ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

চার দিন পর কালুরঘাটে মিলল হালদা নদীতে ‘নিখোঁজ’ শিশুর লাশ, বাবার সন্দেহ ‘হত্যা’

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ২৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:৫৯, ২৩ জুন ২০২৫

চার দিন পর কালুরঘাটে মিলল হালদা নদীতে ‘নিখোঁজ’ শিশুর লাশ, বাবার সন্দেহ ‘হত্যা’

ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সুয়াবিল থেকে চার দিন আগে নিখোঁজ হওয়া দেড় বছরের শিশু তাহিয়ার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (২২ জুন) বিকেলে হালদা নদীর শেষপ্রান্তে নগরীর কালুরঘাট সেতুর কাছে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করেছেন তার পিতা।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু তাহিয়া। গতকাল রোববার বিকেলে পুলিশ লাশের সুরতহাল তৈরি করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। আজ সোমবার বিকেলে মর্গ থেকে লাশ রিলিজ দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে বাবার সন্দেহ, পূর্বপরিকল্পিতভাবেই তাহিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, নিখোঁজ হওয়ার সময় তাহিয়ার পরনে কোনো কাপড় ছিল না, শুধুমাত্র একটি প্যান্ট ছিল। কিন্তু লাশ উদ্ধারের পর তার গায়ে জামা-কাপড় দেখা যায়। এতে সন্দেহের দানা বাঁধে বাবার। পুরো বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে পরে খোলাসা করবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

নিহত শিশু তাহিয়া উপজেলার পূর্ব-সুয়াবিল গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক ড্রাইভারের কন্যা। তার ছয় বছরের একটি ভাইও আছে। তাহিয়ার বাবা এলাকার একজন আদর্শ সিএনজি অটোরিকশা চালক। শিশুর স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে এগারটা পর্যন্ত তাহিয়াকে বসতঘরের সামনে খেলতে দেন তার মা। এরপর থেকেই তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের বসতঘরের অল্প দূরেই হালদা নদী। পরিবারের লোকজন ধারণা করেছিলেন মুহূর্তেই তাহিয়া হালদায় তলিয়ে যেতে পারে, কারণ নদীতে তখন ছিল অথৈ পানি। বিষয়টি জানাজানি হলে নদীর দু'পাড়ে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালানো হয়। ডুবুরিরাও খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোথাও তাহিয়ার সন্ধান মেলেনি।

নাজিরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘নিখোঁজের পর অবশেষে তার লাশ মিলেছে হালদায়, বাড়ি থেকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার দূরে, চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট সেতুর কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা খবর দিলে শিশুটির বাবা সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।’ নিহতের বাবার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবতে শুরু করেছি। এখন পুরো এলাকায় চলছে শোকের মাতম।’

শিশুটির বাবা মোহাম্মদ মানিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আদরের কন্যার লাশ বহন করার শক্তি আমার নেই। আপনারা অনেক শ্রম দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। তবে লাশ স্বচক্ষে দেখার পর মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ, তার পরনে প্যান্ট ছাড়া কোনো কাপড় ছিল না। ফলে আমার সন্দেহ হচ্ছে, কেউ পূর্বপরিকল্পিতভাবে মেয়েকে হত্যা করতে পারেন। তবে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করতে কিছু সময় নিচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে আজ সোমবার লাশ দাফনের পরপরই বিষয়টি সাংবাদিকদের খোলাসা করতে চাই। এর আগে কিছুই বলতে চাই না।’

ইমরান

×