মোহামেডান প্রাঙ্গণে আনন্দের বন্যা

মোহামেডান ভক্ত-সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী আর কর্তাতের আনন্দ যেন থামছেই না। পেশাদার লিগে প্রথম শিরোপা বলে কথা! সাদা-কালো শিবির এবার ২৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছিল তিন ম্যাচ আগেই। শিরোপা পুনরুদ্ধারের পর শেষ দুটি ম্যাচ ভাল যায়নি। বিশ্বের বড় সব লিগের বড় দলগুলোর ক্ষেত্রে যেমনটা হয়! রহমতগঞ্জের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর শুক্রবার ব্রাদার্সের সঙ্গে ড্র করেছে ৩-৩ গোলে। তাতে কি? শুক্রবার  কুমিল্লায় নিজেদের হোমভেন্যুতে সাদা-কালো শিবির ছিল উদ্যাপনে মাতোয়ারা।

মতিঝিলপড়ার ক্লাব প্রাঙ্গণে যেটা চলে মধ্যরাত অবধি। ভ্রমণ ক্লান্তিও দমাতে পারেনি সোলেমান দিয়াবাতেদের। রাত দশটা নাগাদ ক্লাবের লোগো সম্বলিত গাড়ি প্রবেশ করতেই করতালি। সমর্থকদের স্মোক ফ্লেয়ার। বর্ণিল সাজে সজ্জিত ক্লাব আঙিনা। সুন্দর লাইটিং ও চ্যাম্পিয়ন লেখা কয়েকটি ব্যানারে সর্বত্র উৎসবের আবহ। সঙ্গে বাজে মোহামেডানকে নিয়ে নানা গান। ট্রফি নিয়ে দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়রা যোগ দেন উৎসবে। শনিবার তাদের সংবর্ধনা দেয় ‘মহাপাগল’ সমর্থকগোষ্ঠী। 
কুমিল্লায় মাঠে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন জার্সি পরে একদফা উৎসব করে ঠিকই তবে মূল আনন্দ উপলক্ষের জন্য ছিল ক্লাব আঙিনা। মোহামেডানের অন্যতম পরিচালক ও ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি বরণ করে নিতে আগেভাগেই ক্লাবে এসেছিলেন। খেলোয়াড়-কোচদের সঙ্গে নিয়ে সেই কেক কাটেন ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান আলমগীর। চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফকে ফুলের মালাও পরিয়ে দেওয়া হয়। ‘ছয় বছর মোহামেডানে খেলছি। প্রথম ট্রফি নিয়ে আসলাম ক্লাবের অনুভূতি অবশ্যই অন্য রকম।’ বলছিলেন অধিনায়ক দিয়াবাতে।

আর্থিক সমস্যা, মাঠের অনুশীলন সংকট নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে মোহামেডান প্রথমবারের মতো পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন,‘ফুটবলার ও কোচিং স্টাফের নিবেদন সর্বাধিক। পাশাপাশি আমাদের ট্যাকনিক্যাল কমিটি রয়েছে যারা ক্লাবের প্রতি ভালোবেসে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখে পরামর্শ দেয়। ক্লাবের সভাপতিসহ অনেকের সম্পৃক্ততায় এই সাফল্য।’ মোহামেডান ক্লাবে শিরোপার আবহ থাকলেও অনেক ফুটবলারের মুখ ছিল মলিন। ক’দিন পরই কোরবানির ঈদ। অথচ কয়েক মাসের বেতন বকেয়া।

ট্রফি উদ্যাপনে অবশ্য খেলোয়াড়দের সুখবরই দিয়েছেন ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান,‘আমরা এই বোর্ড অব ডাইরেক্টরসে আসার পর খেলোয়াড়দের সঙ্গে যা প্রতিশ্রুতি সেটা বরাবরই বাস্তবায়ন করেছি। এখনও কারো এক আবার কারো দুই মাস বকেয়া আছে সেটা কয়েক দিনের মধ্যেই পরিশোধ করা হবে। খেলা শেষের পর (লিগে আরও এক ম্যাচ রয়েছে) আমরা একটা বোনাসও ঘোষণা করব।’
মোহামেডানের ফুটবল দলের সাফল্য উদ্যাপনে ছুটে এসেছিলেন হকির সুপারস্টার রাসেল মাহমুদ জিমি। উচ্ছ্বসিত তিনি, ‘হকি খেলোয়াড় হলেও ফুটবল আমার অনেক পছন্দের খেলা। মোহামেডান আমার প্রিয় ক্লাব। মোহামেডানের ফুটবল, হকি, ক্রিকেট যে কোনো সাফল্যে খুশি হই।’