রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন? ঘরোয়া পানীয়েই বাড়বে রক্তের হিমোগ্লোবিন

স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো শরীরে সঠিক মাত্রায় রক্ত ও হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি। কারণ হিমোগ্লোবিনই শরীরের কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে। কিন্তু বর্তমানে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে, যা হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান লক্ষণ। এর ফলে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

তবে সুখবর হলো, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু ঘরোয়া পানীয় যুক্ত করলেই প্রাকৃতিকভাবে রক্তের পরিমাণ বাড়ানো এবং আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। নিচে এমন কিছু পানীয়ের কথা তুলে ধরা হলো, যা নিয়মিত পান করলে রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করবে।

বিটরুটের জুস

বিটরুটে রয়েছে উচ্চমাত্রার আয়রন ও ফলেট (ভিটামিন বি৯), যা নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। পাশাপাশি এতে থাকা প্রাকৃতিক নাইট্রেট রক্তপ্রবাহ ও সঞ্চালন উন্নত করে। বিটরুটের জুস তৈরির জন্য শুধু তাজা বিট ব্লেন্ড করে সামান্য পানি ও লেবুর রস মেশালেই তৈরি। লেবুর ভিটামিন ‘সি’ আয়রন শোষণে সাহায্য করে। নিয়মিত এই জুস পান করলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে ও রক্তসঞ্চালন ভালো হয়।

পালং ও বাঁধাকপির স্মুদি

সবুজ পাতা জাতীয় শাক যেমন পালং ও বাঁধাকপি ভরপুর আয়রন, ফলেট এবং ভিটামিন ‘সি’ দিয়ে। এগুলো হিমোগ্লোবিন উৎপাদন এবং নতুন রক্তকণিকা গঠনে ভূমিকা রাখে। এই শাকসবজির সঙ্গে কমলা বা বেরির মতো ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল মিলিয়ে স্মুদি তৈরি করা যায়, যা আয়রনের শোষণ বাড়ায় এবং খেতেও সুস্বাদু। নিয়মিত এই স্মুদি পান করলে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

গাজর ও আপেলের জুস

গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন বা ভিটামিন ‘এ’ রক্তকণিকার স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অপরদিকে আপেলে রয়েছে আয়রন ও ভিটামিন ‘সি’। দুইটি উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি এই রস রক্ত উৎপাদনকে বাড়িয়ে তোলে। তৈরির জন্য তাজা গাজর ও আপেল ব্লেন্ড করে সামান্য আদা যোগ করা যায়, যা স্বাদ ও পুষ্টিগুণে বাড়তি সুবিধা দেয়। নিয়মিত পান করলে রক্তের মানোন্নয়ন ও শক্তি বৃদ্ধি ঘটে।

বেদানার জুস

বেদানায় রয়েছে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন ‘সি’ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলো রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ ও হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়ক। বেদানার রস শুধু রক্ত উৎপাদনে নয়, হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ ও রক্ত চলাচল উন্নত করতেও উপকারী। ঘরে তৈরি করতে চাইলে বেদানার দানা ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। চাইলে বাজার থেকে শতভাগ খাঁটি বেদানার রসও গ্রহণ করা যায়। প্রতিদিন এক গ্লাস বেদানার রস রক্তস্বল্পতা মোকাবিলায় কার্যকর হতে পারে।

নোট: উপরের যেকোনো পানীয় খালি পেটে বা সকালের নাস্তার সঙ্গে গ্রহণ করলে আরও ভালো উপকার পাওয়া যায়। তবে গুরুতর অ্যানিমিয়া থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।