ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

উলিপুরে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধায় বদলে যাচ্ছে জনজীবন

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম | 

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ২৩ জুন ২০২৫

উলিপুরে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধায় বদলে যাচ্ছে জনজীবন

কুড়িগ্রামে নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করায় খুশি স্থানীয়রা। এতে পরিবেশ রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বদলে যাবে মানুষের জীবনযাত্রা। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগবে উলিপুর উপজেলা শহরের মানুষের জীবনে।

কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত ৪৫৮.৪৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উলিপুর উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন। উলিপুর পৌরসভায় প্রথমবারের মতো পয়ঃনিষ্কাশন ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা নিয়ে দারুণ খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।

দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংকট ও পয়ঃনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় জনগণ চরম দুর্ভোগে ভুগছিল। রাস্তায় ময়লা পানি জমে থাকত, সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ত প্রতিটি রাস্তা। চলত মানুষের নীরব কান্না। এখন প্রথমবারের মতো ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন শুরু হওয়ায় পৌরবাসী আশাবাদী। এটি বাস্তবায়ন হলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এখান থেকে উৎপাদিত জৈব সার সারের ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করবে এবং পরিবেশও রক্ষা পাবে।

বাংলাদেশের ২৩টি পৌরসভায় “পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন”, “গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন”, এবং “স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প ও নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প”-এর আওতায় প্রায় ২০ হাজার পরিবারের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উলিপুরেও এর আওতায় পাবলিক টয়লেট স্থাপন, পয়ঃনিষ্কাশন ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলায় ইউনিয়ন ও পৌরবাসীর জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ বিশুদ্ধ পানি এবং উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আসবে। শুধু উপজেলা শহরে নয়, ইউনিয়ন পর্যায়েও হতদরিদ্র পরিবারের জন্য টুইন পিট ল্যাট্রিন এবং ১০টি পরিবারে ৩ হাজার লিটার ধারণক্ষম ট্যাংকের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

উলিপুর উপজেলায় তিনটি নদী থাকলেও এখানকার পানিতে আয়রনের পরিমাণ বেশি। ফলে যুগের পর যুগ এ অঞ্চলের মানুষ আয়রনযুক্ত পানি পান করে শারীরিক সমস্যায় ভুগেছে। এখন নিরাপদ পানি নিশ্চিত হওয়ায় সেই ভোগান্তি দূর হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। সরকারি এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে উপজেলায় অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, উলিপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিত্যানন্দ বর্মণ জানান, উপজেলার নাগরিকদের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব কাজ শেষ হলে এ অঞ্চলের মানুষ নিরাপদ পানি পান করতে পারবে। সেইসাথে ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থারও উন্নতি হবে।

সজিব

×