ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিষয় : বাংলা (১ম পত্র) গল্প-মিনু নাসরিন হক

ষষ্ঠ শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ২১:৪১, ২৮ অক্টোবর ২০২১

ষষ্ঠ শ্রেণির পড়াশোনা

সিনিয়র শিক্ষক কলেজিয়েট হাই স্কুল, চট্টগ্রাম সৃজনশীল অংশ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখ. শেফালীর বয়স পনের বছর। সে একটি বাসায় কাজ করে কিন্তু কোন কাজই সে সঠিকভাবে করতে পারে না। মাঝে মাঝে প্লেট গ্লাস ধুতে গিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। কাপড় ভাল পরিষ্কার হয় না। এ জন্য গৃহকর্ত্রী ঠিক করে তাকে আর কাজে রাখবে না। ক. মিনু সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে কীভাবে? খ. শুকতারাকে মিনু সই মনে করে কেন? গ. উদ্দীপকের শেফালীর সাথে ‘মিনু’ গল্পের মিনু চরিত্রের বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘মিনু প্রতিবন্ধী হলেও শেফালী থেকে এগিয়ে’Ñ মন্তব্যটি যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। উত্তর : ক. মিনুর জগৎ চোখের জগৎ, দৃষ্টির ভিতর দিয়েই সে সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে। খ. নিজের সাথে মিল খুঁজে পাওয়ায় মিনু পূব আকাশের শুকতারাকে সই মনে করে। মিনু ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠেই দেখতে পায় পূর্ব আকাশে দপদপ করে জ্বলছে শুকতারা। মিনুর বিশ্বাস শুকতারা নিজের পিসে মশায়ের জন্য উনুন ধরাতে ধরাতে কয়লা ভাঙতে রান্না করতে তার মত খুব ভোরে উঠে যায়। শুকতারাকে দেখলেই মিনুর মুখে হাসি ফুটে উঠে। শুকতারার সাথে মিনু নিজের মিল খুঁজে পায় বলে তাকে সই বলে। *** [গ এবং ঘ প্রশ্নের উত্তর শিক্ষার্থীরা উদ্দীপক এবং বইয়ের সাথে মিলিয়ে নিজের মত করে উত্তর লিখবে। এখানে একটি নমুনা উত্তর দেয়া হল।] গ. গৃহস্থালী কাজে দক্ষতার দিক দিয়ে উদ্দীপকের শেফালীর সাথে ‘মিনু’ গল্পের মিনু চরিত্রের বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। উদ্দীপকে শেফালী স্বাভাবিক এবং সুস্থ হলেও গৃহকর্মে নিপুণতা নেই। ফলে গৃহকর্ত্রী তাকে বিদায় করার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে ‘মিনু’ গল্পের মিনু শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী হয়েও ছিল সর্বগুনান্বিতা। মিনু বাবা-মা মরা অনাথ মেয়ে। দূর সম্পর্কের এক পিসির বাড়িতে স্থান পায়। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সে কয়লা ভাঙে, উনুনের ছাই পরিষ্কার করে, উনুন ধরায়। পিসে মশায় এর জন্য রান্না করে, বাসন, ঘটি, গ্লাস পরিষ্কার করে। ঝাট দেয়। প্রতিটি কাজ সে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করে। যা আমরা উদ্দীপকের শেফালীর মাঝে দেখতে পাই না। ঘ. মিনু প্রতিবন্ধী হলেও কাজের দক্ষতায়ও নিজের জগত সৃষ্টিতে উদ্দীপকের শেফালীর থেকে এগিয়ে। ‘মিনু’ গল্পের মিনু শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী। বাবা-মা মরা মিনু আশ্রয় পায় দূর সম্পর্কের এক পিসির বাড়িতে। মাত্র দশ বছর বয়সী মিনু সব কাজ করতে পারে। প্রতিটি কাজ সে আনন্দ নিয়ে করে। কাজের মধ্যে সে তার জগত তৈরি করেছে। প্রতিদিন ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে সে কয়লা ভাঙে, উনুন ধরায়, রান্না করে। বাসন, ঘটি গ্লাস যতেœর সাথে পরিষ্কার করে। এদের প্রত্যেকের ও আলাদা আলাদা নাম দিয়েছে। এভাবে নিজের একটা অভিনব জগত সৃষ্টি করেছে মিনু। এ জগতের সাথে বাইরের জগতের কোন মিল নেই। মিনুর জগতে শত্রু আছে বন্ধুও আছে। ওর শত্রু হল কয়লা, মিটসেফ, বোলতা ভিমরুল। ওর বন্ধুরা হলো শুকতারা পিঁপড়ে, রান্নাঘরের বাসন-কোসন, কাঁঠাল গাছে বসে থাকা হলদে পাখি। প্রচ- শক্তি দিয়ে কয়লা ভাঙে কারণ কয়লা ও শত্রু। বোলতা ভিমরুলদের মেরে ওর বন্ধু পিঁপড়েকে খেতে দেয়। দিনের পর দিন কাঁঠাল গাছের দিকে তাকিয়ে থাকে হলদে পাখির অপেক্ষায়। দিনের শুরু করে পূর্ব আকাশে থাকা সই শুকতারার সাথে। এভাবে নিজের জগত তৈরি করে রেখেছে। গৃহকর্মে নিপুণ মিনু নিজের জগতে সে আনন্দে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু উদ্দীপকের শেফালী সামান্য গৃহকাজে মনোযোগ নেই। তাই বলা যায় মিনু প্রতিবন্ধী হলেও শেফালী থেকে এগিয়ে মন্তব্যটি যথার্থ।
×