ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়ংকর সংকটে আবাসন শিল্প

প্রকাশিত: ০১:০১, ৪ জুন ২০২৩

ভয়ংকর সংকটে আবাসন শিল্প

কামাল মাহমুদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম), রিহ্যাব

সব মানুষের স্বপ্ন থাকে সুন্দর একটা বাড়ি করার। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে ঘরে ফিরে সবাই চায় একটু স্বস্তির নিশ্বাস। নিজের একটা বাসস্থান মানুষের স্থিতিশীলতা, আত্মমর্যাদা এবং ব্যক্তিত্বকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নি¤œবিত্ত সবারই ন্যূনতম চাওয়া একটা সুন্দর ফ্ল্যাট তথা নিজস্ব ঠিকানা। কিন্তু এবার বাজেট প্রস্তাব এর পর অসংখ্য নাগরিকের ফ্ল্যাট এর স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। আমাদের বেসরকারি ডেভেলপাদের একান্ত চেষ্টায় অনেক স্বল্পবিত্ত নাগরিক ওহ ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের কাছে মনে হচ্ছে ফ্ল্যাট আবার উচ্চ বিত্তের পণ্য হয়ে যাবে। সবার জন্য যে আবাসন এই স্লোগান এখন সেøাগানই থেকে যাবে।

এবার বাজেটে অনেক এলাকায় ২০ লাখ টাকা প্রতি কাঠা সরকারি ট্যাক্স ধরা হয়েছে। অথবা চুক্তি মূল্যের ৮ শতাংশ। এটা আগে ৪ শতাংশ ছিল। আবার শর্ত আছে যেটা বেশি হবে সেটা দিতে হবে। তার মানে কমপক্ষে কাঠা প্রতি ২০ লাখ টাকা ট্যাক্স। ক্ষেত্রে বিশেষ এটা আরও বেশি দিতে হবে। এটা গেল জমির ক্ষেত্রে। ফ্ল্যাট এর ক্ষেত্রে আগে ১০-১২.৫ শতাংশ ট্যাক্স ছিল এটা এবার হবে ১৪-১৬.৫ শতাংশ। আবাসন খাতে কি অবস্থা দাঁড়াবে চিন্তা করা যায়? আমরা আবাসন ব্যবসায়ীরা রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) থেকে এই ট্যাক্স ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যম এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দায়ী জানিয়ে আসছিলাম। একটা সময় ১৫ শতাংশ ট্যাক্স ছিল তখন জমি-ফ্ল্যাট বিক্রি অনেক হ্রাস পেয়েছিল।

চার বছর আগে কিছুটা হ্রাস করার পর এই ট্যাক্স ছিল ১০-১২.৫ শতাংশ পর্যন্ত। নতুন করে ৪ শতাংশ ট্যাক্স বৃদ্ধিতে এই খাতে স্থবিরতা নেমে আসবে। অধিক ট্যাক্স কালেকশন করতে গিয়ে উল্টো ট্যাক্স কমবে বলে আমাদের শঙ্কা। ড্যাপ এ ফার হ্রাস, নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিসহ নানাবিধ কারণে ব্যবসা সংকটে রয়েছে, এ অবস্থায় স্বস্তির কোনো উদ্যোগ নেই বাজেটে। উল্টো জমি-ফ্ল্যাট নিবন্ধন ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। 
প্রস্তাবিত বাজেটে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি সিমেন্ট, পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্লাস, সুইচ-সকেট, ক্যাবল, কিচেনওয়্যারসহ কম পক্ষে ১৩-১৪টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করা হয়েছে। যে সকল পণ্যের দাম বাড়বে তার ক্রেতা হচ্ছি আমরা যারা ফ্ল্যাট তৈরি করি। আর সব শেষ এই পণ্যের দাম গিয়ে পড়বে ফ্ল্যাট ক্রেতার ওপর। ফ্ল্যাটের দাম আরেক দফা বাড়বে। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে অনেকেই ফ্ল্যাট কেনার সক্ষমতা হারাবেন একং আবাসন ব্যবসায়ীরা ক্রেতা হারাবেন। নি¤œমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা আরও কঠিন হয়ে যাবে।

×