ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে এবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আইসল্যান্ড। ‘হ্যালোসেফ’ নামের একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সূচকে আইসল্যান্ড পেয়েছে মাত্র ১৮.২৩ পয়েন্ট (১০০-র মধ্যে)। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর (১৯.৯৯), তৃতীয় স্থানে ডেনমার্ক (২০.০৫)। ইউরোপের নিরাপদ দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ পাঁচে রয়েছে অস্ট্রিয়া (২০.৩), সুইজারল্যান্ড (২০.৫) এবং চেক প্রজাতন্ত্র (২১.২)।
সামগ্রিক তালিকায় ১২তম স্থানে থাকা পর্তুগালের পয়েন্ট ২৫, যা ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে একাদশ। তবে বিশ্বের নিরাপদতম ১৫ দেশের মধ্যে ইউরোপেরই ১২টি স্থান পেয়েছে বলে জানিয়েছে হ্যালোসেফ। তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার ভুটান (২২.৯৮) এবং মধ্যপ্রাচ্যের কাতার (২৩.৩৩) রয়েছে যথাক্রমে দশম ও একাদশ স্থানে।
অন্যদিকে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিলিপাইন, যার স্কোর ৮২.৩২। এর পরে আছে কলম্বিয়া (৭৯.২১) এবং মেক্সিকো (৭৮.৪৩)। এসব দেশের অভ্যন্তরীণ সহিংসতা, অপরাধ প্রবণতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হয়েছে। একইভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণেও এই দেশগুলো আছে তালিকার একেবারে নিচে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিশ্বের ৫০টি নিরাপদ দেশের মধ্যে ৩০টিই ইউরোপের। এর মধ্যে নেদারল্যান্ডস ২০তম (ইউরোপে ১৭তম) ও বেলজিয়াম ৩১তম (ইউরোপে ২৪তম)। তবে ফ্রান্সের অবস্থান বেশ পেছনে—বিশ্বে ৮০তম এবং ইউরোপে ৩৪তম, যার পেছনে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে চলমান উদ্বেগকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ইউক্রেন ও রাশিয়া এই তালিকার একেবারে শেষদিকে অবস্থান করছে।
হ্যালোসেফের তথ্যমতে, লাতিন আমেরিকা ঐতিহ্যগতভাবে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় হলেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেশভেদে ভিন্ন। প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং বলিভিয়ার মতো দেশগুলো তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হলেও কলম্বিয়া, মেক্সিকো ও ভেনেজুয়েলা এখনও হত্যার হার ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিশ্বে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ।
এশিয়া মহাদেশেও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রয়েছে বড় বৈষম্য। সিঙ্গাপুর যেখানে বিশ্বের দ্বিতীয় নিরাপদ দেশ, সেখানে ফিলিপাইন সবচেয়ে অনিরাপদ হিসেবে অবস্থান করছে। ফলে অঞ্চলভেদে নিরাপত্তার এ বিশাল ফারাক আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
হ্যালোসেফ সূচকটি প্রতিবছর হালনাগাদ করা হয় এবং জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়। মোট ৩৫টি মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে পাঁচটি বড় ক্যাটাগরিতে এই সূচক তৈরি করা হয়—যার মধ্যে রয়েছে পরিবেশগত ঝুঁকি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সশস্ত্র সংঘর্ষের সম্ভাবনা এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো। এর মাধ্যমে বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতির একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়।
সূত্র: দ্য পর্তুগাল নিউজ।
রাকিব
