ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে ইউএনও’র ওপর হামলা ॥ রবিউলের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ১৭ জানুয়ারি ২০২১

দিনাজপুরে ইউএনও’র ওপর হামলা ॥ রবিউলের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর শেখের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের চার্জশিটভুক্ত একমাত্র আসামি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন হয়েছে। রবিবার দুপুরে দিনাজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বনাথ মন্ডল তার আদালতে এই চার্জগঠন শুনানি করেন। একইসঙ্গে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন জানান, রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জগঠন শুনানি শেষ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৪৫৭, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৫০৬(২), ৩৮০, ২০১ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বর্তমানে ইউএনও ওয়াহিদা খানম বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন। আটক রবিউল জেলার বিরল উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের বিজোড়া গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে ও ঘোড়াঘাটের ইউএনও বাসভবনের সাবেক কর্মচারী। পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অভিযোগপত্রে এই মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, মোবাইল নেটওয়ার্ক, আলামত হিসেবে ব্যবহৃত লাঠি, হাতুড়ি, ফরেনসিক রিপোর্ট, এমই রিপোর্ট, নোকিয়া ফোন, নগদ ৪৫ হাজার টাকাসহ ৩১টি আলামত থাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগপত্রে ৫৩ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে যাদের মধ্যে ৫ জন সাক্ষী ইতিমধ্যেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এই মামলায় প্রায় পৌনে ৩ মাসের সময়ে ৪০ জনেরও বেশি জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামি রবিউল ইসলাম জেলা প্রশাসকের ফরাস পদে চাকরি করতেন। সে আইপিএল ক্রিকেট জুয়া, বাজি ধরা ও ক্রাইম পেট্রোল দেখার আসক্তিতে পড়ে যান। পরে এইসব নেশায় পরিণত হওয়ার ফলে কাজে মনোযোগ দিতে পারতো না। এরই ধারাবাহিকতায় কাজে অবহেলা ও উদাসীনতার জন্য তাকে ঘোড়াঘাটে বদলি করা হয়। সেখানেও রবিউল ইসলাম জুয়া, বাজি ধরার জন্য ঋণ ও দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সেখানে পাওনাদারদের টাকার চাপের জন্য সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পারায় গত বছরের ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যাগ থেকে ১৬ হাজার টাকা চুরি করে। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সব মিলিয়ে সে ইউএনও’র ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত ২টার দিকে সরকারি ডাকবাংলাতে ঘোড়াঘাট ইউএনওর ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদেরকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে ২০ সেপ্টেম্বর নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রবিউল ইসলাম।’
×