ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভাতিজিকে পাঁচ মাস আটকে রেখে দেহব্যবসা

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

ভাতিজিকে পাঁচ মাস আটকে রেখে দেহব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ চাকরির প্রলোভনে নিজের ভাইয়ের মেয়েকে ঢাকার বাসায় নিয়ে আটকে রেখে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা ও পরবর্তীতে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাঁচ মাস পর পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে সোমবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই যুবতী। মামলায় ভুক্তভোগী যুবতীর (১৯) চাচা সোহেল খান, ফুপু মেহেন্দীগঞ্জের ভাষানচর এলাকার বাসিন্দা নূপুর বেগম ও ফুপা নজরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরিশাল বন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা এক ট্রলারচালকের কন্যা ওই যুবতীর ১৪ মাস আগে বিয়ে হয়েছিল। দাম্পত্য কলহের জেরে বিয়ের দুই মাস পর স্বামীর বাড়ি ছেড়ে ওই যুবতী বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফুপু নূপুর বেগম তাকে ঢাকায় চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ফলে নয় মাস আগে চাচা সোহেল খানের সহায়তায় ওই যুবতী ঢাকার জুরাইন এলাকার শনিরআখড়ার ফুপুর বাসায় গিয়ে ওঠেন। ওই যুবতী অভিযোগ করে বলেন, চাকরির প্রলোভনে তাকে ঢাকায় নেয়া হলেও সেখানে গিয়ে দেখি ফুপু যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর সঙ্গে জড়িত অনেক ছেলেমেয়ে তার বাসায় আসা যাওয়া করে। কয়েকদিন পর ফুপু ও ফুপা মিলে আমাকেও দেহব্যবসায় জন্য চাপ প্রয়োগ করে। আমি তাতে বাধা দিলে তারা আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। দীর্ঘ পাঁচ মাস একটি কক্ষে আটকে রেখে তারা দেহব্যবসায় বাধ্য করায়। তখন মা ও বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলেও তাদের শেখানো কথা বলতে হতো। নির্যাতিতা যুবতী আরও বলেন, চার মাস আগে তাকে অন্য আরেকজনের কাছে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর এক নারীর সহায়তায় তিনি পালিয়ে বরিশাল বন্দর থানার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। ওই যুবতীর দিনমজুর পিতা বলেন, মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর আমার বোন ও তার জামাই এবং ভাই আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখে। ওইসময় এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবেনা বলে মুচলেকা দিয়ে আমি মুক্তি পাই। পরবর্তীতে অভিযুক্তরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলার নানা ষড়যন্ত্র করায় উপায়ন্তর না পেয়ে অবশেষে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চাচার লালসার শিকার শিশু বরিশালে তিন সন্তানের জনক চাচার লালসার শিকার চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া ভাতিজিকে মুমূর্ষু অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে ওই শিশু শিক্ষার্থীর দিনমজুর বাবা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, প্রতিবেশী চাচা তিন সন্তানের জনক শাহ আলম ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে তার শিশুকন্যাকে নিজ ঘরে ডেকে নেয়। পরবর্তীতে ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, অসুস্থ অবস্থায় ওই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। তবে পরীক্ষা করার পর জানা যাবে শিশুটির সঙ্গে কি হয়েছে। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এর আগেই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×