
সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজায় সামরিক অভিযানের পর একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও পর্যবেক্ষক দল প্রকাশ করেছে এমন কিছু তথ্য, যা দেশটির ওপর আঘাত হানতে পারে কূটনৈতিকভাবে।
বিশ্ব গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামরিক হামলায় লক্ষ্যভ্রষ্ট মিসাইল, বেসামরিক স্থাপনায় হামলা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের একটি বিশেষ পর্যবেক্ষক দল ‘নিরপেক্ষ তদন্তের’ দাবি জানিয়ে বলেছে, “এই হামলাগুলোর অনেকটাই সামরিক উদ্দেশ্যবিহীন, যা মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল।”
সোশ্যাল মিডিয়া ও গোপন বার্তা আদান-প্রদানকারী অ্যাপগুলোতে ফাঁস হয়েছে কয়েকটি গোয়েন্দা নথি, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে ‘ভুল টার্গেটিং’ ও অপারেশনাল বিভ্রান্তির তথ্য পাওয়া গেছে। কিছু অনির্ধারিত অডিও ক্লিপ ও চ্যাটলগে দেখা যায়, মিশন চালানোর সময় দ্বিধায় ছিলো কমান্ড ইউনিট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ফাঁস হওয়া দলিলগুলো আন্তর্জাতিক আদালতে গেলে ইসরায়েলকে বিপাকে ফেলতে পারে। ইতোমধ্যে হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষ নিয়ে নতুন শুনানির আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কয়েকটি পশ্চিমা রাষ্ট্রে ইসরায়েলপন্থী অবস্থানে পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্স—তিনটি দেশই তাদের কূটনৈতিক বার্তায় ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও একাংশের মধ্যে অসন্তোষ ধ্বনিত হচ্ছে।
এদিকে তেল আবিবে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসছে সাম্প্রতিক নীতির বিরুদ্ধে। একটি বিশাল ব্যানারে লেখা ছিলো—"আমরা যুদ্ধ চাইনি, শান্তি চেয়েছিলাম।"
মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি, তুরস্কসহ একাধিক দেশ ইতোমধ্যে তাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধি ‘আলোচনার জন্য’ দেশে ফিরিয়ে এনেছে। বিশ্লেষকরা এটিকে ‘সংকেতমূলক প্রতিবাদ’ বলে অভিহিত করছেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন কর্মকর্তা রিচার্ড ডেভিস বলেন,“যদি এই তথ্য-প্রমাণ সত্য হয়, তবে ইসরায়েলের ওপর কেবল কূটনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞার কথাও উঠবে।”
যুদ্ধ কখনো একপাক্ষিক থাকে না। তবে তথ্য ও প্রমাণ যখন সামনের আসে, তখন অনেক 'অজানা' জট খুলে যায়। ইসরায়েল এখন কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি—যেখানে শুধু সামরিক শক্তিই যথেষ্ট নয়, দরকার নৈতিক অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
বিশ্ববাসী দেখছে—এই ‘কঠিন মার’ কেবল অস্ত্র নয়, তথ্যপ্রমাণের দিক থেকেও এক ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলের জন্য।
হ্যাপী