ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চুয়াডাঙ্গায় পাউবোর উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার হচ্ছে ৪২ বছর আগের পুরাতন ইট

প্রকাশিত: ২০:০২, ২৩ মে ২০২২

চুয়াডাঙ্গায় পাউবোর উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার হচ্ছে ৪২ বছর আগের পুরাতন ইট

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা ॥ চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান উন্নয়নমূলক কাজ ৪০-৪২ বছর আগের পুরাতন ইট ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে করায় ওই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে সরকারের টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজে ৫ লাখ টাকার স্যালভেজ এর নামে ঠিকাদারকে শতভাগ পুরোনো ইট ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক পুন:নির্মাণ, নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসভবন রঙকরণ এবং অফিস ও পরিদর্শন বাংলো মেরামতের কাজ চলছে। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন ইট, নিম্নমানের খোয়া, পাথর ও বালি। পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে সিমেন্ট। ফলে উন্নয়নমূলক কাজ নিম্নমানের হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পাউবো চুয়াডাঙ্গা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিন প্যাকেজ নির্মাণ কাজে সীমানা প্রাচীর পুন:নির্মাণ প্রায় ৭৩ লাখ টাকা, প্রধান ফটক পুন:নির্মাণ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসভবন রঙকরণ ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, অফিস ও পরিদর্শন বাংলো মেরামত ৩৪ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে ধরা হয়েছে। ২০২২ সালের ১১ মার্চ থেকে পটুয়াখালীর মেসার্স আবুল কালাম আজাদ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজ শুরু এবং ২০২৩ সালের ২০ জুন শেষ হওয়ার সময় রয়েছে। কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানটি কাজ না করে চুয়াডাঙ্গার ঠিকাদার বিশ্বজিৎ কুমারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি কাজটি নিয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কার্যাদেশে ১ হাজার ৫২১ ফুট দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ৪৮ হাজার ২০৫টি পুরাতন ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও সেখানে শতভাগ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী কাজী রফিকুল হক বলেন, সাধারণত পুরোনো স্থাপনা ভেঙে ফেলার পর সেখান থেকে ব্যবহার উপযোগী রড বা ইটকে উদ্ধারকৃত উপকরণ বা স্যালভেজ বলে। সাধারণত রাস্তাঘাট নির্মাণকাজে স্যালভেজের ব্যবহার হয়ে থাকে। যা মূল সড়কের অনেক নিচে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বলেন, পানী উন্নয়ন বোর্ডের যে প্রাচীর করা হচ্ছে সেখানে পুরাতন ইট দিয়ে কাজ করছে। যদি এই প্রাচীর ভেঙ্গে যায় তাহলে তার দায়ভার কে নেবে। ঠিকাদার বিশ্বজিৎ কুমার বলেন, পাউবোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী যথাযথ নিয়ম মেনেই কাজ করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ হবে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ জানান, যে ইটগুলো ভালো মানের, সেগুলোই শুধু ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবী করেন, পুরোনো ইট দিয়ে নতুন নির্মাণ কাজে কোনো সমস্যা নেই। ইটের বয়স যত বেশি হয়, ততই মজবুত হয়। তা ছাড়া এ নির্মাণ কাজে সরকারের পাঁচ লাখ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
×