ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আর্থ-সামাজিক চালচিত্র-২০২০

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০

আর্থ-সামাজিক চালচিত্র-২০২০

বাংলাদেশে যে দুর্বার গতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছিল, সেখানে বিশ্বের অন্য দেশের মতো কোভিড-১৯ এর হানা অর্থনীতির গতি-প্রকৃতিকে কিছুটা হলেও শ্লথ করেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মহামারীর মধ্যে কিছু লোকের পরসম্পদ লুণ্ঠন প্রবণতা এবং পণ্যাদি ক্রয়ের নামে মহোৎসবের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত এই গ্রুপটির কোন দল নেই। এর বিষবৃক্ষ মূল থেকে উৎপাটন করতে হবে। আবার পেশাজীবী শ্রেণী বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। এরা ভুলে যায় যখন কেউ অন্যায়ভাবে ক্ষমতা প্রদর্শন করে, সন্ত্রাস করে তারা অবশ্যই ন্যাচারাল জাস্টিসের সম্মুখীন হবে। পোশাকশিল্প খাতে বিশেষত উৎপাদিত সামগ্রীর জন্য বিশ্বের নানা দেশ এবং স্থানীয় চাহিদার ক্ষেত্রে বেসরকারী খাতের প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে। অথচ বিজিএম নেতৃবৃন্দের কোভিডের সময়ে কি ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়- সেটি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত ছিল। যেখানে আগে পোশাক খাতে ৮০% নারী শ্রমিক ছিল, প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে- নারী শ্রমিকের হারের চেয়ে পুরুষ শ্রমিকের হার বেড়ে গেছে। কোভিডের কারণে অনেক প্রবাসী শ্রমিকের পক্ষে স্ব-স্ব কর্মস্থলে ফেরত যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত বছরের চেয়ে এ বছরের নবেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে মার্কিন ডলার ১৯.৮ বিলিয়ন, এটি গত বছরের তুলনায় ৮.২% বেশি। এর একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে কোভিডের কারণে হুন্ডি ব্যবসায় সমস্যার সৃষ্টি হওয়া এবং অন্য কারণটি হচ্ছে গত অর্থবছর থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করলে সরকার ঘোষিত নীতিমালা অনুসারে অনুপ্রেরণা দেয়া। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব মতে চলতি বছরে মার্কিন ডলার ২০ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করবে প্রবাসীরা। যে সমস্ত প্রবাসী চলতি বছরে বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন, তাদের স্থানীয় পর্যায়ে ডাটাবেজ তৈরি করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকসমূহের মাধ্যমে পুনর্বাসনের কাজ গ্রহণ করা দরকার। মূল সমস্যা হচ্ছে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা, ত্রুটিবিচ্যুতি এবং ধনবান শ্রেণীর পক্ষে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ঢাকাকেন্দ্রিক আকারে কাজ করে চলেছে। ২০২০ সালেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহ অতি মাত্রায় রাজধানীকেন্দ্রিক। ব্যবসা-বাণিজ্য করা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের কথা প্রায় ভুলতে বসেছে। দুটো উদাহরণই যথেষ্ট। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলে ১০০% ফান্ড চলে আসে। অথচ গ্রামীণ জনপদে বিনিয়োগ হচ্ছে ৬%-এর মতো। এটি ডিপেনডেন্সি থিওরির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অথচ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের ৮০% অন্তত গ্রামীণ জনপদে বিনিয়োগ করা উচিত। সরকারপ্রধান দেশে সিএসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। বাদ বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা এনজিওদের মাধ্যমে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। এই অর্থ পিকেএসএস এবং বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিতরণ করা যেতে পারে। কেন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় দেশের প্রান্তিক, মাঝারি গোষ্ঠীর প্রতি এত অনীহা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের ব্যত্যয় ঘটিত অর্থ ছাড় দেয়া হয়নি- সেটির জন্য একটি জবাবদিহি থাকা উচিত। আসলে অর্থনীতির রোল মডেল হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। কিন্তু এটি মূলত অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিচালিত হচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখনও প্রায় ৩৭ বছরের পুরনো মডেল অনুসারে কাজ করছে। অথচ জরুরী হয়ে পড়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের সংস্কার সাধন করা। ঋণদান কর্মসূচীকে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নীতিমালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বাস্তবায়ন করা। ব্যাংকিং ব্যবস্থার সংস্কার দরকার। সেটি করতে হলে এমন কেউ কর্ণধার হবে ব্যাংকিং খাতে- যিনি মুদ্রানীতিকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করে বর্তমান সরকারপ্রধানের উচ্ছা অনুযায়ী সিংহভাগ মানুষের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেয়ার বন্দোবস্ত করবেন। কেউ যদি গতানুগতিকভাবে কাজ করেন তবে আর যাই হোক সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। ওষুধ কোম্পানিগুলো, হাসপাতালগুলো এবং অনলাইন শপিংগুলো রমরমা করোনাকালে ব্যবসা করছে। করোনাকালেও নবেম্বর পর্যন্ত রফতানি ৩.১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে রফতানির আদেশ ইউরোপীয় দেশ থেকে বাতিলের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সূচকে বাংলাদেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে। তবে এখন থেকেই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে যাতে রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় হেরে না যায় এবং ট্যারিফ সমস্যায় না ভোগে সে জন্য খেয়াল রাখা দরকার। ইউনাইটেড নেশন্স কনফারেন্স অন ট্রেড এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের মতে এদেশের পক্ষে ৭.৫% রফতানি ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। এই সমস্যা উত্তরে ওঠার জন্য অবশ্যই আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প এবং স্থানীয় পর্যায়ের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হবে। প্রত্যাশা করেছিলাম যে, আমাদের প্রবীণ ও প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের সমন্বয়ে সরকার করোনাকালে অর্থনীতিকে আরও গতিময় করতে একটি বিশেষ কমিটি করবে। যারা প্রতিমাসে একবার করে অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সুপারিশমালা পেশ করবেন এবং আন্তরিকতার সঙ্গে তা বাস্তবায়িত হবে। দুর্ভাগ্য যে এ ব্যাপারে কোন ধরনের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। চলতি বছরের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো। পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের অর্থনীতি আরও গতিময়তা পাবে এবং আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে পদ্মা সেতুর রেলের কাজ সমাপ্ত করতে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা এবং সময়সূচীর প্রয়োজন রয়েছে। অদম্য সাহসিকতার সঙ্গে পদ্মা সেতু নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই সেতুটি চালু হলে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পাবে দেশে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সরকারপ্রধান নানামুখী অর্থনৈতিক কর্মসূচী পুনরুদ্ধারের জন্য ঘোষণা করেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ টাকা ১০২৯.৬ বিলিয়ন প্রণোদনা প্যাকেজ ছিল। কৃষির ওপরও জোর দেয়া হয়- যাতে মানুষের মধ্যে খাদ্যাভাব দেখা না দেয়। সরবরাহজনিত সমস্যা মোকাবেলার জন্য বিভিন্নমুখী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। তবে প্রণোদনা প্যাকেজের যে অংশটির সঙ্গে বিত্তশালীরা জড়িত, তারা ব্যাংক থেকে অর্থ ছাড় করতে পারে। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তেমন অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে ছাড় করেনি। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ঋণের টাকা নিয়েও এ সময়ে যারা অর্থ ব্যাংকে পরিশোধ করছে না, তাদের ব্যাপারে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া ঠিক হয়নি। বরং কৃষকদের এবং কৃষিনির্ভর শিল্পের ক্ষেত্রে একটি তৃণমূল পর্যায়ের প্রস্তাবনার আকারে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় ঋণের বাস্তবায়ন করা গেলে ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে রাখতে সক্ষম হতো। এমনিতেই ব্যাংকিং সেক্টর কোভিডের আগেই নন-পারফর্মিং লোনের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বাদ দিয়ে অনার্স-মাস্টার্সের ফল এবং পারিবারিক ইতিহাসে কেউ দুর্নীতি করেছে কিনা, সেটি বিবেচ্য হওয়া উচিত। পুঁজিবাজারকে গড়ে তোলার জন্য বহু কথা শোনা গেলেও এক শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গের জন্য তেমন মেঘে ঢাকা সূর্যের আলো কোভিডের সময়েও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। ব্যাংকিং সেক্টরে পরিচালকদের সংখ্যা হ্রাস, দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন। তবে কোন কোন ব্যাংক যেভাবে লোকবল ছাঁটাই করছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের অগ্রযাত্রায় ডিজিটালাইজেশন একটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বলশালী করছে। তবে যারা ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই সৎ, স্বচ্ছ এবং মানবিক হতে হবে। বহুল প্রচলিত বক্তব্য ‘দি ম্যান বিহাইন্ড দি প্লার্ড কথাটি বাস্তবতার নিরিখে যারা ডিজিটাল প্রক্রিয়া সার্ভিস প্রোভাইড করবেন এবং সার্ভিস গ্রহণ করবেন- উভয়ের জন্য প্রযোজ্য। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ আবেদন করার পর নয়টি ব্যাংকের অফিসার পদে সিস্টেম থেকে আবেদনকারীর ট্র্যাকিং নম্বর থাকা সত্ত্বেও ভাবেনি এ ব্যাপারে উন্নত বিশ্ব হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হতো। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির পর গবর্নর ও ডেপুটি গবর্নর ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ তেমন উল্লেখযোগ্যভাবে দৃশ্যমান হয়নি। কানামাছির খেলা খেলে আর যাই হোক যে অদম্য গতিতে প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিতে চান, সামাজিক বৈষম্য দূর করতে চান, কর্ম প্রত্যাশী যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান করতে চান, পেছন থেকে ঘাপটি মারা একটি শ্রেণী তার নির্দেশ বারবার অমান্য করে অন্যায়ের পথে হেঁটে অদৃশ্য শক্তির কারণে বেঁচে যাচ্ছে। আশার কথা, সরকার এ বছর দুর্নীতিগ্রস্তদের বিচার করা শুরু করেছে। যত দ্রুত এরা বিচারের সম্মুখীন হবে, দেশ থেকে পাচারকৃত বিশাল অঙ্কের অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হবে, তত দেশে পুঁজি সঙ্কট দূর করা সম্ভব। কোভিডের কারণে দেশের বীমা শিল্পের ভীষণ ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ বীমার ৭০% প্রিমিয়াম সচরাচর এসে থাকে আগুন এবং সামুদ্রিক বীমা থেকে। অথচ সমুদ্রের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য পরিবহন করা না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে। এদিকে স্বাস্থ্য বীমা এবং শস্য বীমা প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার যে উদ্যোগ, সেটি সফল হওয়া বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। দেশের টেক্সটাইল শিল্পগুলোকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। পাটকলকে বেসরকারীকরণের যে উদ্যোগ তাকে কিভাবে ফলপ্রসূ করা যায়, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান যাতে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পর্যটন শিল্প করোনার কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন খুলে দেয়ায় আবার চাঙ্গা হচ্ছে। মানুষ স্বভাবজাতভাবে সামাজিক ও স্বাধীনতাপ্রিয়। করোনাকালে মাস্ক ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশা করা যায় ১৬ জানুয়ারির পর স্কুল-কলেজগুলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চালু করা হবে। প্রয়োজনে তিন শিফটে ক্লাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। জনকল্যাণের কথা বিবেচনা করে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্দীপনা দিয়ে বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে অর্থায়নের সুযোগ প্রদান করেছে। তবে দেখা যাচ্ছে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা বিরাজ করছে। এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য তদারকি ব্যবস্থা এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। যদি এমনভাবে উন্নয়ন প্রকল্প কেউ প্রণয়ন করে যাতে হাত ধোয়া এবং ল্যাট্রিন নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শকের জন্য ৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আচরণ ও বাছাইয়ে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে- তা হলে অবশ্যই যারা এ ধরনের প্রকল্প তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা, দেশের অগ্রযাত্রায় এ ধরনের দুর্নীতিগ্রস্তরা দেশের শত্রু। চলতি অর্থবছরে করোনা, আমফান, তিন মাসব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় ৪২টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও অর্থনীতির গতিশীলতা মাঝারি মানের ছিল। তবে ভীষণ খারাপ লেগেছে যেভাবে এক ধরনের ধর্ম ব্যবসায়ী জাতির পিতার ভাস্কর্য হতে দেবে না বলে বলেছে। এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের জানা উচিত আবহমানকাল থেকে ভাস্কর্য ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও প্রচুর ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। বিশ্বের বহু মুসলিম দেশেও ভাস্কর্য রয়েছে। ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে পার্থক্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের বোঝা উচিত। লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট এবং আইটি এক্সপার্ট [email protected]
×