নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট ॥ কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে জয়পুরহাটে। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জেলার বাজারগুলোতে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে গতবারের চেয়ে চার ভাগের এক ভাগ দামে।
অনেক জায়গায় এত কম দামে বিক্রি না হওয়ায় অবহেলায় মাটিতে লুটাচ্ছে পশুর চামড়া। চামড়ার বাজারে ধ্বসের শিকার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অনেকটাই দিশেহারা। আর যেসব হতদরিদ্র মানুষ কোরবানির চামড়া বিক্রির টাকা থেকে একটা অংশ পেয়ে থাকে প্রতি বছর, এবার তাদের ভাগ্যেও জুটবে না কাংখিত মুনাফা।
একদিকে করোনা অন্যদিকে পুঁজি সংকট, ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা ইত্যাদি কারণে চামড়ার বাজারের এই হাল বলে মনে করছেন স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা। জেলায় বিভিন্ন বাজারে প্রতিটি ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে আকার ভেদে মাত্র ১০ থেকে ১৫ টাকায়। আর সেখানে গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। চামড়ার বাজার ধ্বসের কারণে লোকসানের শিকার হচ্ছেন জেলার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা।
কোরবানির চামড়ার এই আকস্মিক দরপতনে দিশেহারা মধ্যস্বত্বভোগী চামড়া ব্যবসায়ীরাও। এতে পুঁজি হারিয়ে অনেকেই পথে বসবেন বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
জয়পুরহাট চামড়া ব্যাবসায়ী সমিতির নেতা অহেদুল হোসেন জানান , ট্যানারী মালিকরা সিন্ডিকেট করে একদিকে গত বছরগুলোর বকেয়া টাকা দিতে নানা তালবাহানা করছেন, অন্যদিকে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের মর্জ্জি মত পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ চামড়া ব্যাবসায়ীদের।
অপরদিকে বিক্রেতা আব্দুল হান্নান জানালেন, পশুর চামড়া পুর্বে তারা মহাজনদের কাছে বিক্রি করত ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ হাজার টাকা পর্যন্ত, সেই চামড়া গত বছর থেকে ১০০ টাকাথেকে ২০০ টাকায় বিক্রী করতে হচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলের চামড়ার বড় একটি অংশ কেনা বেচা হয় জয়পুরহাটে আর তাই বকেয়া টাকা না পাওয়ায় হতাশ এখানকার চামড়া ব্যাবসায়ীরা। ট্যানারী মালিকদের কাছে জয়পুরহাটের চামড়া ব্যাবসায়ীদের পাওনা প্রায় কয়েক কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় পুঁজি হারিয়েছে এসব ব্যবসায়ীরা।
তাই এ শিল্পকে রক্ষা করতে ও গরীবদের হক ন্যায্যভাবে পেতে চামড়ার মূল্য নির্ধারন করার দাবী সংশ্লিষ্টদের।
