ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

চুলকানি দিয়ে শুরু হয়ে শেষ হতে পারে কিডনির বিপর্যয়ে!

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ২৩ জুন ২০২৫

চুলকানি দিয়ে শুরু হয়ে শেষ হতে পারে কিডনির বিপর্যয়ে!

দীর্ঘদিনের চুলকানি, খসখসে ত্বক কিংবা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ দেখলে অনেকেই প্রথমেই চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মলম লাগিয়ে ফেলেন কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন শুরু করেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, এমন ত্বকের সমস্যাগুলি নিছক চর্মরোগ না-ও হতে পারে, এটি হতে পারে কিডনি রোগের অন্যতম লক্ষণ।

চিকিৎসকদের ভাষায়, এই লক্ষণগুলিকে বলে 'প্রুরিটাস' এক ধরনের তীব্র চর্মরোগ যা মূলত শরীরে টক্সিন জমা ও প্রদাহ বৃদ্ধির কারণে দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রুরিটাস ও কিডনি রোগের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।

কিডনির রোগ বলতে অনেকে শুধুই প্রস্রাবের সমস্যা বুঝে থাকেন, কিন্তু এটি ভুল ধারণা। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে কিডনি রোগের সূচনা হয় এমন উপসর্গ দিয়ে, যা সাধারণত অবহেলা করা হয়। যেমন ত্বকে অতিরিক্ত শুষ্কতা, সারা গায়ে চুলকানি, র‌্যাশ বা সোরিয়াসিসের মতো স্কেলি ত্বক।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলোকে চর্মরোগ ভেবে ভুল চিকিৎসা শুরু করলে রোগ আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। সময়মতো সঠিক রোগ নির্ণয় না হলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানায়, ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতের কিডনি রোগে আক্রান্তের হার ১১.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬.৩৮ শতাংশে। প্রতি বছরই কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ, যার মধ্যে শিশুদের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগ ধরা পড়ে অনেক দেরিতে, যখন তা মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে যায়।

ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন-এর তথ্যমতে, কিডনির অসুখে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৪০% রোগীর শরীরে দেখা দেয় চুলকানি বা ত্বকের অন্যান্য জটিলতা।

চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে চুলকানি বা অস্বাভাবিক ত্বকের সমস্যা থাকলে তা অবহেলা না করে রক্ত ও ইউরিয়া পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ, কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ চেনা গেলে এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।

সুতরাং, স্রেফ মলম বা স্টেরয়েডে ভরসা না করে, ত্বকের সমস্যার পেছনের কারণ খুঁজে দেখা এখন সময়ের দাবি। কিডনি বাঁচাতে চাই সতর্কতা ও সচেতনতা।

×