প্রতি রাতে খালি পেটে ৩টা ডুমুর খেলে কী হয় জানেন? উত্তর দেখে চমকে যাবেন

বাংলার প্রাচীন চিকিৎসা জগতে বহু আগে থেকেই যেসব গাছগাছড়ার কদর ছিল, তার মধ্যে অন্যতম এক নাম যব ডুমুর। গ্রামের মেঠোপথের ধারে কিংবা ছোট খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছটিকে অনেকেই ‘অযত্নের গাছ’ বলে অবহেলা করলেও, চিকিৎসাশাস্ত্রে এর রয়েছে অসাধারণ ঔষধিগুণ। বৈজ্ঞানিক নাম Ficus racemosa হলেও স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত ‘যব ডুমুর’ নামে। এর ছাল, ফল, দুধ, এমনকি পাতাও বহু রোগ নিরাময়ে কার্যকর বলে দাবি করছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা।

🔶 ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে অর্শ — বহুমুখী গুণ

গবেষণা বলছে, যব ডুমুরের ছালের নির্যাস রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক সহায় হতে পারে। এছাড়া যাদের দীর্ঘদিন ধরে অর্শ বা পাইলস রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এটি উপকারী। বিশেষ করে রক্তপাতজনিত অর্শে যব ডুমুরের শুকনো ফল রাতে ভিজিয়ে সকালে খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।পেটের নানা সমস্যা, যেমন: আমাশয়, ডায়রিয়া বা হজমের সমস্যা নিরাময়ে যব ডুমুরের ছাল ব্যবহার করা হয় আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসায়। এছাড়া যকৃতের রোগ, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, চর্মরোগ ও বাতব্যথার ক্ষেত্রেও যব ডুমুর কার্যকর।

🔶 খাওয়ার ঘরোয়া উপায়

ডায়াবেটিসের জন্য:
যব ডুমুরের শুকনো ছাল এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

অর্শ ও কোষ্ঠকাঠিন্যে:
৩-৫টি শুকনো যব ডুমুর সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে চিবিয়ে খাওয়া এবং সেই পানি পান করলে উপকার মেলে।

ত্বক ও রক্ত বিশুদ্ধকরণে:
ডুমুরের গুঁড়োর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়, ফলে ব্রণ, চুলকানি ও অন্যান্য চর্মরোগ কমে।

হজমে ও পেটের রোগে:
যব ডুমুরের ছালের গুঁড়ো গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে ও অন্ত্রের প্রদাহ কমে।

রোগপ্রতিরোধে:
দুধের সঙ্গে যব ডুমুরের গুঁড়ো মিশিয়ে রাতে খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

🔶 চর্মরোগে বাহ্যিক ব্যবহারও জনপ্রিয়

চুলকানি, ফোঁড়া বা একজিমার মতো চর্মরোগে যব ডুমুরের পাতার রস বা ছালের বাটা বাহ্যিকভাবে ক্ষতস্থানে লাগালে উপশম হয়। এর দুধ জাতীয় রস ক্ষতস্থানে লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয় এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।