
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপিকে তৃণমূল পর্যায়ে ঢেলে সাজাতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠণের আহবান করা হয়েছে। সে অনুযায়ী বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ছয়টির মধ্যে গত বছরের ২৫ নভেম্বরের পরবর্তী সময়ে গঠিত পাঁচটি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠণের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিনকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক করা হয়। যেকারণে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগের টিম লিডার আব্দুল আউয়াল মিন্টু স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে গত বছরের ২৫ নভেম্বরের পরবর্তী সময়ে বিভাগের সকল ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়েছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বিগত ১৭ বছর রাজপথে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে হামলা, মামলা ও কারাবরণকারী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে ২৫ নভেম্বরের পরবর্তী সময়ে গঠিত বাবুগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়নের বির্তকিত বিলুপ্ত কমিটি পুনর্বহালের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব।
ফলে দলের তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এনিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যা বড়ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন এলাকাবাসী।
উল্লেখিত অভিযোগ এনে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক আহবায়ক ইসরত হোসেন কচি তালুকদার দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক হায়দার আলী লেলিনের মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম লিডার আব্দুল আউয়াল মিন্টু বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
যার অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রেজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহাবুবুল হক নান্নুকে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়-তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে অমান্য করছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ ও সদস্য সচিব ওহেদুল ইসলাম প্রিন্স।
তারা তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করে নিজেদের পছন্দসই আওয়ামী লীগের দোসর দিয়ে গঠণ করা বিলুপ্ত কমিটি পুনর্বহালের জন্য অবৈধভাবে সম্মেলন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বাবুগঞ্জ উপজেলার বিলুপ্ত পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে ১নং বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য সম্মেলন করা হয় গতবছরের ১২ ডিসেম্বর। ২নং কেদারপুর ইউনিয়নে ৯ ডিসেম্বর, ৩নং দেহেরগতি ইউনিয়নে ১১ ডিসেম্বর, ৪নং চাঁদপাশা ইউনিয়নে ১০ ডিসেম্বর এবং ৬নং মাধবপাশা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয় ১০ ডিসেম্বর।
সূত্রমতে, তারেক রহমানের নির্দেশে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এসব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগের টিম লিডার আব্দুল আউয়াল মিন্টু। কিন্তু বির্তকিত বিলুপ্ত কমিটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সচল রাখতে অবৈধভাবে সম্মেলন করার জন্য বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ ও সদস্য সচিব ওহেদুল ইসলাম প্রিন্স মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
শনিবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ইসরত হোসেন কচি তালুকদার বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের দিয়ে অবৈধভাবে গঠনের পর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিলুপ্ত করা বির্তকিত কমিটি পুনর্বহাল করা হলে বিগত ১৭ বছরের ত্যাগী, নির্যাতিত ও কারাবরন করা নেতাকর্মীরা হারিয়ে যাবে। এতে করে সাংগঠনিক অবস্থা চরমভাবে দুর্বল হয়ে পরবে।
তাই তিনি (ইসরত) বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উল্লেখিত অভিযোগের তদন্ত করে ত্যাগী, নির্যাতিত ও কারাবরেন্য নেতাকর্মীদের সমন্ময়ে বিলুপ্ত পাঁচটি ইউনিয়নের কমিটি গঠনের জন্য নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদানের দাবি করেন।
পাশাপাশি উপজেলা বিএনপিকে বির্তকিত করার মিশনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ ও সদস্য সচিব ওহেদুল ইসলাম প্রিন্সের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা দুজনেই ইসরত হোসেন কচি তালুকদারের উল্লেখিত অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। দলের নিতিনির্ধারকরা যেভাবে সম্মেলন করলে ভাল হবে তারা সেই সিদ্ধান্ত নিবেন।
আঁখি