ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনা চরে উন্নয়ন

প্রকাশিত: ২১:০৫, ২৪ নভেম্বর ২০২১

যমুনা চরে উন্নয়ন

নদীমাতৃক বাংলাদেশের উর্বর পলিমাটি যেমন ফসল উৎপাদনে নিয়ামক ভূমিকা রাখে, পাশাপাশি এর বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় নদী তীরবর্তী জনগোষ্ঠীর জীবন বিপন্ন হতেও সময় লাগে না। তেমন অসহায় মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের নতুন কর্ম প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন অপরিহার্য। বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) মহাপরিকল্পনায় যে সমৃদ্ধির ধারা অবারিত করা হয়, তা এখন আলোর মুখ দেখছে। যমুনা চরের জনগোষ্ঠীর যাপিত জীবন হরেক রকম সমস্যায় আবর্তিত। নদী ভাঙ্গন থেকে শুরু করে অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা, সাইক্লোন কিংবা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই তাদের বিপন্ন জীবনকে টিকিয়ে রাখতে হয়। প্রতিদিনের লড়াকু অভিগমনে সমস্যা বেড়েছে বই কমেনি। সেখানে ২০১৭ সালে বর্তমান সরকার তিন বছর মেয়াদী নতুন উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করে জুলাই মাসে, যা সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২০ সালে। কিন্তু করোনার চরম দুর্বিপাকে অনেক উন্নয়ন গতিধারায় স্থবিরতা নেমে এসেছিল। যমুনার চরের এই আধুনিক প্রকল্পও গতিহীনতার জালে আটকে যায়। এক বছর দেরি করে হলেও নতুন প্রকল্পটি সাফল্যের দ্বারে পৌঁছায়। স্থানীয় জনগণের সার্বিক দুর্ভোগ নিরসনে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, সেখানে জনসাধারণকেই করা হয় উন্নয়নের যথার্থ অংশীদার। জনস্বার্থ আর কল্যাণকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে তাদের নিত্য জীবনমান সুরক্ষায় যে নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা, সেটা আজ সংশ্লিষ্টদের দোরগোড়ায়। দারিদ্র্য যাদের নিত্যসঙ্গী, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের তাড়নায় যারা নিয়তই জর্জরিত, তারা আজ সুস্থির ও স্বস্তির জীবন উপহার পেয়েছে। তবে সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নের সফলতায় আরও কিছু যোগ করবে, যা চরাঞ্চলের উন্নত জীবনযাপনে সহায়ক হবে। বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির নিয়ন্ত্রণে দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পটি বাস্তবের মুখ দেখতে সক্ষম হয়েছে। মানুষের নিত্যদুর্ভোগ আর অস্তিত্ব সঙ্কটের লড়াইয়ে এলাকাবাসীর যে দৈনন্দিন কণ্টকযাত্রা, সেটা নতুন চেহারা পেয়েছে। জীবন যুদ্ধ জয়ের অবকাঠামো নির্মাণে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। পরিকল্পনাটি ‘জীবনমান উন্নতকরণ’ শিরোনামে তার লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিনিয়ত সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। যমুনা চরের হতদরিদ্র মানুষ তাদের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা থেকে বের হতে হিমশিম খেত। যেখানে সরকারের আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সাধারণ মানুষের জীবনমান আরও উন্নত করতে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে। সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীনে বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির এটি একটি সফল কর্মদ্যোতনা। স্থানীয় জনগণ দারিদ্র্যসীমাকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। স্বনির্ভর হয়ে পারস্পরিক সহযোগিতায় সকলে মিলিতভাবে এগিয়েও যাচ্ছে। ১২ বছরের উন্নয়ন অভিগামিতায় বর্তমান সরকার গ্রাম-গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতন নজরদারিতে জনগোষ্ঠীর জীবনমান বাড়ানোর লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সারা দেশে এমন জনকল্যাণমূলক উন্নয়ন প্রকল্প সম্প্রসারণ করাও একটি অত্যাবশ্যক চাহিদা। তেমন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বৈকি।
×