ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে ॥ এনামুর

প্রকাশিত: ২২:২৯, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে ॥ এনামুর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় শুরুতে সরকার প্রস্তুত ছিল না স্বীকার করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউ সামলানোর সক্ষমতা সরকারের আছে, এখন কোন সমস্যা হবে না। রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বৈশ্বিক মহামারী ও সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধে তরুণদের ভূমিকা’ শিরোনামে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ব্র্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রাম এই সেমিনারের আয়োজন করে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পরে পরীক্ষার জন্য আমাদের কোন ল্যাব ছিল না। পরে মার্চের মাঝামাঝিতে আইইডিসিআর প্রথম ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে। এরপর দেখা গেল এত বেশি সংক্রমণ হচ্ছে, তখন ল্যাব সঙ্কট ছিল, ডিটেকশনে সঙ্কট হচ্ছিল। এরপর সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০০ আরটিপিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালও করা হয়। সবশেষে দেখা যায়, দেশে ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত করেছে সরকার। ১২০০ -এর ওপরে আইসিউই করা হয়েছে। এরপর করোনা রোগী ম্যানেজমেন্টে কোন সঙ্কট সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, সরকারী- বেসরকারী হাসপাতালকে নিয়ে দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রথম ঢেউ মোকাবেলায় যে সমস্যা, বাধা-বিপত্তি পার হয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় যে সক্ষমতা তৈরি করেছি সেটা দিয়ে আমরা দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে পারব। এখন পর্যন্ত দেখছি, প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যু অনেক কম। আমাদের সামর্থ্যও অনেক বেশি। দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমাদের কোন সমস্যা হবে না। করোনাভাইরাস মোকাবেলার চেয়ে সরকার এখন সামাজিক সুরক্ষার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমস্যা হচ্ছে এই পেন্ডেমিক মোকাবেলায় সোশ্যাল যে ডিজাস্টার হয়েছে সেটা। এখানেও সরকার মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। দরিদ্র সহায়তার পাশাপাশি শিল্প কারখানায় সরকার বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করছে। বাংলাদেশে যেভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা নিয়েও কথা বলেন এনামুর রহমান। চীনের উহান থেকে যখন প্রথম ব্যাচ আসল, ৩১৩ জনকে আমার রিসিভ করলাম, তাদের আশকোনা হাজী ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রাখলাম। তখন তাদের মধ্যে কারও করোনা পাইনি। তাদের সুস্থ পেয়ে ছেড়ে দিয়েছি। এরপর ইতালি, ইউরোপ, ইংল্যান্ড থেকে যে যাত্রীরা আসতে শুরু করল, তিন মাসের মধ্যে ছয় লাখ প্যাসেঞ্জার আসল। এত বিশাল সংখ্যক যাত্রীর কোয়ারেন্টাইনে রাখা, তাদের খাওয়া-দাওয়া দেয়া, এই সামর্থ্য আমাদের ছিল না। যার ফলে এই লোকগুলো বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে। সেখান থেকে আমাদের করোনা আসছে। এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, করোনা পেন্ডেমিক ম্যানেজমেন্টে আমরা ২০তম দেশ হিসেবে অবস্থানে আছি। পেন্ডেমিকের সময়ে যে সোশ্যাল ডিজাস্টার হচ্ছে সেখানে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানের পরেই আমাদের অবস্থান আছে। আমরা আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভাল অবস্থানে আছি। সেমিনারে হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক সাজেদুল হাসান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় যুব সমাজকে নিয়ে আমরা একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দাঁড়াতে চাই। কোন এলাকায় দুর্যোগ দেখা দিলে সেই এলাকায় আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের কর্মীরা, স্বেচ্ছাসেবকরা যেন দাঁড়াতে পারে, সহায়তা করতে পারে এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই।
×