
ছবি: সংগৃহীত।
ভিটামিন ডি—সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান, যা আমাদের শরীরের হাড়ের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এই ভিটামিনের ঘাটতির প্রভাব শরীরের বিভিন্ন অংশে নানা রকম উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যার মধ্যে পা অন্যতম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে তা সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয় পায়ের হাড়, পেশি এবং স্নায়ুতে। সমস্যাটি প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত না হলে ভবিষ্যতে এটি জটিল আকারও নিতে পারে।
পায়ের চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ যা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির ইঙ্গিত দিতে পারে:
১. পায়ের হাড়ে ব্যথা
বেশি হাঁটাচলা বা শারীরিক পরিশ্রমের পর পায়ের হাড়ে ব্যথা অনুভব করলে এটি ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
২. পেশির দুর্বলতা
সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, চেয়ার থেকে উঠা বা বেশি হাঁটলে পায়ে জোর না পাওয়া—এ ধরনের দুর্বলতা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির ফলে পেশির গঠন দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে হয়।
৩. রিকেট বা পা বেঁকে যাওয়া
শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর গুরুতর ঘাটতির ফলে রিকেট রোগ দেখা দিতে পারে, যার ফলে পা বেঁকে যেতে পারে বা হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।
৪. পায়ে বা হাতে ঝিঁঝিঁ ধরা
ঘন ঘন ঝিঁঝিঁ ধরার অনুভূতি (tingling sensation) থাকলে সেটিও ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির একটি সম্ভাব্য উপসর্গ হতে পারে।
প্রতিকার কী?
১. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় (সকাল ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে) সরাসরি রোদে ১৫–২০ মিনিট থাকা।
২. খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাছ (সালমন, টুনা), দুগ্ধজাত খাদ্য, মাশরুম ও ভিটামিন ডি ফোর্টিফায়েড সিরিয়াল যোগ করা।
৩. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই উপসর্গগুলো যদি নিয়মিত দেখা যায়, তবে দেরি না করে রক্তের মাধ্যমে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা নির্ণয় করে নেওয়া উচিত। কারণ, দীর্ঘমেয়াদে এই ঘাটতি হাড় ভাঙার ঝুঁকি বাড়ায় এবং মনঃস্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শরীরের ছোট ছোট উপসর্গ উপেক্ষা না করে সচেতনভাবে পর্যাপ্ত রোদে থাকা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণই হতে পারে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। সুস্থ জীবনযাত্রা গঠনে প্রতিদিনের যত্ন জরুরি।
সায়মা ইসলাম