
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সোসাইটির সদস্যরা সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সাতুরিয়ায় অবস্থিত ঐতিহাসিক বালিহাটি জমিদার বাড়িতে একটি শিক্ষা ভ্রমণ ও পিকনিকের আয়োজন করেছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্য ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি প্রকৃতির মাঝে আনন্দময় সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছে। হ্নবালিহাটি জমিদার বাড়ি ১৯শ শতাব্দীতে নির্মিত একটি স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন, যা বালিহাটি জমিদারদের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী। এই জমিদার বাড়ির সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ সংযোগ রয়েছে। ১৮৮৪ সালে বালিহাটির জমিদার কিশোরী লাল রায় চৌধুরী জগন্নাথ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। এই ঐতিহাসিক সংযোগের কারণে বালিহাটি জমিদার বাড়ি শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
আইটি সোসাইটির সদস্যরা সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বাসে করে বালিহাটির উদ্দেশে রওনা দেন। জমিদার বাড়িতে পৌঁছে তারা প্রথমে স্থানীয় গাইডের সহায়তায় এর ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলী সম্পর্কে জানেন। ১৭৯০ সালে গোবিন্দ রায় সাহা এই জমিদার বাড়ির ভিত্তি স্থাপন করেন, এবং পরবর্তী সময়ে তার উত্তরাধিকারীরা এটিকে সম্প্রসারিত করেন। সাতটি পৃথক ভবন, ২০০টিরও বেশি কক্ষ এবং তিনটি প্রবেশদ্বারসহ এই বাড়ি ৫.৮৮ একর জমির ওপর বিস্তৃত। শিক্ষার্থীরা ভবনের বিশালতা, স্থাপত্যের সৌন্দর্য এবং ইতিহাসের গল্পে মুগ্ধ হয়। হ্নআইটি সোসাইটির সভাপতি মো. রেদওয়ান আহমেদ বলেন, “এই শিক্ষা ভ্রমণ আমাদের জন্য শুধু বিনোদনই নয়, বরং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের একটি সুযোগ। বালিহাটি জমিদার বাড়ি আমাদের শিকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।” একই সঙ্গে, শিক্ষার্থীরা জমিদার বাড়ির চারপাশে প্রকৃতির মাঝে পিকনিক উপভোগ করেন। তারা উত্তর দিকে অবস্থিত পুকুরের পাড়ে বসে গল্প, খেলাধুলা ও গানের আসরে মেতে ওঠেন। একজন শিক্ষার্থী, বায়েজিদ সরকার বলেন, “ক্যাম্পাসে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটার সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম। আর এখানে এসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হয়ে এবং প্রকৃতির মাঝে সময় কাটিয়ে আমরা আরও আনন্দিত।” আইটি সোসাইটির সদস্যরা জমিদার বাড়ির ছবি তুলে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন, যা অন্য শিক্ষার্থীদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
প্যানেল