ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

নালিতাবাড়ীতে ভাঙা ব্রিজের কারণে বিপাকে হাজারো মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর 

প্রকাশিত: ২২:০৩, ২৩ জুন ২০২৫

নালিতাবাড়ীতে ভাঙা ব্রিজের কারণে বিপাকে হাজারো মানুষ

ছবি: জনকণ্ঠ

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পলাশীকুড়া-বাতকুচি পাহাড়ি এলাকায় প্রবাহিত খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত মিনি স্টিল ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কমপক্ষে ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ। মানুষের পারাপার ও কৃষিপণ্য বিক্রিতে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় বর্তমান বর্ষা মৌসুমে দুই পাড়ের মানুষকে ৫-৬ কিলোমিটার ঘুরে চলাফেরা করতে হচ্ছে। তাই ভুক্তভোগীরা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

সূত্রে জানা গেছে, এলাকার মানুষের নদী পারাপারের কথা বিবেচনা করে কয়েক বছর আগে চেল্লাখালী নদীর পলাশীকুড়া ও বাতকুচি এলাকায় এলজিএসপি’র অর্থায়নে একটি মিনি স্টিল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। ব্রিজটি ২০২২ সালে পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেখানে একটি বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হয়। সেটিও এবারের পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে। ফলে দুই পাড়ের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্থানীয় বাতকুচি গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষিকা সুমী আক্তার জানান, এই নদীর পলাশীকুড়া-বাতকুচি ঘাট দিয়ে শত শত শিক্ষার্থী পলাশীকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশীকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগম রওশন আরা একাডেমি, হোসেন আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাপ্তি একাডেমিতে যাতায়াত করে। বর্ষা মৌসুমে ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থীদের নদী পারাপারে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান, আজিজুল হক, বিল্লাল হোসেন ও আবদুল বারেক জানান, বাতকুচি গ্রামটি পাহাড়ঘেঁষা হওয়ায় মাঝে মধ্যেই বন্যহাতির তাণ্ডব হয়। তখন জানমাল বাঁচাতে গ্রামের মানুষ নদী পার হয়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ব্রিজ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ৫-৬ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে গিয়ে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া এই এলাকা দিয়ে নদী পার হয়ে জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্ক, পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ, বাতকুচি, মেষকুড়া, সমশ্চুড়া, বারমারী বাজার, পলাশীকুড়া, আন্ধারুপাড়া, ডালুকোনা, শেকেরকুড়া ও বোনারপাড়া গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে।

গত তিন বছর ধরে ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় শিক্ষার্থী, কৃষক, শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এমনকি পাশের বারমারী বাজারে নিত্যপণ্য কিনতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই দ্রুত নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মানুষের ভোগান্তি কমাতে গত বছরের শুরুতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি টিম নদী এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছে। এলজিইডির প্রকৌশলীরা মাপজোক করেছেন। তারা দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের কথা বললেও এখনও কোনো কাজ শুরু হয়নি। তিনি দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।

নালিতাবাড়ী এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, চেল্লাখালী নদীর ওই স্থানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এলজিইডির পক্ষ থেকে পরিদর্শন ও প্রাথমিক জরিপ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শহীদ

×