ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

চার মাসেই ধসে পড়ল প্রটেকশন, বর্ষার আগেই আতঙ্কে রাবনাবাদপাড়ের বাসিন্দা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ০১:০৩, ৫ মে ২০২৫

চার মাসেই ধসে পড়ল প্রটেকশন, বর্ষার আগেই আতঙ্কে রাবনাবাদপাড়ের বাসিন্দা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাবনাবাদ নদীর করমজাতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ রক্ষায় দেওয়া জরুরি ‘জিও ব্যাগ ও টিউব’-এ চার মাসের মাথায় ধস দেখা দিয়েছে। এতে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই আতঙ্কে পড়েছেন নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ। তারা বলছেন, এই অবস্থায় যেকোনো সময় মূল বাঁধও ধসে গিয়ে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রটেকশনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের জিও ব্যাগ ও পুরনো, ছেঁড়া জিও টিউব। এতে নদীর ঢেউয়ের আঘাতে ব্যাগ ছিঁড়ে বালু বের হয়ে গেছে, আর বাঁধের স্লোপ দ্রুত ধসে পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, এভাবে চললে পুরো বাঁধ বর্ষা আসার আগেই বিলীন হয়ে যেতে পারে।

করমজাতলার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, টিউবগুলো বসানোর সময়ই আমরা দেখেছি, অনেকগুলো টিউব ছেঁড়া। নিচে জিও ব্যাগ না থাকায় সাপোর্টও ছিল না। বর্ষা নামলে বড় বিপদ হবে।

আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, রাবনাবাদ নদীতে বছরের পর বছর ড্রেজিংয়ের কারণে এখানে ভাঙন আরও বেড়েছে। অথচ জরুরি প্রটেকশনে টেকসই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কলাপাড়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলাপাড়া উপজেলার ৫৪/এ পোল্ডারের ১৩.০০ কিমি থেকে ১৪.১২০ কিমি পর্যন্ত—মোট ১,১২০ মিটার বেড়িবাঁধ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব বসানো হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা।

পাউবো কলাপাড়ার উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যা রতন সরকার বলেন, ওই স্পটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। উত্তাল ঢেউয়ের কারণে প্রটেকশন দেওয়া হয়েছিল। মাটি সংকট ছিল, অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। তবুও আমরা কাজটি সুন্দরভাবে করেছি। নিম্নমানের ব্যাগ বা ছেঁড়া টিউব ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়।

তবে তিনি স্বীকার করেন, স্পটটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে স্থায়ী প্রটেকশনের জন্য ব্লক বসানো দরকার।


পাউবো’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ আলম ভূঁইয়া জানান, ওই জায়গাটা ক্রিটিক্যাল। ভেতরে জায়গা নেই, মাটিরও সংকট। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ছাড়া এখানে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়।

এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিবছর বর্ষা আসলেই রাবনাবাদ নদীর ভাঙনে তাঁরা আতঙ্কে থাকেন। অথচ দীর্ঘদিনেও এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হয়নি। এবারও জরুরি কাজ ধসে পড়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ।

সরকারি উদ্যোগে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হলে পুরো করমজাতলা ও আশপাশের গ্রামগুলো যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সবাই।

এসএফ 

×