
হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক পালাবদলের সুযোগে ফুলবাড়িয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাস নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক একেএম শমসের আলী—এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন ৫টি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জেলা মোটর মালিক সমিতির মাধ্যমে এসব বাস ফের চালু করার আশ্বাস দিয়ে একটি বাস নিজের নামে করে নেন শমসের আলী। বর্তমানে বাসগুলো রাস্তায় চললেও নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি নিজেই।
এছাড়া স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার বাসা ব্যক্তিগত অফিস হিসাবে ব্যবহার, মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, সরকারি দপ্তরে প্রভাব বিস্তারসহ নানা অভিযোগ এনে শমসের আলীর বিরুদ্ধে জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পৌর বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ও ১৮ ডিসেম্বর পৃথক অভিযোগপত্রে পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল ফজল, শাহজাহান শিকদার, মাহবুবুল আলম সেলিমসহ অন্তত সাতজন নেতা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আতাত, আর্থিক দুর্নীতি এবং সংগঠনবিরোধী তৎপরতার অভিযোগ তুলেছেন শমসের আলীর বিরুদ্ধে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা থাকা সত্ত্বেও, তাকে সাথে নিয়ে শমসের আলী ঢাকা শাহবাগে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যান। এছাড়াও তিনি ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারুন অর রশিদের পক্ষে মঞ্চে উঠে ভোট চেয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে একেএম শমসের আলী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। যারা অভিযোগ দিয়েছিল, পরে তারাই আমার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে।”
তবে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম সেলিম বলেন, “আমরা তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছি। তিনি যেসব দাবি করছেন তা মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।”
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রুকুনুজ্জামান সরকার বলেন, “শমসের আলীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে আবুল ফজল বলেন, “আমি নিজ হাতে রুকুনুজ্জামান সরকারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি এখন না জানার কথা বলছেন, বিষয়টি দুঃখজনক।”
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
নুসরাত