ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আলিপুর সেন্ট্রাল জেল মিউজিয়াম

শতাধিক বছরের পুরনো দেশ ভাগের ইতিহাসের সাক্ষী

এমএ রকিব, কলকাতা থেকে ফিরে

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ২ জুন ২০২৩

শতাধিক বছরের পুরনো দেশ ভাগের ইতিহাসের সাক্ষী

কালের সাক্ষী কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেল মিউজিয়ামের খ- চিত্র। কিংবদন্তি নেতা সুভাস চন্দ্র বসুকে বন্দি রাখার কক্ষ। বন্দিদের ওপর ব্রিটিশ পুলিশের নির্যা

বিপ্লবী নেতাদের মৃত্যুদন্ড দেওয়া ঐতিহাসিক ফাঁসির মঞ্চ, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, পন্ডিত জওহরলাল নেহরু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশসহ ভারতবর্ষে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রখ্যাত নেতাদের বন্দি রাখা সেই কারা কক্ষগুলোর সামনেই নারী-পুরুষ ও শিশু দর্শনার্থীদের ভিড়তাছাড়া সন্ধ্যায় ভিড় জমে অন্যতম আকর্ষণ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোদেখতেসিকিউরিটি গার্ড শেখ আজাহার উদ্দিন বলেন, প্রতিদিনই এসব স্মৃতি দেখতে অসংখ্য মানুষ আসেন এখানেতবে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন মানুষের চাপ থাকে আরও বেশিআজাহারের বাড়ি কলকাতার হাওড়া বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছেএ দৃশ্য আলিপুর সেন্ট্রাল জেলঅভ্যন্তরেরউপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে কালের সাক্ষি আজ কলকাতার শতাধিক বছরের পুরনো আলিপুর জেলভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম অবিসংবাদিত কিংবদন্তি  নেতা সুভাষচন্দ্র বসু, যিনি নেতাজী নামে সমধিক পরিচিত

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প-িত জওহরলাল নেহরু ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বহু রাজনৈতিক নেতাকে বন্দি রাখা হয় এই জেলেস্বাধীনতা সংগ্রামী অনন্তহরি মিত্র, দীনেশ গুপ্ত ও দীনেশ মজুমদারসহ অনেক বিপ্লবীকে দেওয়া হয় ফাঁসিবন্দিদের সেই কক্ষ, ফাঁসির মঞ্চসহ ব্রিটিশ পুলিশ ও বিপ্লবীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঐতিহাসিক সব দলিল সংরক্ষিত রয়েছে এই জেলেতবে এটি এখন আর কারাগার নয়এক সময়ের আলিপুর  সেন্ট্রাল জেল বর্তমানে আলিপুর জেল মিউজিয়ামআজ কলকাতার বহু ঐতিহ্যের মধ্যে একটি আলিপুর জেলএটি এখন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্তপ্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দর্শন করছেন ঐতিহাসিক এই জেল মিউজিয়ামএখানে অন্যতম আকর্ষণ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোডিজিটাল এই লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম বা আলো এবং শব্দের সংমিশ্রণে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা ঘটনা, ব্রিটিশদের অত্যাচার-নির্যাতন এবং প্রখ্যাত বিপ্লবীদের বীরত্বগাথা জীবনীসহ আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসশো চলাকালীন সময় তৈরি করা হয় গা ছমছম করা এক পরিবেশযা দেখলে ও শুনলে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যেতে হয় দুই শতাধিক বছর পূর্বে সেই ব্রিটিশ-ভারত যুগে

ফাঁসির মঞ্চসহ স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রখ্যাত নেতাদের বন্দি রাখার কারা সেলপ্রভৃতি রয়েছে আকর্ষণের তালিকায়স্থাপনাটি ঘুরতে এসে ব্রিটিশ শাসন-শোষণ ও বিপ্লবীদের অদম্য সাহসিকতার  সেই স্মৃতিকেই খুঁজে ফিরছেন নানা বয়সের দর্শনার্থীসহ আজকের প্রজন্ম।  মিউজিয়াম ঘুরে জানা যায়, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেন্ট্রাল জেলহিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে আলিপুর কারাগারএটি নির্মাণ করা হয় ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ সরকারের সময়সেই থেকে এটিকে কেন্দ্রীয় কারাগারহিসেবেই ব্যবহার করেছে ব্রিটিশরাবহু বিখ্যাত মানুষের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে লাল প্রাচীর ঘেরা এই কারাগারের সঙ্গেহেরিটেজ সাইট হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের ১০৮ একর এলাকাজুড়ে রূপান্তরিত করা হয় আলিপুর জেল মিউজিয়াম২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিএর দুদিন পরেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মিউজিয়ামভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চিড়িয়াখানা ও জাদুঘরের পাশাপাশি বর্তমানে  জেল মিউজিয়ামটিও দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে কলকাতা শহরেনারী-পুরুষ ও শিশুসহ প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসেন এই মিউজিয়ামে

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি রাখা ও ফাঁসি দেওয়ার জন্য কলকাতার আলিপুরে তৈরি করা হয় এই কারাগারএর আগে ছিল লালবাজার ও হরিণবাড়ি জেল১৮৮১ সালে জেল দুটিকে একত্রিত করে তৈরি করা হয় বড় একটি কারাগারযার নাম দেওয়া হয় ময়দানের জেলএর আগে ১৮৬৪ সালে তৈরি হয় আদি আলিপুর জেলএ সময় প্রেসিডেন্সি জেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো ময়দানের জেলপরবর্তীতে ১৯০৬ সালে আদি গঙ্গার পাড়ে নতুন করে তৈরি করা হয় বর্তমান আলিপুর জেলমূলত ব্রিটিশ শাসনামলে কারাগারের গোড়াপত্তন হয় ১৮১০ সালেএর পর ১৯২৯ সালে উপমহাদেশজুড়ে একযোগে প্রেসিডেন্সি কারাগার, আলিপুর কারাগার, মেদিনীপুর কারাগার, ঢাকা কারাগার ও রাজশাহী কারগারকে কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়

এ সময় আলিপুর জেলপরিণত হয় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের আটক রাখার পীঠস্থানেবিভিন্ন সময়ে এখানে যারা বন্দি ছিলেন তাদের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নেতা সুভাষচন্দ্র বসু, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, কলকাতা পুরসভার প্রথম মেয়র দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কলকাতা পুরসভার তকালীন মেয়র যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত, পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়, অগ্নিযুগের বিপ্লবী চারুচন্দ বসু, নকশাল ও মাওবাদী রাজনীতিবিদ চারু মজুমদার, প্রমোদ রঞ্জন চৌধুরী এবং দীনেশ গুপ্তের মতো রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দআলিপুর জেলে ফাঁসি দেওয়া হয় অনন্তহরি মিত্র, দীনেশ গুপ্ত, দীনেশ মজুমদার, প্রমোদ রঞ্জন চৌধুরী, কানাইলাল দত্ত, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বীরেন্দ্রনাথ দত্ত গুপ্ত, গোপীনাথ সাহা (গোপীমোহন), রামকৃষ্ণ বিশ^াসের মতো অগ্নিযুগের বিপ্লবীদেরব্রিটিশবিরোধী নেতাদের বন্দি রাখা ও ফাঁসি দেওয়ার ঐতিহাসিক আলিপুর জেলটিকে স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে এটিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়

বর্তমানে আলিপুর জেল একটি মিউজিয়ামপাশাপাশি জেলের একটি কক্ষকে করা হয়েছে পুলিশ মিউজিয়ামএতে ব্রিটিশ পুলিশ ও বিপ্লবীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের রিভলভার, পিস্তল, তরবারি, বোমার খোলসহ সেই সময়ের আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছেউল্লেযোগ্য অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বিপ্লবী ভূপেন্দ্র কিশোর আচার্যের বাজেয়াপ্ত ৫ চেম্বারের রিভলভার১৯১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের সত্যেন্দ্র নাথ বোসের ব্যবহৃত রিভলভার, দীনেশ গুপ্তের ব্যবহৃত পিস্তল প্রভৃতিএ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কেস হিস্ট্রি এবং কিছু বিপ্লবী ঘটনার বিবরণ রয়েছেএর মধ্যে ১৯৩০ সালে চার্লস টেগার্টকে হত্যা প্রচেষ্টা১৯১০ সালে ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ঢাকা অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী কার্যক্রমরাসবিহারী বসুর ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত হওয়া ও আলিপুর বোমা মামলা উল্লেখযোগ্যআলিপুর জেল মিউজিয়ামের বিশেষ আকর্ষণ সংগ্রামীদের বন্দি রাখার কারাকক্ষগুলোএর মধ্যে রয়েছে সুভাষচন্দ্র বসু সেল, চিত্তরঞ্জন দাশ সেল, জওহরলাল নেহরু সেল, ফাঁসির মঞ্চ, ওয়াচ টাওয়ার, এভি কক্ষ, লাইব্রেরি, সেমিনার কক্ষ, প্রদর্শনী কেন্দ্র এবং কারা হাসপাতালরয়েছে কফি হাউজকারা মিউজিয়াম অভ্যন্তরের পরিবেশ খুবই চমকারপরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সাজানো-গোছানো সব যেন ছবির মতোফুলের বাগান আর গাছগাছালিতে সাজানোকোথাও একটি পাতাও পড়ে নেইমাটিতে শোভা পাচ্ছে সবুজ ঘাসের সমারোহপীচঢালা কিংবা কোথাও কোথাও ছোট ছোট কালচে পাথরের তৈরি মসৃণ রাস্তাকারাকক্ষের সব বিল্ডিংয়ের রং ব্রিটিশদের সেই মেরুন কালারযা ব্রিটিশ শাসনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়সব মিলিয়ে কারা অভ্যন্তরে দৃষ্টিনন্দন এক মায়াবি পরিবেশএখানে প্রবেশ করলেই মন  যেন হারিয়ে যায় কোনো এক অজানা দেশেআনমনে ঘুরতে ঘুরতে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে আপনার কানে ভেসে আসবে রক্ত হিমকরা লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে ক্ষুদিরাম বসুর বিখ্যাত সেই গান একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসিকিংবা বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনো রবীন্দ্রসংগীত, অথবা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর সংগীত কারার ঐ লৌহ কপাট, কিংবা চল-চল-চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল নিম্নে উতলা ধরণীতলপ্রভৃতি বিপ্লবী গানবিশাল এলাকাজুড়ে জেল মিউজিয়াম ঘুরে দেখতে আপনাকে প্রচুর সময় নিয়ে আসতে হবেঅন্তত ৪/৫ ঘণ্টাতা না হলে দেখা শেষ হবে নাএ ছাড়া মিউজিয়ামে জীবনীসহ ছবি-প্রতিকৃতি ও নথিপত্রে স্থান পেয়েছে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহনেতা মঙ্গল পা-ে, রানী ভিক্টোরিয়া, সাঁওতাল বিদ্রোহ, লর্ড রবার্ট ক্লাইভ, ১৭৫৭ সালে পলাশি যুদ্ধের পর রবার্ট ক্লাইভ ও মীর জাফর, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ও দেশ বিভাগস্থান পেয়েছে বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামজাতীয় কবি নজরুল সম্পর্কে লেখা রয়েছে, ‘অগ্নিযুগের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান দেশবাসীর মনে প্রবল উদ্দীপনার সৃষ্টি করেতিনি ধূমকেতুলাঙ্গলপত্রিকা দুটি সম্পাদনা করতেনসরকারবিরোধী লেখার জন্য তিনি ১৯২২ সালে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর সশ্রম কারাদ- ভোগ করেননারী বিপ্লবীর মধ্যে বীণা দাস (ভৌমিক), প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদা ও কল্পনা দত্তের (যোশী)  নাম রয়েছেএ ছাড়া চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ নেতা মাস্টারদা সূর্য সেন, যুগান্তর দলের সংগঠক কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বাঘাযতীন’, ক্ষুদিরাম বসু, বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন প্রভৃতি

প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে এই জেল মিউজিয়াম ঘুরতে আসেন সপরিবার, নারী-পুরুষ ও শিশুসহ কয়েকশমানুষতবে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন রবিবার এখানে ভিড় থাকে অনেক বেশিকথা হয় পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়া এলাকার দেবাশিস সিংহের সঙ্গেপরিবারসহ তিনি এই মিউজিয়ামে ঘুরতে এসেছেনদেবাশিস সিংহ বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার জন্য যেসব বিপ্লবী কারাবরণ করেছেন, জীবন দান করেছেন; এখানে এসে তাদের স্মৃতি আরও একবার মনে পড়ে গেলজীবন উসর্গকারী সেই বীর-বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত হয়তিনি বলেন, ‘আলিপুর জেল মিউজিয়ামে রূপান্তরিত হওয়ায় এখন থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমাদের দেশ ও বিপ্লবী  নেতাদের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেএভাবেই বাংলার ইতিহাস বেঁচে থাকবেআর আগামী প্রজন্ম বলবে  নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, প-িত জওহরলাল নেহরু, ক্ষুদিরাম বসুর মতো সংগ্রামীরা ছিলেন বলেই দেশ আজ স্বাধীন হয়েছেমুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি এলাকার বরুণ কুমার কু- বলেন, ‘দেশমাতৃকার প্রতি অসামান্য শ্রদ্ধা রেখে যারা নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে  দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বাস্তব রূপ দিয়েছিলেন সেই বিপ্লবীদের বহু ইতিহাস আলিপুর মিউজিয়ামে তুলে ধরা হয়েছেতিনি বলেন, এই মিউজিয়ামে এলে ভবিষ্য প্রজন্ম জাতীয় নেতাদের এবং আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা ঘটনা ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেসপ্তাহে মঙ্গলবার থেকে রবিবার পর্যন্ত ৬ দিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা অবধি খোলা থাকে জেল মিউজিয়ামসোমবার বন্ধপ্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৩০ রুপিলাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো চলে সোমবার বাদে প্রতিদিন দুটি করেএটি মূলত রাতের অনুষ্ঠানপ্রথম শো শুরু হয় সন্ধ্যা ৬.৩০ এবং দ্বিতীয় শো হয় রাত ৭.৩০ মিনিটে৪০ মিনিটের অনুষ্ঠানপ্রবেশ মূল্য ১০০ রুপিলাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো  জেল মিউজিয়ামের অন্যতম প্রধান আকর্ষণএখানে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা ঘটনা, বিপ্লবীদের অদম্য সাহসিকতাসহ স্বদেশী আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয় আলো এবং শব্দের সংমিশ্রণেশোনা যায় বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়দূরে জেল হাসপাতালসহ ৫/৬টি স্থাপনা ও বাগানজুড়ে চলে এই আলো এবং শব্দের খেলাস্থাপনার দেয়াল ও গায়ে ভেসে ওঠে চিত্র

এ সময় গা ছমছম করা এক পরিবেশ তৈরি হয়বিশাল মাঠের সামনে খোলা আকাশের নিচে গ্যালারিতে বসে দর্শকরা উপভোগ করেন এই শোঅনুষ্ঠান শুরু হয় কারাগারের ওয়াচ টাওয়ার থেকে সার্চ লাইট মেরে এবং শেষ হয় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েএসবের ভিডিও-চিত্র ধারণ নিষেধ

×