ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তিন বাহিনীর নামে অপপ্রচার, যা বললো সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ১০:৪১, ২৪ মে ২০২৫

তিন বাহিনীর নামে অপপ্রচার, যা বললো সেনাবাহিনী

ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নামে একটি বিবৃতি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে যে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট এবং তারা সরকারকে সমর্থন করছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে সেনাসদস্যরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই বিবৃতিটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে।

 

 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্রুততার সাথে এই বিবৃতির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং এটিকে 'ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর' বলে আখ্যায়িত করেছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ যার মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র স্পষ্ট করেছেন যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সর্বদাই সংবিধান ও দেশের আইনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে আসছে এবং বর্তমান সরকারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। তারা জনগণকে এ ধরনের অপ্রমাণিত তথ্য বিশ্বাস না করার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের বিবৃতি জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এ ধরনের বিবৃতি সাধারণত রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট মহল থেকে প্রচার করা হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামরিক বাহিনী ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা এই বিভ্রান্তি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তারা এ ধরনের অপপ্রচার রোধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।

 

 

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা সবসময়ই সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছে। বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব বারবার দেশের গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনাসদস্যদের সফল অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিকীকরণের গুজব দেশি-বিদেশি সকল পর্যবেক্ষককে আশ্চর্য করেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সুসমন্বয় বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সকল পক্ষকে সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে এ ধরনের গুজবের বিরুদ্ধে শুধু সরকারি বক্তব্যই নয়, বরং স্বচ্ছ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে তারা যেন কোনো বিবৃতি প্রকাশের আগে তার সত্যতা যাচাই করে নেন। সাধারণ জনগণকেও এ ধরনের অপ্রমাণিত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

 

সূত্র:https://youtu.be/AwgwL-4gqVM?si=zOl2v8ktFuF_l6XV

আঁখি

×