
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের যুবক মো. নাঈম উদ্দিন রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে এক বছরের শিশুসন্তানকে ঘরে রেখেই রাজপথে নামেন। ২০২৪ সালের ২৪ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে তিনি পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন।এরপর কেটে গেছে প্রায় ১১ মাস, কিন্তু এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি এই তরুণ। গুলি লেগেছিল তার রানে। সেই ক্ষত এখনো তাকে প্রতিনিয়ত কাবু করে রেখেছে।
নাঈম জানান, ওইদিন যাত্রাবাড়ী থানার সামনে হঠাৎ করে ২০০ থেকে ২৫০ জন পুলিশ সদস্য রাস্তায় নেমে গুলি করতে থাকে। জীবন বাঁচাতে পাশের একটি ডাস্টবিনের পাশে লুকিয়েও রেহাই পাইনি। পেছন থেকে গুলি করে, একটি গুলি লাগে রানে।
সহযোদ্ধাদের সহায়তায় তাকে দ্রুত সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার জীবনের গতি যেন সেখানেই থেমে যায়।
তিনি জানান, আগে মাছ ধরার কাজ করতাম। কিন্তু এখন আর ভারী কোনো কাজ করতে পারি না। মা, স্ত্রী আর এক বছরের সন্তানকে নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছি। সংসার চালানোই দায় হয়ে গেছে।
ছেলের এই অবস্থা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মা কুনসুমা খাতুন। তিনি কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে ঢাকায় কাজ করতো। হঠাৎ শুনি হাসপাতালে ভর্তি। মনে হলো সব শেষ হয়ে গেল। এখন ভালো করে হাঁটতেও পারে না।
এই সংকটময় সময়ে স্বামীর পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্ত্রী সায়মা আক্তার পপি। তাদের ছোট সংসার একমাত্র সন্তান আব্দুল্লাহ আল আয়ানকে ঘিরেই। পপি বলেন, আমার স্বামী আগের মতো কাজ করতে পারে না। অন্তত একটি চাকরি হলে আমরা একটু বাঁচতে পারতাম। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই চিন্তায় ঘুম আসে না।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, আনোয়ারার যে সকল যুবক আন্দোলনে আহত হয়েছেন, তাদেরকে সরকার নির্ধারিত সকল সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়মিত তাদের খোঁজ রাখছি।
আঁখি