ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শুধু ঘুমিয়ে কোটিপতি হওয়ার ৫টি কার্যকর কৌশল!

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ২৪ মে ২০২৫

শুধু ঘুমিয়ে কোটিপতি হওয়ার ৫টি কার্যকর কৌশল!

সারাদিন কাজ করার পরেও যদি চাহিদা পূরণ না হয়, তাহলে কাজ করেই বা কী লাভ? তাই যদি আপনি অতিরিক্ত আয় করতে চান, তবে এমন কোনো পথ খুঁজে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত, যা অবসর সময়ে তুলনামূলকভাবে স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক এবং এমনকি ঘুমের মধ্যেও আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

আর আজকের আয়োজনে আপনার জন্য থাকছে দারুণ চমক। যদিও শুরুতে এ ধরনের আয়ের পথ তৈরি করতে কিছুটা সময় ও শ্রম দিতে হয়, একবার সাজানো হয়ে গেলে তা প্রায় পরিশ্রমহীনভাবেই আয় এনে দিতে পারে। মানে, আপনি ঘুমাচ্ছেন আর টাকা নিজ থেকে আপনার পকেটে ঢুকে যাচ্ছে।

চলুন তাহলে জেনে নিই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণের ৫টি মাধ্যম!

১. স্লিপ স্টাডিতে অংশগ্রহণ করুন

ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আয় করার সবচেয়ে সরাসরি উপায় হতে পারে ঘুম সংক্রান্ত গবেষণায় অংশ নেওয়া। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলো এ ধরনের স্টাডি পরিচালনা করে জানতে চায় ঘুমের ধরণ, কর্মদক্ষতা ও অন্যান্য বিষয়গুলোর সম্পর্ক।

এ ধরনের গবেষণায় সাধারণত পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট পরিবেশে ঘুমাতে হয়, যেখানে বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের ঘুম পর্যবেক্ষণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এতে কোনো বাড়তি কাজের প্রয়োজন হয় না।

স্লিপ স্টাডিতে অংশ নিতে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হয়, যেমন বয়স, স্বাস্থ্য অবস্থা বা ঘুমের অভ্যাস। কখনো কখনো সুস্থ মানুষকেও এমন গবেষণায় আহ্বান জানানো হয়।

গবেষণার ধরন ও সময়সীমার ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ৫০০ থেকে ৫,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত। যার বাংলাদেশি পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০,০০০ টাকা থেকে ৬,০৭,০০০ টাকা। এমনকি রাতভর গবেষণায় অংশগ্রহণ করলে আয় আরও বেশি হতে পারে।

এ ধরনের গবেষণায় অংশগ্রহণ করে আপনি শুধু ঘুমিয়ে অর্থ আয় করবেন না, বরং গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও অবদান রাখবেন।

 

২. খালি জায়গা ভাড়া দিন

বাসায় ফাঁকা একটি রুম, গ্যারেজ অথবা অতিরিক্ত কোনো ঘর থাকলে সেটি ভাড়া দিয়ে নিয়মিত আয় করা সম্ভব। বর্তমানে এই বিষয়টি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রাথমিক অবস্থায় আপনার স্থানটির বিজ্ঞাপন দিন। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালান। চাইলে লিফলেট বা পোস্টার লাগাতে পারেন।

যদি আপনার বাসার সঙ্গে কোনো পার্কিং স্পেস খালি থাকে, সেটিও ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব। ব্যস্ত শহরে যেখানে পার্কিংয়ের সংকট রয়েছে, সেখানেই এ ধরনের উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি লাভজনক হতে পারে।

 

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন এক কৌশল, যেখানে বিভিন্ন পণ্যের প্রচার করে বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ আয় করা যায়। আপনি যদি কোনো পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করেন এবং সেই লিংক থেকে কেউ পণ্য কেনে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।

এই পদ্ধতিতে সফল হতে হলে আপনার অন্তত ১,০০০ জন সক্রিয় অনলাইন অনুসারী থাকা উচিত। আপনি চাইলে ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল, ইমেইল ক্যাম্পেইন বা সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট লিংক ছড়িয়ে দিতে পারেন।

 

৪. ইউটিউব চ্যানেল চালু করুন

২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইউটিউবের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৫০ কোটি ছাড়িয়েছে। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য এটাই সঠিক সময়। তবে চ্যানেলটি স্থায়ীভাবে সফল করতে এমন বিষয়বস্তু নির্বাচন করুন, যা বড় পরিসরের দর্শকের আগ্রহ কাড়ে এবং যার রক্ষণাবেক্ষণ কম।

যদি অবসরে গেম খেলেন, তাহলে গেমিং কনটেন্ট বানাতে পারেন। অথবা যদি মিউজিক কম্পোজ করার ঝোঁক থাকে, তাহলে মেডিটেশন বা স্টাডি প্লেলিস্টের জন্য অ্যাম্বিয়েন্ট মিউজিক ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এ ধরনের কনটেন্ট একবার তৈরি করলেই তা নিয়মিত আয় দিতে পারে। আর আজকের দিনে এআই (AI) ব্যবহার করে খুব সহজভাবেই ইউটিউবে সফল হওয়া সম্ভব।

৫. স্টক ফটোগ্রাফি থেকে আয় করুন

যদি ফটোগ্রাফিতে আপনার দক্ষতা থাকে, তবে তা অর্থে পরিণত করার উপায়ও আছে। iStock, Shutterstock, বা Alamy-এর মতো ওয়েবসাইটে আপনার তোলা ছবি আপলোড করুন। এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞাপনদাতা, কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ছবি কেনেন।

একবার যদি আপনার কোনো ছবি লাইসেন্স করা হয়, তাহলে আপনি প্রতিবার ব্যবহারে অর্থ আয় করতে পারবেন। ছবির মান এবং প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী এটি কয়েক সেন্ট থেকে শুরু করে কয়েক ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যেহেতু ছবিগুলোর একচেটিয়া অধিকার থাকে না, তাই একটিই ছবি বারবার বিক্রি হয়ে দীর্ঘমেয়াদে আয় এনে দিতে পারে। মানে, ঘুমিয়ে আছেন কিন্তু অর্থ আপনাকে খুঁজে নিচ্ছে।

আপনার সংগ্রহে থাকা আগের ছবিগুলোও একত্রে আপলোড করলে আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়বে। যদি আপনার কাছে ড্রোন থাকে, তাহলে Pexels বা DroneStock-এর মতো ওয়েবসাইটে ড্রোন ফুটেজ আপলোড করে আলাদা এক মার্কেটে অংশ নিতে পারেন। আরও মজার ব্যাপার হলো এআই (AI)। এআই সাইট ব্যবহার করে আপনি প্রম্পট জেনারেট করে কোনো মোবাইল বা ক্যামেরা ছাড়াই ছবি ও ভিডিও তৈরি করতে পারেন।

Shopify Collabs-এর মতো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় ক্রিয়েটরদের ছোট ও মাঝারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করে। সঠিক কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হতে পারে একটি লাভজনক অনলাইন ব্যবসা, যা ঘরে বসেই আপনি পরিচালনা করতে পারবেন।
 

ঘুমের সময়টাকেই আয় রোজগারের উপায় বানানো এখন আর কল্পনা নয়। প্রযুক্তি ও নতুন ব্যবসায়িক মডেলের কল্যাণে, ঘরে বসেই এমনকি চোখ বন্ধ রেখেও আয়ের পথ তৈরি করা এখন বাস্তবতা। আপনি যদি সঠিক কৌশল ও সামান্য পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান, তাহলে হয়তো খুব শিগগিরই আপনি নিজের ঘুমকেই করে তুলবেন আপনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস।


 

তথ্যসূত্র: tinyurl.com/mw92ydec

আফরোজা

×