ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কোম্পানির তদন্তের সিদ্ধান্তে শেয়ারবাজারে বড়পতন

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ১৩ জানুয়ারি ২০২১

কোম্পানির তদন্তের সিদ্ধান্তে শেয়ারবাজারে বড়পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক তেজিভাবের পর সূচকের উর্ধগতির রথ কিছুটা হলেও থামলো। মঙ্গলবার শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে ৫০ শতাংশের ওপর দর বাড়ার বা কমা কোম্পানির ওপর তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পর বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। অবশ্য এই পতনের বাজারেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই শেয়ারবাজারে বেশ কিছু কোম্পানির দর ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই কারণে গত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে বা কমেছে, এর পেছনে কোনো কারসাজি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে উভয় স্টক একচেঞ্জকে চিঠি পাঠানো হয়। স্টক একচেঞ্জে পাঠানো চিঠিতে গত এক মাসে যেসব কোম্পানির গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের ছয় মাসের গড় লেনদেনের চেয়ে পাঁচগুণের বেশি বেড়েছে, যেসব কোম্পানির বার্ষিক বা প্রান্তিক শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি উত্থান-পতন ঘটেছে, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির দাম ও লেনদেন ৩০ শতাংশের কম-বেশি হয়েছে, সেসব কোম্পানির বিষয়েও তদন্ত করতে বলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশ আসার পর বুধবার লেনদেন শুরু হওয়ার আগে থেকেই বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। প্রি-ওপেনিং চালু থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী লেনদেন শুরুর আগেই শেয়ারের দাম কমিয়ে বিক্রির প্রস্তাব দেন। এতে ডিএসইতে লেনদেন শুরু“ হওয়ার আগেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪০ পয়েন্ট পড়ে যায়। সকালে নেতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পর ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯১ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে উঠে নেমে গেছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩৫ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচকের এমন পতনের সঙ্গে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে দিনের শেষেও। এতে একাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায়। সেই সঙ্গে দরপতনের তালিকায় নাম লেখায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৮টির। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বড় দরপতনের দিনে এক শতাংশের ওপরে দাম কমেছে ২০৮টির। এর মধ্যে ১৬২টির দাম কমেছে দুই শতাংশের ওপরে। চার শতাংশের ওপরে দাম কমার তালিকায় রয়েছে ৮২টি। ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে ছয় শতাংশের ওপরে। মূল্য সূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ১০৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল এক হাজার ৯৮২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রবির শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ২২৯ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
×