ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

৬৫টি ধারা ও ১৪ পরিচ্ছেদ যোগ করার সুপারিশ আইন কমিশনের

স্বাস্থ্যসেবা আইনের খসড়া ৮ বছর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে

বিকাশ দত্ত

প্রকাশিত: ০০:২৫, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

স্বাস্থ্যসেবা আইনের খসড়া ৮ বছর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে

চিকিৎসায় অবহেলাজনিত কারণে দুটি শিশুর মৃত্যু

দুই মাসের ব্যবধানে রাজধানীতে চিকিৎসায় অবহেলাজনিত কারণে দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একটি বেসরকারি স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী আয়ানকে গত ৩১ ডিসেম্বর ফুল অ্যানেস্থেসিয়া (জেনারেল) দিয়ে খতনা করা হয় বাড্ডার সাঁতারকুলে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই তার খতনা করানো হয় বলে অভিযোগ করেন তার বাবা শামিম আহমেদ। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পরও জ্ঞান না ফেরায় সেখান থেকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয় আয়ানকে।

সেখানে সাতদিন পিআইসিইউতে (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) লাইফ সাপোর্টে রাখার পর ৭ জানুয়ারি মাঝরাতে আয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় আহনাফ তাহমিন আয়হাম নামে আরেক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। চিকিৎসকদের অবহেলাজনিত কারণে যাতে রোগীর মৃত্যু না ঘটে, সেজন্য আইন কমিশন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ পেশ করেছে। 
শুধু এ দুটি শিশুই নয়, দেশের বিভিন্নœ জেলায় আরও অনেক রোগী চিকিৎসা অবহেলার কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। দেশে প্রতি দুই হাজার নাগরিকের বিপরীতে মাত্র একজন ডাক্তার নিয়োজিত। অন্যদিকে প্রতি পাঁচ হাজার নাগরিকের বিপরীতে একজন নার্স রয়েছেন। স্বাস্থ্য খাতে বিরাজমান বাস্তবতার নিরিখে কিংবা নিছক পরিসংখ্যানগত মূল্যায়নে কোনো দিক থেকেই আশাব্যঞ্জক নয়।
এর আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি গৃহীত হয়েছে। এর আলোকে আইন কমিশন ২০১৪ সাল থেকে গবেষণা শুরু করে। ২০১৭ এর খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়। দীর্ঘ আট বছর খসড়া আইনটির সুপারিশ ফাইলবন্দি থাকার পর আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সম্প্রতি সুপারিশটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জনকণ্ঠকে বলেন, খসড়া আইনের সুপারিশটি পেয়েছি। এখনো দেখিনি। দেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব।

চিকিৎসা অবহেলার মধ্যে রয়েছে ভুল চিকিৎসা করা, রোগ নির্ণয়ে ভুল করা, ভুল ওষুধ প্রদান, ভুল অঙ্গ অপসারণ, ভুল বা অতিরঞ্জিত রিপোর্ট প্রদান, একাধিক রোগীকে একত্রে পরীক্ষা করা, মাদকাসক্ত বা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া, জরুরি ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রদানে অহেতুক বিলম্ব করা, অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দেওয়া, চিকিৎসকের কাজ নিজে না করে নার্স, আয়া-বয় বা অন্য কারও দিয়ে করানো। পাশাপাশি চিকিৎসা সহায়ক কর্মচারীদের অবহেলা একইসঙ্গে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেরও অবহেলা রয়েছে।

এসব বিষয় তুলে ধরেই ২০১৭ সালের খসড়া আইনটির পুনরায় সংশোধন ও পরিমার্জন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে আইন কমিশন। বর্তমানে চিকিৎসায় অবহেলা প্রতিকারে পূর্ণাঙ্গ কোনো আইন নাই। বিশ্বের সকল উন্নত রাষ্ট্রে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত আইন রয়েছে।
আইন কমিশনের সুপারিশে স্বাস্থ্যসেবা আইনের খসড়ায় ৬৫টি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। পরিচ্ছেদ রয়েছে ১৪টি। খসড়ায় চিকিৎসক, চিকিৎসা সহায়ক কর্মচারী ও চিকিৎসা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংঘটিত বিভিন্ন প্রকার অবহেলা এবং এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এ ছাড়া অবহেলার ধরন অনুযায়ী দেওয়ানি ও ফৌজদারি প্রতিকারের জন্য বিধান রাখা হয়েছে।
কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা অবহেলার ধরন যদি এমন হয়ে থাকে যে তা ফৌজদারি আইনের আওতায় পড়ে, তবে তার বিচার বা প্রতিকার প্রচলিত ফৌজদারি আইনে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এর কোনো ব্যতিক্রম হলে তা হবে সম্পূর্ণরূপে আইনের শাসন বা ‘রুল অব ল’র পরিপন্থি, যা সংবিধান ভঙ্গের নামান্তর।

কেননা আইনের দৃষ্টিতে সমতা আমাদের পবিত্র সংবিধানের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ এবং সংবিধান অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিক আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। এ ছাড়া কোনো বিশেষ পেশা বা গোষ্ঠীকে সমভাবে প্রযোজ্য কোনো আইনের আওতা বহির্ভূত রাখা সম্পূর্ণরূপে আইনের নৈতিকতার পরিপন্থি। 
দেশের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত নির্দিষ্ট আইনের অভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর মাধ্যমে চিকিৎসা অবহেলা সংক্রান্ত বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিকার প্রদানের প্রচেষ্টা করা হয়েছে বা অন্যান্য পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে, কিন্তু সে সকল প্রতিকার বা পদক্ষেপ প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।

তাই দেশের সংবিধানের উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম সুপারিশসমূহের মধ্যে আইনটিতে নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অধিকার ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে; স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকারের দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে; স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত বিষয়ািদ তদারকির জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে; চিকিৎসা সেবায় অবহেলা ও অবহেলাজনিত ক্ষতিগ্রস্তসহ এ সংক্রান্ত বিরোধসমূহ নিষ্পত্তির জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইন কমিশনের প্রস্তুতকৃত স্বাস্থ্যসেবা আইন ২০১৭ এর খসড়ায় মোট ৬৫টি ধারা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। আইনটি ১৪টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। স্বাস্থ্য সেবা আইন ২০১৭ এর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারীর অধিকার ও দায়দায়িত্ব তুলে ধরা হয়েছে। আইনের ৫ ধারায় যে কোনো স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারীকে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র মজুত সাপেক্ষে বিনামূল্যে ওষুধ, বিনামূল্যে বা অনুমোদিত মূল্যে মানসম্মত খাবার ও পথ্য এবং প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার বা আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবা পাওয়ার অধিকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একই ধারায় বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তিসহ চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার বিধানাবলি, চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিতকরণ ও তথ্য সংরক্ষণের বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে। 
এই আইনের ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সেবা প্রদানকারী অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসতর্কতা দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য বা জীবনহানি ঘটালে তিনি অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদ- বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত  হবেন। ৭৩ ধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে পরিচালিত স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিবীক্ষণ করে পরিলক্ষিত ত্রুটি-বিচ্যুতি উদ্ঘাটন করার ক্ষমতা মহাপরিচালকের থাকবে।

তবে পরিলক্ষিত ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়ে প্রতিকারমূলক কোনো ব্যবস্থা মহাপরিচালক গ্রহণ করবেন না। তিনি সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি অবহিত করবেন মাত্র।
এই আইন সম্পর্কে আইন কমিশন বলছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে চিকিৎসা অবহেলার প্রতিকারের সুযোগ রয়েছে। যেখানে একজন রোগী ভোক্তা হিসেবে উপযুক্ত সেবা না পেলে আদালতে প্রতিকার পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু এই প্রক্রিয়া সহজ নয়। ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে অর্থাৎ রোগীকে প্রথমে যেতে হবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। এই আইনের সাধারণ নীতি চিকিৎসাসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযোগী হিসেবে বিবেচিত নয়।
খসড়ায় বলা হয়, দেশের জনগণের পুষ্টির ও জনস্বার্থের উন্নতি সাধন সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। বিভিন্ন আর্থসামাজিক এবং রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে তার উপর্যুক্ত রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে মৃত্যু ও শিশু স্বাস্থ্য খাতে প্রভূত উন্নতি সাধনসহ পোলিও নির্মূল এবং স্বাস্থ্য সূচক সার্বিক মানোন্নয়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীর ক্ষেত্রে বিনামূল্যে চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থা পাবে। ভর্তিকৃত রোগীর ক্ষেত্রে বিনামূল্যে বা অনুমোদিত মূল্যে মানসম্মত খাবার পাবে। সংকটাপন্ন রোগীর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চর্যা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, জরুরি বিভাগে বা ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রয়োজনে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বা কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) বা সংশ্লিষ্ট বিভাগে স্থানান্তরপূর্বক চিকিৎসা সুবিধা সংবলিত অ্যাম্বুলেন্স যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা।

খসড়ায় চিকিৎসক কর্তৃক যথাযথ দায়িত্ব পালনে অবহেলা অর্থাৎ ভুল চিকিৎসা করা; রোগ নির্ণয়ে ভুল করা; ভুল ওষুধ প্রদান; ভুল অঙ্গ অপসারণ; ভুল বা অতিরঞ্জিত রিপোর্ট প্রদান; জরুরি ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রদানে অহেতুক বিলম্ব করা; অপ্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল ও ডায়াগনস্টিক টেস্ট দেওয়া; ব্যবস্থাপত্রে অপ্রয়োজনীয় এবং বিভিন্ন কোম্পানির একই ওষুধ বারবার প্রদান করা; প্রয়োজন ছাড়া নিজ ক্ষেত্রের বা এখতিয়ারের বাইরে চিকিৎসা দেওয়া; চিকিৎসার নির্ধারিত প্রটোকল অনুসরণ না করা; চিকিৎসকের কাজ নিজে না করে নার্স, আয়া, ওয়ার্ডবয় বা অন্য কারও দ্বারা করানো; প্রয়োজনের তুলনায় কম বা মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রদানকে অবহেলার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শুধু চিকিৎসকই নন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অবহেলার বিষয়টিও অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে। অর্থাৎ, রোগীর চিকিৎসাসহ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে নিয়মিত তদারকি না করা; পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম না রাখা; প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ নার্স, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত চিকিৎসকের মতামত, ব্যবস্থাপত্র ও মন্তব্য সংক্রান্ত সব তথ্য সংরক্ষণ না করা; সব ধরনের জরুরি ওষুধের ব্যবস্থা না রাখা; অটোক্লেভের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সার্জিক্যাল (শল্য চিকিৎসা) যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা না রাখা; হাসপাতালে উদ্ভূত সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া; প্রতিটি চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মানের নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা অবহেলার পর্যায়ে পড়বে।

খসড়ায় চিকিৎসাসেবায় অবহেলাজনিত ক্ষতি বলতে শারীরিক ক্ষতি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারানো, দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি হারানো, স্বাভাবিক জীবনযাপনে অসমর্থতা ইত্যাদি; মানসিক ক্ষতি-মানসিক ভারসাম্য হারানো, প্রিয়জন হারানো, মানসিক চাপ তৈরি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সামষ্টিক ক্ষতি- রোগীর মৃত্যু, প্রজনন ক্ষমতা হারানো, দাম্পত্য জীবন নির্বাহে অসমর্থতা, সামগ্রিকভাবে সাংসারিক দায়িত্ব পালনে অসমর্থতা ইত্যাদি।

সৃষ্ট ক্ষতি নিরূপণ ও তার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ এবং আদায়ের লক্ষ্যে দেশে এক বা একাধিক ‘স্বাস্থ্যসেবা বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনাল’ গঠনসহ এসব ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালি, তথা স্বাস্থ্যসেবা-সংক্রান্ত অভিযোগ, তদন্ত, আপিল, কমিশন গঠনসহ প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে খসড়ায়।
অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চিকিৎসা গ্রহণকারী বা রোগী তার বৈধ প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক নার্স ও চিকিৎসা সহায়ক কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রোগীর প্রতি সংঘটিত পেশাগত অবহেলা ও ক্ষতি উল্লেখপূর্বক জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা কমিশন কিংবা ট্রাইব্যুনালের কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, অভিযোগের কারণ উদ্ভূত হওয়ার কিংবা অভিযোগের কারণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত হওয়ার এক বছরের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করতে হবে।
খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা কমিশন প্রাপ্তির পর বিধি মোতাবেক প্রাথমিক তদন্ত অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ গ্রহণ  করবে। প্রয়োজনে তদন্ত কার্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে। যদি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে বৈষম্যের অভিযোগ পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রোগীদের মধ্যে নার্স, ধর্ম-বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, ভাষা, শিক্ষা, আর্থিক অবস্থা, পেশা, পদবি, জাতীয়তা, জন্মস্থান কিংবা এরূপ কোনো কারণে কোনো বৈষম্য করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদ-ে দ-িত হবে।

×