ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

অনিন্দ্য সোনাইলের মিষ্টি ঘ্রাণ বাতাসে

গোলাপি রঙের ফুল, খাড়া থোকা

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ২২ এপ্রিল ২০২৪

গোলাপি রঙের ফুল, খাড়া থোকা

প্রখর রোদে চোখে আরাম দেয় অনিন্দ্য সুন্দর সোনাইল ফুল

গ্রীষ্মের শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ধরা। কী যে গরম এখন! গা সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। চরম অস্বস্তি নিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ। বের হতেই কংক্রিটের জঞ্জাল। মানুষের গিজগিজ। যানজট। এ অবস্থায় শুধু গাছপালার দিকে তাকালে একটু স্বস্তি মিলছে। ডালপালাসহ ছড়িয়ে থাকা গাছ ছায়া দিচ্ছে। ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে জিরিয়ে নিচ্ছে পথিক। গ্রীষ্মে গাছে গাছে ফুটেছে ফুলও। এ যেন বাড়তি পাওয়া।

ঘামে ভেজা ক্লান্ত শ্রান্ত দেহ মন নিয়ে রঙিন ফুলের দিকে তাকালে স্নিগ্ধ একটা অনুভূতি হয় ভেতরে। মন ভালো হয়ে যায়। তেমনই একটি ফুলের নাম লাল সোনাইল। গ্রীষ্মের আকর্ষণীয় ফুলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। গাছ খুব বেশি চোখে পড়ে না। ফুল অনেকটাই দুর্লভ। তবে এখন রাজধানী ঢাকার কিছু কিছু জায়গায় বা রাস্তার ধারে লাল সোনাইল ফুটে আছে। 
লাল সোনাইল নাম হলেও, ফুলটি আসলে হালকা গোলাপি রঙের। ছোট ছোট ফুল। থোকায় থোকায় ধরে আছে। অন্য অনেক ফুলের থোকা নিচের দিকে ঝুলে থাকে। লাল সোনাইলের বেলায় উল্টো। পর্বতের চূড়ার মতো এটি খাড়া। ভাঁটফুলের সঙ্গে বেশ মিলে যায়। চোখ জুড়ানো শুধু সৌন্দর্য নয়,  মিষ্টি ঘ্রাণ হয় লাল সোনাইলের।  
সোমবার বিকেলে রাজধানীর হাতিরঝিল দিয়ে আসার সময় হঠাৎ ফুলটি দেখে থামতে হলো। না দেখে যাই কি করে? মাথা ছড়ানো গাছ। ঘন সবুজ পাতার মাঝখানে অনিন্দ্য সুন্দর ফুল। পাতার সবুজ রং পাপড়ির হালকা গোলাপী রংটাকে জোরালো করেছে। অবশ্য ফুলের পাপড়িতে আছে সাদা রঙের ছোঁয়াও। মৃদু বাতাসে ফুলগুলো যখন কাঁপছিল তখন সাদা রংটাও বেশ চোখে পড়ছিল। 
উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে, লাল সোনাইলের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নাম ক্যাশিয়া জ্যাভানিকা। বাংলাদেশ ছাড়াও পূর্ব ভারত ও মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। পত্রমোচি মাঝারি এই গাছ ১০ মিটারের মতো উঁচু হয়। শীতে সব পাতা ঝরে যায়। গ্রীষ্মের শুরুতে কচি পাতার সঙ্গে দেখা দেয় ফুলও। একসঙ্গে এত ফুল ফোটে যে, চোখ ফেরানো যায় না। ফুল প্রায় ৩ সেমি চওড়া। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। গাছটির মাথা খুব বেশি ছড়ানো। ডালের মাথা প্রায় ভূস্পর্শী। এ জন্য যথেষ্ট জায়গার প্রয়োজন হয়। 
এ কারণে বাসার সামনে শখের বাগানে লাল সোনাইল দেখা যায় না। শহরের বৃক্ষশোভিত উদ্যানে লেকপাড়ে বা বড় রাস্তার ধারে খোঁজ করুন। পেয়ে যাবেন। আর কিছুদিন ফুল ফোটা অব্যাহত থাকবে। সময় শেষ হওয়ার আগেই উপভোগ করুন এর সৌন্দর্য। অনিন্দ্য সোনাইলের মিষ্টি ঘ্রাণ বাতাসে- গ্রহণ করুন এক্ষণই।

×