ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

ড. ইউনূসের সঙ্গে আবদুলায়ে সেকের সাক্ষাৎ

দুইশ’ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুইশ’ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক সাক্ষাৎ করেন

অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার কাজে সহায়তা করতে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে প্রায় দুইশ’ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। 
মঙ্গলবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এ সহায়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা আপনাকে যত তাড়াতাড়ি ও যতটা সম্ভব সহায়তা করতে চাই। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রয়োজনে সহায়তা করবে। 
আবদুলায়ে সেক বলেন, অতিরিক্ত ঋণদানের ফলে চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে যে সফট লোন ও অনুদান দেবে তার পরিমাণ বাড়বে এবং বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর তহবিল পুনর্বিবেচনার পর তা প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের এই কর্মকর্তাকে বলেন, বাংলাদেশের সংস্কারের অর্থায়ন এবং ১৫ বছরের ‘চরম অব্যবস্থাপনার’ পর নতুন যাত্রা পুনরায় শুরু করতে বিশ্বব্যাংককে অবশ্যই নমনীয় থাকতে হবে। আমাদের নতুন কাঠামো তৈরি করতে হবে, আমাদের একটি বড় ধাক্কা দরকার এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে রাজি হন। তিনি বলেন, তথ্যের স্বচ্ছতা, কর সংগ্রহের ডিজিটালাইজেশন এবং আর্থিক খাতের সংস্কারের ক্ষেত্রেও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায়।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করার এবং বড় ধরনের সংস্কারের যে সুযোগ পেয়েছে তা  হারাতে পারে না। একবার হারিয়ে ফেললে তা আর ফিরে আসবে না।
আবদুলায়ে সেক জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ঢাকার দেওয়ালে তরুণদের আঁকা গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, আমার ৩০ বছরের কর্মজীবনে আমি কোথাও এমনটা দেখিনি। আমাদের উচিত তাদের সহায়তা করা।
ঋণের শর্ত যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয় : অর্থ উপদেষ্টা আর্থিক খাতের সংস্কার ও বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছে ঋণ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ ঋণ পেতে বিশ্বব্যাংক যে শর্ত দেবে, তা যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয় সেই দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাথিও এ ভার্জিনসের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানান তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছি রিফর্মগুলোর (সংস্কার) জন্য আমাদের সহায়তা দরকার। আমাদের একটা বাজেট সাপোর্ট দরকার ইমিডিয়েটলি। বিশ্বব্যাংক মাল্টিন্যাশনাল হিসেবে আমাদের বিগেস্ট ডোনার। কাজেই তাদের সহায়তা দরকার আমাদের।

আমাদের লিকুইডিটির বিষয়ে কথা বলেছি। তারা সম্মত হয়েছে। আমি আবার কথা বলব ওয়াশিংটন ডিসিতে। মোটামুটি ইতিবাচক, ওরা ওপেন মাইন্ড, আরও আলোচনা হবে। আলোচনাটা মূলত হবে আমরা সংস্কার কীভাবে করব।
বাজেট সহায়তার বিষয়ে তারা কি বলেছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এ বছরে আমরা একটা বাজেট সহায়তা, আগামীর জন্য আবার আশা করছি। ওটা চূড়ান্তকরণ হবে। কোনো শর্ত দিয়েছে কি না সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শর্তের বিষয় আসবে যখন ঋণ দেবে। আমাদের কতগুলো পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা দেখব এটা যে বাস্তবায়নযোগ্য হয়। এমন দেবে না যে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব না। আবার টাকাও দেবে না। আমরা বলেছি, সংস্কারের বিষয়ে যেসব জিনিস বাস্তবায়নযোগ্য হয়, সেগুলোতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, বিশ্বব্যাংক আর্থিক খাতের সংস্কারে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে। এর উত্তরে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি বলে থাকে, আমি আর এর মধ্যে কিছু বলব না।

×