
সংগৃহীত
আম খাওয়ার পর আমরা সাধারণত বিচি ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি? এখন সেই আমের বিচিই বিক্রি হচ্ছে ভালো দামে! আগে যেটাকে কেউ মূল্য দিত না, আজ সেটাই হয়ে উঠেছে টাকার খনি। আমের বিচির চাহিদা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই বেড়ে যাচ্ছে দ্রুত। কারণ এর ভেষজ গুণ, খাদ্যমান, এবং প্রসাধনীতে এর অবিশ্বাস্য ব্যবহার।
কেন এত চাহিদা আমের বিচির?
বর্তমানে আমের বিচি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মূল্যবান পণ্য। আমের বিচি শুকিয়ে গুঁড়া করে তা ব্যবহার করা হচ্ছে:
- হারবাল চা
- ডায়রিয়া ও আমাশয়ের ভেষজ ওষুধ
- ওজন কমানোর খাবার
- গ্লুটন ফ্রি ফ্লাওয়ার
- প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক ও হারবাল প্রসাধনী
সবচেয়ে বেশি চাহিদা এখন আমের বিচি থেকে তৈরি 'ম্যাঙ্গো সিড অয়েল' এবং 'ম্যাঙ্গো বাটার'। এগুলো বিশ্ববাজারে কসমেটিক পণ্যের জন্য দারুণ জনপ্রিয়। ত্বক নরম ও ময়েশ্চারাইজ করতে ম্যাঙ্গো বাটারের ব্যবহার এখন অনেক প্রসাধনী ব্র্যান্ডে নিয়মিত। তাই দেশবিদেশের অনেক হারবাল কোম্পানি আমের বিচি কিনে নিচ্ছে সরাসরি।
কোন দেশ আমের বিচি কিনছে?
বিশ্বের বড় বড় দেশ এখন আমের বিচির ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ভারত এবং ফিলিপাইন আমের বীজ আমদানি করছে কসমেটিক, হারবাল ও ফুড প্রোডাক্ট তৈরির জন্য।
বিশেষ করে:
- যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা: ম্যাঙ্গো সিড অয়েল ও হারবাল চা তৈরির জন্য আমের বীজ আমদানি করছে।
- ফ্রান্স ও ইউরোপ: প্রাকৃতিক কসমেটিক্সে ব্যবহারের জন্য চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
- ভারত ও ফিলিপাইন: খাদ্য ও ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির কাঁচামাল হিসেবে আমের বিচির ব্যবহার বাড়ছে।
কৃষকদের জন্য নতুন আয়
যারা আমের বাগান করেন, তারা এখন ফলের পাশাপাশি বিচিও শুকিয়ে বিক্রি করছেন। আগে যেটা ফেলে দেওয়া হতো, এখন সেটাই বিক্রি হচ্ছে টাকায়। অনেক কৃষক এখন আমের বিচি আলাদাভাবে সংগ্রহ করে রাখছেন, কারণ এটার দাম দ্রুত বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার হারবাল মার্কেটে আমের বিচির চাহিদা আরও বাড়বে। ফলে বাংলাদেশের জন্য এটি হতে যাচ্ছে নতুন রপ্তানি সম্ভাবনা।
আমের বিচির যাত্রা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এক সময় অবহেলিত ছিল, এখন বিশ্ববাজারের কাঁচামাল হিসেবে উঠেছে তারকা পণ্যের তালিকায়। শুধু আম খাওয়ার আনন্দেই নয়, এখন আমের বিচিও এনে দিচ্ছে অর্থনৈতিক সুফল।
হ্যাপী