লাম্পিতে বিপর্যস্ত খামারিরা

বৈরি আবহাওয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ নানা কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে ভয়াবহভাবে বাড়ছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (খঝউ)। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু ও মহিষ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বাছুর। বিশেষ করে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে গরু। গত এক মাসে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলাতে আক্রান্ত হয়েছে ৬০টি গবাদিপশু। তার মধ্যে ৩টি গরু মারা  গেছে। এছাড়া গোটা জেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩৫১টি গবাদিপশু। তার মধ্যে মারা গেছে ২৯টি পশু। সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী লাম্পি স্কিন রোগ মানুষের জন্য ক্ষতিকর না হলেও গবাদিপশুর জন্য মারাত্মক সংক্রামক একটি রোগ। এটি ছোঁয়াছে। খুব দ্রুত এটি এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়িয়ে পড়ে। জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা। প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত গরুর জ্বর হয়, শরীর ফুলে ওঠে, ত্বকে গুটি দেখা দেয়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পশুর মৃত্যু ঘটে।

আক্রান্ত পশুর পাশে সুস্থ পশু থাকলে সেখানেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই আক্রান্ত পশুকে দ্রুত আলাদা স্থানে রেখে চিকিৎসা নিতে হয়। ৮ মাসের গর্ভবতী গাভী নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে ভেটেরিনারি হাসপাতালে আসেন আসাদুল ইসলাম নামের এক খামারি। তিনি বলেন, গরুটার পেটে বাচ্চা। ৭ দিন থাকি জ্বর আর শরীর কাঁপে। খুব বিপদত আছি। আল্লাহ জানে কপালত কী আছে। হামার এলাকাত ৫-৬টা বাছুর মরছে এ পর্যন্ত। 
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. কামরুল ইসলাম বলেন, গত ১ মাসে আমাদের এখানে ৬০টি গরুর চিকিৎসা নিতে আনে। তার মধ্যে ৩টি গরু মারাও গেছে। আসলে এ রোগের ভ্যাকসিন এখনো আসেনি। আশা করছি আগস্ট মাসে ভ্যাকসিন আসবে। তখন রোগের প্রকোপ কমে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছি গরুর ঘর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি রোগাক্রান্ত গরুকে মশারি দিয়ে রাখার।  
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.  হাবিবুর রহমান জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫১টি গবাদিপশু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে মারা গেছে ২৯টি। তবে দিনে দিনে এই রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা কমছে।