ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাকিবের হাসিতে শুরু বিপিএল

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২২ জানুয়ারি ২০২২

সাকিবের হাসিতে শুরু বিপিএল

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শুক্রবার বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। করোনার তৃতীয় ঢেউ আক্রান্তের ব্যাপকতা ছড়ানোয় সাধারণ মানুষের চলাচলে আরোপ করা হয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা। তবে এর মধ্যেই মাঠে গড়িয়েছে অষ্টম বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০। অনেক কিছু বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ৬ দলের ২৭ দিনে মোট ৩৪ ম্যাচ আয়োজনের এ আসর নিয়ে কোন নির্দেশনা নেই। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিন উদ্বোধনী ম্যাচে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে হারিয়ে দেয় মেহেদি হাসান মিরাজের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। বিপিএলে ইতোমধ্যে সৌম্য সরকার, রিশাদ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মুনিম শাহরিয়ারসহ প্রায় ১০/১২ জন ক্রিকেটার ও কর্মকর্তা এবং আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ১২ কর্মচারী-কর্মকর্তা করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও পুরো আসর শেষ করতে আশাবাদী বিসিবি। তাই দর্শকশূন্য মাঠেই খেলা চলছে। যদিও বিসিবির আমন্ত্রিত অনেক অতিথিকেই ভিআইপি গ্যালারি ও গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসে খেলা উপভোগ করতে দেখা গেছে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত রিভিউ করার জন্য ডিআরএস না থাকলেও প্রথম দিন সেটার প্রভাব পড়েনি। এবার বিপিএল শুরুর আগেই শঙ্কা তৈরি হয় দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার কারণে। এর ধাক্কা লাগে বিপিএলেও। প্রথমেই জানা যায় খুলনা টাইগার্সের সৌম্যসহ ৬ ক্রিকেটার-কর্মকর্তা করোনা পজিটিভ। পরের দিন জানা যায় বিসিবির বেশকিছু কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত এবং সেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে বিপিএল মাঠে গড়ানোর দিন বরিশাল মাঠে নামার পর। দলটির ২ ক্রিকেটার ও ব্যাটিং কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম করোনায় আক্রান্ত। তবে এতকিছুর পরও বিপিএল শুরুর আগের দিন বিসিবি থেকে দাবি করা হয়, টোকিও অলিম্পিকের সুরক্ষানীতি অনুসরণ করা হবে। সেই নীতিতে অবশ্য দলগুলো এখন জৈব সুরক্ষা বলয়ে নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে থেকেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং ম্যাচ খেলবে। কিন্তু যে ক্রিকেটাররা আক্রান্ত হয়েছেন তারা এতদিন দলের সঙ্গেই অনুশীলন করেছেন। তাই আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা আছে। বিশেষ করে বরিশালের দুই ক্রিকেটার সোহান ও মুনিম দলের সঙ্গে ২ দিন অনুশীলন করার পর আক্রান্ত হওয়াতে এই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেই দলটি আবার শুক্রবার প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলেছে। অভিজ্ঞতায় পূর্ণ বরিশালের একাদশ সাজানো অবশ্য কঠিন হয়নি। সাকিবের নেতৃত্বে টস জিতেই তারা চট্টগ্রামকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় এবং চাপে ফেলে। দুর্দান্ত বোলিং করেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব, ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। ১৪ ওভারে ৬ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে চট্টগ্রাম। কিন্তু ৮ নম্বরে নেমে বেনি হাওয়েলের তা-ব তাদের সম্মানজনক পুঁজি এনে দেয়। হাওয়েল ২০ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ রান করেন। ফলে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৫ রানের দারুণ এক সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম। ৬০ বল ডট দিলেও শেষ দুই ওভারে ৩০ রান তুলে নিয়ে এই রান পায় তারা। ৩ উইকেট নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার আলজারি জোসেফ ও অফস্পিনার নাঈম হাসান নেন ২টি। জবাব দিতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তকে (১) শুরুতেই হারালেও ছোটখাটো জুটিতে অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায় বরিশাল। তাদের বিপক্ষে একাই লড়ছিলেন অফস্পিনার মিরাজ। তাই ১৪ ওভারেই ৮৬ রান তুলে ফেলে বরিশাল ৩ উইকেট হারিয়ে। কিন্তু ১৫তম ওভারে মিরাজ প্রথম বলে ছক্কা হজম করলেও দ্বিতীয় বলে সৈকত আলীকে (৩৫ বলে ৩৯) ও তৃতীয় বলে ইরফান শুক্কুরকে (১৩ বলে ১৬) সাজঘরে ফিরিয়ে খেলা জমিয়ে তোলেন। ওভারটির শেষ বলে সালমান হোসেনও (০) রানআউট হলে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে বরিশাল। কিন্তু জিয়াউর রহমান ১২ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৯ ও ডোয়াইন ব্রাভো ১০ বলে ১২ রানে অপরাজিত থেকে ৮ বল থাকতেই জয় ছিনিয়ে নেয়। টি২০ ক্রিকেটে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে মিরাজ ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হলেও ম্যাচ জিতে সাফল্যের হাসিটা হাসেন সাকিবই। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের সাফল্যেই যাত্রা শুরু হয় বিপিএলের।
×