ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ে সাইকেল চালাতে সক্ষম বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী তাহমিদ

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১৩ জানুয়ারি ২০২২

পাহাড়ে সাইকেল চালাতে সক্ষম বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী তাহমিদ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ পাহাড়ে সাইকেল চালাতে পারঙ্গম বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী তরুণ। শুধু তাই নয়, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দেশের বাইরেও মাউন্টেন সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের সন্তান ২১ বছর বয়সী তাহমিদ আহমেদ চৌধুরী জন্মগতভাবে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী হলেও পাহাড়ে পাহাড়ে সাইকেল চালিয়ে ভাইরাল। ফটিকছড়ির ভূজপূরের দাঁতমারার নিচিন্তা গ্রামের আহমেদ আবু রাহাত চৌধুরী ও নুরুনেচ্ছা বেগমের বড় ছেলে তাহমিদ। থাকেন নগরীর পাঁচলাইশের হামজারবাগে। ২১ বছরের এই তরুণ মাউন্টেন সাইক্লিং স্পোর্টস নিয়ে যেতে চায় বিশ^ দরবারে। অসমতল বা পাহাড়ী রাস্তায় সাইকেল নিয়ে এই খেলাকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে দিতে চায়। নেপাল, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া ও ভুটানসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে মাউন্টেন বাইকিং একটি জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশে ৫ শতাধিক সাইক্লিস্ট মাউন্টে বাইকিং-এর সঙ্গে জড়িত আছে। জানা গেছে, তাহমিদ সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন খুলশী চাইল্ড গ্রামার স্কুলে। ফটিকছড়ির হাজারীখীলের একটি পাহাড়ে এমটিবি এন্ডোরো রেস আয়োজন করা হয়েছিল। ৪০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে তাহমিদ হন তৃতীয়। এটিই তার প্রথম অর্জন। এরপর সাউথ এশিয়ান গেমসে ‘ডাউনহিলে’ ২০১৯ সালে অংশ নিয়ে অষ্টম হয়েছিলেন। ২০২১ সালে এমটিবি বাংলাদেশ এন্ডোরো চ্যাম্পিয়শিপ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। তাহমিদ আহমেদ চৌধুরী অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তার ভাবপ্রকাশ করেন। মায়ের মাধ্যমে তাহমিদ বলেন, ২০১৬ সালে সাইক্লিং রোড স্টান্ট গ্রুপ আর এস আর জেড টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাইক্লিং-এর তার প্রথম যাত্রা শুরু হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালে দেখা গেল, সাইক্লিস্টরা পাহাড়ে সাইকেল চালায়। এরপর কৌতূহল মেটাতে আমিও পাহাড়ে সাইকেল চালানো শুরু করি। এর মধ্যে ইউটিউবে দেখি এসব বিষয়। বিভিন্নভাবে রাউড শুরু করি। মাউন্টেন স্লাইকিংকে পেশাদার পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০১৯ সালে রকস্লেয়ারস নামে একটি স্থানীয় মাউন্টেইন সাইক্লিং গ্রুপ করেছি। এটির আমি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আমরা ১৫ জন রাউডার রয়েছি এই গ্রুপে। দেশের মাউন্টেন স্লাইক্লিংকে জনপ্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। তাহমিদের মা নুরুন্নেচ্ছা বেগম জানান, মেধা ও যোগ্যতা থাকলে হয় না, প্রকাশের সুযোগ দিলে অবশ্যই প্রতিবন্ধকতা জয় করা সম্ভব। প্রতিবন্ধী বলে তাকে আমি ছুটতে দেব না, কিংবা কিছু করতে পারবে না এই বিষয়গুলো এড়িয়ে জয় করার মানসিকতাকে বিকশিত করতে দিলে নেতিবাচক ধারণা বদলাবে। তাহমিদ চেষ্টা করেছে। তার মাউন্টেন সাইক্লিং নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে। চেষ্টা করছে। সাফ গেমসে অংশ নিয়েছিল। এই সাইক্লিং যদি সরকারী-বেসরকারীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা হয় তাহলে তাহমিদের মতো আরও অনেকে উৎসাহী হবে।
×