাহের পর স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। উজানচর ইউনিয়নের দলনেতা মিলন একটি মামলার কারণে দীর্ঘদিন গোয়ালন্দ থেকে অনুপস্থিত। আর পৌরসভার দলনেতা রাশেদুল ইসলাম প্রায় এক বছর ধরে প্রবাসী রয়েছেন।
নিয়মিত সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত উপজেলার কোম্পানি কমান্ডার ইমদাদুল হক পলাশ মোবাইল ফোনে বলেন, প্রায় এক বছর যাবৎ আমি যশোর ব্র্যাক অফিসে চাকরী করি। যশোর থেকে কিভাবে গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসে যোগাযোগ রাখেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি মাঝে মধ্যে বাড়ীতে আসলে যোগাযোগ রাখি।
পৌরসভার দলনেতা রাশেদুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসী রয়েছেন। অফিসে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তার স্ত্রী বলেন, সে বাড়ীতে নেই। আপনার নাম্বার আমি তার কাছে দিয়ে দিব। সে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। তিনি কি বিদেশে রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দেয়নি।
এদিকে উজানচর ইউনিয়নের দলনেতা মিলন এর নাম্বারে ফোন দিলে তার স্ত্রী বলেন, মিলন বাড়ীতে নেই। রাজনৈতিক মামলায় তিনি এখন এলাকায় থাকে না। ঢাকায় একটি কোম্পানীতে চাকরী করছেন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, দায়িত্বে না থেকেও নিয়মিতভাবে সম্মানী গ্রহণ করা অনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। এবং শূন্য পথ গুলো দ্রুত পূরণ করা প্রয়োজন। এতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিছু আনসার সদস্য উপকৃত হবেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তের উপজেলা আনসার ও ভিডিপি একাধিক সদস্য বলেন, জেলায় উপস্থিত না থেকেও তারা নিয়মিত সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। আমরা উপস্থিত থেকে তাদের সমান ভাতা পাই। বরং তাদের নিয়মিত যে কাজ রয়েছে সেটা আমরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করি। কিন্ত সেই অতিরিক্ত কাজের জন্য কোন প্রকার সম্মানী পাই না।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কমান্ডার ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যেগ নিয়েছি। তবে বিভিন্ন কারণে এখনও পর্যন্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। খুব তাড়াতাড়ি উদ্যোগ নিব। জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার মোস্তারী জাহান ফেরদৌস বলেন, ভাতা ও সুবিধাভোগি আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা নিজ এলাকায় থাকা বাধ্যতামূলক।
বাইরে থাকলে তারা সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা পাবে না। এমন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য ইউনিয়ন ও পৌরসভা দলনেতা ও দলনেত্রী মাসিক ভাতা ২হাজার ৫শত টাকা। উপজেলা কোম্পনী কমান্ডার ভাতা ১৫শত টাকা। সহকারী কোম্পানী কমান্ডার ১৩শত টাকা। মহিলা প্লাটুন কমান্ডার ১২শত টাকা। সহকারী আনসার কমান্ডার এক হাজার টাকা।