ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন রেলমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৬:১০, ১৩ জুন ২০২১

যে কারণে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন রেলমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের বিয়ের গুঞ্জন প্রথমে শোনা গিয়েছিল গত ১০ জুন। তবে সে সময় এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মন্ত্রী নিজেও গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। তবে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাই প্রথম গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেন। রেলমন্ত্রীর স্ত্রী দিনাজপুরের বিরামপুরের মেয়ে শাম্মী আকতার মনি। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। গত ৫ জুন উত্তরায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তবে বিষয়টি প্রথম দিকে চেপে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু কেন? এ বিষয়ে নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমকে বলেন, বিয়ে করেছি। তা অস্বীকার করার কিছু নেই। যা হয়েছে তা বলতে হবে। কিন্তু গণমাধ্যমকে বিয়ের বিষয়টি প্রথমে জানাইনি। কারণ, আগে তো প্রধানমন্ত্রীকে খুশির খবরটা জানাতে হবে। যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়নি, ততক্ষণ তাই অন্যদের কাছেও বিয়ে নিয়ে মুখ খুলিনি। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি তাই বিয়ে নিয়ে এখন আর লুকোচুরির কিছু নেই। আমি চেয়েছি— প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে অন্যদের জানাব। তবে বিয়ের খবরটি যেহেতু সত্য ছিল তাই সরাসরি কখনও অস্বীকার করিনি। বিয়ে করেছি- সেটা বলতে তো বাধা নেই।' বিয়ের খবরের পর প্রতিক্রিয়া কি হয় সেটা খেয়াল রাখছিলেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যখন দুই-একটা মিডিয়ায় প্রতিবেদন হয়েছে- তখন ভাবলাম-১৪ তারিখ পার্লামেন্ট আছে, তখন এ বিষয়ে কথা বলব। কারণ, টেলিফোনে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চাইনি। তবে শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোনেই জানাতে হলো। বিয়ের ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে তার ঘনিষ্ঠ অনেকেও জানতেন না বলে তিনি জানান। ৬৫ বছর বয়সী রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গত ৫ জুন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রাজধানীর উত্তরায় কনের ভাড়া বাসায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। রেলমন্ত্রীর নতুন জীবনসঙ্গী ৩৬ বছর বয়সী আইনজীবী শাম্মী আকতার মনি। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মনিকে ঘরে তুলবেন রেলমন্ত্রী। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার ইসলাম ৫৮ বছর বয়সে মারা যান। তারপর সঙ্গীহীন ছিলেন সুজন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছেন- তাদের সবাই বিবাহিত। অপরদিকে ২০১১ সালে মনির প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদ হয়। তার একটি মেয়ে আছে। মণির প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর তিনি মেয়েকে নিয়ে উত্তরায় থাকেন। মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী। দিনাজপুরের বিরামপুর নতুন বাজার এলাকায় শাম্মীদের বাসা। ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে তিনি। তাঁরা দুই ভাই এক বোন। দুই ভাই বর্তমানে বিরামপুরের বাসায় থাকেন। বড় ভাই মিলন হোসেন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী। অপরজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। তাদের আগের বাড়ি ছিল পাবনায়। বোনের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মিলন বলেন, আমার বোন আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছেন। আইনি বিষয়ে পরমার্শ নিতে ২০ দিন আগে রেলমন্ত্রীর কাছে যায় আমার বোন। পরে আমার বোনকে মন্ত্রীর পছন্দ হয়। পারিবারিকভাবে ৫ জুন উত্তরায় আমার বোনের বাসায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে বরপক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনে পক্ষে আমি ও আমার ভাই উপস্থিত ছিলাম। আনুষ্ঠানিকভাবে ছোট পরিসরে যতটুকু করা দরকার; সেভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে। ৬৫ বছর বয়সী নূরুল ইসলাম ১৯৫৬ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হিসেবে সরকারের মন্ত্রিসভায় যুক্ত হন।
×