ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে যে স্বীকৃতি পেলেন হামাস নেতা শহীদ ইয়াহিয়া সিনওয়ার

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৫ মে ২০২৫; আপডেট: ০৫:৪৮, ৫ মে ২০২৫

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে যে স্বীকৃতি পেলেন হামাস নেতা শহীদ ইয়াহিয়া সিনওয়ার

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় চলমান হামলার প্রেক্ষাপটে প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর বিশ্লেষণ ও স্বীকৃতি। ইয়াহিয়া সিনওয়ার ছিলেন গতবছর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকার। ইসরায়েলের কাছে তিনি ছিলেন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড পার্সন’।

সম্প্রতি ইসরায়েলের জনপ্রিয় দৈনিক ইসরায়েল হাইয়ুম এর কলামিস্ট ইয়াভ লিমুর এক প্রতিবেদনে লেখেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার পর এত বড় বিপর্যয় আর আসেনি। আর এই বিপর্যয়ের প্রধান দায়ী ইয়াহিয়া সিনওয়ার।’ তিনি উল্লেখ করেন, সিনোয়ার ইসরায়েলকে দুটি মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে গেছেন, ‘শত্রুর মূল্যায়ন তার কথায় নয়, সক্ষমতায় করতে হয়। আর গাজার যোদ্ধারা স্যান্ডেল পরা থাকলেও তারা প্রশিক্ষিত, বিপজ্জনক এবং সর্বোপরি চতুর।’

এ মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে এবং হামাস বলছে তারা প্রতিরোধে প্রস্তুত। ইসরায়েলের সাবেক মেজর জেনারেলও স্বীকার করেছেন, হামাস এখন গেরিলা কৌশলে যুদ্ধ করছে, অথচ ইসরায়েল এখনও পুরনো কৌশলে আটকে রয়েছে, যা এখন তাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইয়াহিয়া সিনওয়ার শহীদ হয়েছেন। হামাস দাবি করে, তিনি কোনো সুড়ঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন না বরং রাফার তাল আল-সুলতান শরণার্থী শিবিরে অন্য যোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। হাতে রাইফেল, গ্রেনেড ও গুলিভর্তি জ্যাকেট পরে তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

যুদ্ধের একপর্যায়ে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গুলি ছোড়া হয়। পরে ড্রোন হামলায় তিনি ধুলায় ঢেকে, রক্তাক্ত অবস্থায়ও জীবিত ছিলেন। তখন তার মাথায় বাঁধা ছিল কেফায়া। হাতে তখন আর কোনো অস্ত্র ছিল না, কেবল একটি লাঠি, যা তিনি ড্রোনের দিকে ছুড়ে মারার চেষ্টা করেন। এরপর ইসরায়েল আবারও ঐ ঘরে বোমা হামলা চালায় এবং তাতেই শহীদ হন তিনি।

সিনওয়ারের মৃত্যু হামাসের জন্য বড় ধাক্কা হলেও, তাঁর লড়াই এবং মৃত্যু হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনিদের কাছে প্রতিরোধের প্রতীক। ইসরায়েলি বিশ্লেষকরাও এখন স্বীকার করছেন, শত্রুকে অবজ্ঞা করা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা সিনওয়ার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।

ইয়াহিয়া সিনওয়ার ছিলেন এমন এক নেতা, যিনি কৌশল, সাহস ও আত্মত্যাগের অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন। তাঁর শেষ যুদ্ধের এই কাহিনি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=Wlmo3KdpXvE

রাকিব

×