
ছবি:সংগৃহীত
আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন না পেলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে একটি আদর্শবাদী গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু আন্দোলনের নয় মাস পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন অনেককে হতাশ করেছে। নির্বাচন নিয়ে ধীরগতির অভিযোগে চাপের মুখে রয়েছেন ড. ইউনূস।
ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে জানানো হয়, তিনি ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্রের খসড়া তৈরির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তবে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ তাকে বোঝান, তার পদত্যাগ দেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যকার ক্রমবর্ধমান ঐক্য তাকে চাপের মধ্যে ফেলেছে। এই জোট তার নেতৃত্বে সন্তুষ্ট নয় এবং তাকে অত্যন্ত ধীরগতিতে নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ করছে।
গত ২২ মে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের এক অনির্ধারিত আলোচনায় ড. ইউনূস তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে অবস্থান নেন, যা ইউনূসের মনঃপীড়ার একটি বড় কারণ। ইউনূস নিজে বলেছেন, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হতে পারে, তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেননি।
অন্তর্বর্তী সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বাস করেন, যারা তাকে সহায়তা করার কথা ছিল, তাদের কেউ কেউ তাকে উপেক্ষা করছেন। ফলে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।”
অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোবাশ্বার হাসান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “ড. ইউনূসের দৃঢ় নেতৃত্বের অভাব রয়েছে, এবং তিনি উপদেষ্টাদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হয়।”
প্রসঙ্গত, চলমান অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে আগামী নির্বাচন কখন এবং কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে এই মুহূর্তে নেতৃত্ব সংকট এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আঁখি