ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

তদন্ত এগোনোর পর এখনও এজাহার জটিলতার নেপথ্যে -

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

তদন্ত এগোনোর পর এখনও এজাহার জটিলতার নেপথ্যে -

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মিতু হত্যার ঘটনায় প্রথম মামলাটি তদন্ত চলমান, যা তার স্বামী বাবুল আক্তার দায়ের করেছিলেন। আর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু একই ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের নজির না থাকায় এই তদন্ত নিয়ে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়। রিপোর্ট দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা আবেদন করেছে সেখানে থাকা প্রাসঙ্গিক নথিপত্র ও তথ্য উপাত্ত প্রথম মামলায় যুক্ত করার। এটি মূলত একই ঘটনায় করা দুই মামলাকে একটি মামলায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া, বলছেন মামলা পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তবে তদন্ত সংস্থা পরিষ্কার জানিয়েছে, এটা মূলত দ্বিতীয় মামলাটির তদন্ত সমাপ্তিকরণ প্রতিবেদন। তার মানে জটিলতা নিরসনের সুযোগও তৈরি হচ্ছে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। তবে বাবুলের আইনজীবী বলছেন, বিষয়টি আইনীভাবে মোকাবেলা করা হবে। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা উপস্থিত হয়ে প্রসিকিউশন শাখায় ২৬৬ পৃষ্ঠার ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন। তিনি জানিয়েছেন, দুই মামলার তদন্ত পিবিআই করছে। এরমধ্যে প্রথম মামলার তদন্তকে আদালতের পর্যবেক্ষণে সফল তদন্ত বলা হয়েছে। ওই গুরুত্বপূর্ণ যেসব প্রাসঙ্গিক নথিপত্র, জবানবন্দী নেয়া আছে। যেগুলো মামলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালতের নির্দেশে আমরা ওই মামলাটির অধিকতর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। দ্বিতীয় মামলাটি আমরা আদালতের পর্যবেক্ষণ এবং আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। যেহেতু দুটি মামলার কারণে আইনী জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতু পরের মামলাটির রিপোর্ট দাখিল করে এখানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত আগের মামলায় যুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে। এদিকে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান জানিয়েছেন, পিবিআই যে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেছে আদালতে, তা গ্রহণের শুনানি আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় মামলায় থাকা আসামি, সাক্ষীর জবানবন্দীসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র এই ঘটনায় বাবুল আক্তারের করা মামলাটিতে যুক্ত করার একটি আবেদনও করা হয়েছে, যাতে প্রথম মামলাটি আরও যুৎসই হয়। হত্যাকা-ে বাবুলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে তদন্তকারী সংস্থা একাধিকবার তাদের বক্তব্যে বলেছে। তবে বাবুলের আইনজীবী দাবি করেছেন, বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার বাবুল আক্তার। এজন্য তারা গতবছরের ১৫ অক্টোবর প্রথম মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি দেন বাবুল। ৩ নবেম্বর এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বাবুলের নারাজি আবেদনটিও খারিজ করেন। এদিকে মিতু হত্যাকা-টি বর্তমানে কোন অবস্থায় যাচ্ছে, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। বিশেষত প্রথম মামলাটি যেহেতু তদন্ত চলমান এবং পরের মামলার রিপোর্ট দাখিলের পর গুরুত্বপূর্ণ নথি তথ্য উপাত্ত যেহেতু আগের মামলায় যুক্ত করার আবেদন হচ্ছে। তার মানে একটি মামলাই যে চলবে তা কিছুটা স্পষ্ট হচ্ছে, আইনী কার্যক্রমের মাধ্যমে। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, একই ঘটনায় দুটি মামলা চলতে তো পারে না। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবার যেন শাস্তি হয়। আমার দায়ের করা মামলায় বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য আছে এবং জবানবন্দী আছে। তাছাড়া আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরাও সাক্ষ্য দিয়েছে, এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এগুলো যাতে প্রথম মামলায় যুক্ত করা হয়।
×