ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতেই বিচারাধীন ৫০ হাজার ফৌজদারি মামলা

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

রাজধানীতেই বিচারাধীন ৫০ হাজার ফৌজদারি মামলা

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ বিলম্বিত বিচারে ন্যায় বিচার অনিশ্চিত (জাস্টিস ডিলেড-জাস্টিস ডিনাইড)। বিচার প্রক্রিয়া যখন বিলম্বিত হয় তখন আদালতে দাঁড়িয়ে প্রায়ই আইনজীবীরা এমন আর্জি করে থাকেন। ভ্রান্ত সুরতহাল রিপোর্ট, বিলম্বিত ময়নাতদন্ত, ঝুলে থাকা চার্জশীট এবং ভুয়া সাক্ষী বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার প্রধান কারণ। আদালতে বিচার শুরু হলে মামলাজটেও অনেক সময় বিচার বিলম্বিত হয়। এতে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হয় আসামি এবং বাদী দুই পক্ষই। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে আইনের ফাঁকফোকর হিসেবে যেসব ঘটনার উদাহরণ দেয়া হয়, সেসব মামলা বা অপরাধ সাধারণত ফৌজদারি আইনে। আর ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের, তদন্ত, বিচার এবং রায় কার্যকর পর্যন্ত অনেক ধাপ আছে। খুন, আত্মহত্যাসহ বিভিন্ন ঘটনায় ফৌজদারি মামলা করা হয়। প্রথমে পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। তারপর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। তদন্ত এবং অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিলের পর শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। এসব স্তর সঠিকভাবে সম্পন্ন হলেই কেবল পরবর্তীতে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। যদি শুরুতেই গলদ থাকে তবে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচার বিলম্বের অন্যতম কারণ হলো পুলিশের তদন্ত কার্যক্রমে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ। পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের সময় সাক্ষীদের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোডের ১৬১ ধারায় জবানব›ীদ দাখিল না করলে বিচার শুরু হতে দেরি হয়ে যায়। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিলম্ব ঘটে। আদালতে সাক্ষী হাজির করার দায়িত্ব পুলিশ বিভাগের। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সঠিকভাবে সাক্ষী পাওয়া না গেলে মামলা মুলতবি করা হয়। অনেক মামলা এমনভাবে মুলতবি থাকে বছরের পর বছর। আইন অনুযায়ী চার্জশীটের পরে ৯০ দিনে বিচার শেষ করতে হবে। সাক্ষীর অভাবে অনেক মামলার বিচার শেষ করতে ৯০ মাসও লেগে যায়। এগুলো ছাড়াও বিচার বিলম্বের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে বিচারক স্বল্পতা, নারাজি দরখাস্ত শুনানিতে সময়ক্ষেপণ, মামলার নথিতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজের অনুপস্থিতি, অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিতাদেশ, রিভিশন মামলায় ব্যবহারের জন্য নিম্ন আদালতে নথি উচ্চ আদালতে আটকে থাকা, আইনজীবীদের সময় প্রার্থনা প্রবণতা ইত্যাদি। ন্যায়বিচার শুধু মামলার বাদীর একার নয়, ন্যায়বিচার আসামির জন্যও প্রযোজ্য। তাই শুধু আইন-আদালত নয়, তদন্তকারী সংস্থাও পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। আইন প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায়ই আসলে আইনের চরিত্র প্রকাশ করে। আইনের ফাঁকফোকর, অপপ্রয়োগ, প্রয়োগ না হওয়া ইত্যাদি কতগুলো সংস্থা বা বিভাগের ওপর নির্ভরশীল। এর সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ এবং সর্বোপরি আদালত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু রাজধানী ঢাকার ৩৬টি আদালতে ৫০ হাজারের বেশি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে কয়েকটি ২২-২৩ বছরের পুরনো মামলাও রয়েছে। মামলা ঝুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় সুরতহাল রিপোর্ট দায়ী থাকে। এসব সুরতহাল প্রতিবেদনে অপ্রয়োজনীয় লেখা, ভুল তথ্য, অপরিচ্ছন্ন লেখার কারণে খুন থেকে শুরু করে বিভিন্ন অস্বাভাবিক মামলার প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা যায় না। অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করা হলেও সুরতহালের গড়মিল প্রতিবেদনের কারণে এরা পার পেয়ে যায়। সুরতহাল প্রতিবেদনে স্বচ্ছ ধারণা থাকলে মামলার তদন্তে গতি আসে। অপরাধীর শাস্তিও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। তা না হলে প্রকৃত অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায়। অনেক সময় ঝুলে যায় মামলার কার্যক্রম। বিচার প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ ময়নাতদন্ত এবং ফরেনসিক রিপোর্ট। দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ ময়নাতদন্তের কাজ করে থাকে। সারাদেশের মর্গে হাজার হাজার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বছরের পর বছর পড়ে থাকার কারণে স্থবির হয়ে পড়ে মামলার তদন্ত। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন বিচারপ্রার্থীরা। সরকারী নির্দেশনা আছে ময়নাতদন্তের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসককে প্রতিবেদন দেয়ার। আদালতের নির্দেশও আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেরিতে পাওয়া বিচারে দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ফরেনসিক বিভাগে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। এই সুযোগে আলামত নষ্ট করে পার পেয়ে যায় অপরাধী। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের গাফিলতি, তদন্ত কর্মকর্তার অজ্ঞতা বা প্রভাবিত হওয়া এবং মর্গের সুযোগ-সুবিধার অভাবই এই বিলম্বের কারণ। শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে দুই শতাধিক মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বছরের পর বছর পড়ে আছে। এছাড়া রাজধানীর আরও দুটি মেডিক্যাল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) ফরেনসিক বিভাগ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে একইভাবে পড়ে আছে বহু মৃতদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। যে কোন অপরাধের বিচার শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আদালতে অভিযোগপত্র বা চার্জশীট দাখিলের পর। বেশিরভাগ বিলম্বিত মামলা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর মূল কারণ দেরি করে চার্জশীট দাখিল। তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি, আসামিদের প্রভাব এবং যথাযথ সাক্ষী প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণত চার্জশীট দাখিলে বিলম্ব ঘটে। অনেক মামলায় দেখা গেছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা ইচ্ছে করে তদন্ত কাজ দেরি করেছেন। পরে তিনি বদলি হয়ে গেলে নতুন একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি আবার নতুন করে শুরু করেন। এর মধ্যে লোপাট বা নষ্ট হয়ে যায় অনেক আলামত। তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন কূলকিনারা করতে না পেরে ঝুলিয়ে রাখেন মামলার কার্যক্রম। উর্ধতন মহল বা মিডিয়ার কারণে চাপ সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যেনতেনভাবে একটি চার্জশীট দাখিল করেন। এতে যাদের সাক্ষী করা হয় তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বিচার শুরু হলে দেখা যায় দুর্বল চার্জশীটের কারণে হয় মামলা ঝুলে যায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য, না হলে খালাস পেয়ে যায় অপরাধী। মৃত ব্যক্তির নামে চার্জশীট দেয়া হয়েছে এমন নজিরও রয়েছে। এসব মামলাগুলোর গন্তব্য সব সময়ই থাকে অজনা গন্তব্য। বিলম্বিত বিচারের আরও একটি প্রধান কারণ সাক্ষী বিড়ম্বনা। শুধু রাজধানীতে সাক্ষীর অভাবে প্রায় তিন হাজার মামলার বিচার কাজ এক যুগের বেশি সময় ধরে ঝুলে রয়েছে। এসব মামলায় চার্জশীটও দেয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল চার্জশীটের সুযোগ আসামিপক্ষ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সাক্ষীদের আদালতে হাজির না করার ব্যবস্থা করে। সাক্ষী হাজির না হওয়ায় যাবতীয় সুবিধা পাচ্ছে আসামিপক্ষ। বছরের পর বছর বিচারাধীন থাকায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে রাষ্ট্রপক্ষের। একপর্যায়ে আসামিরাও জামিনে বের হয়ে যান। বেশ কিছু মামলা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পুলিশ অভিযোগপত্রে যেসব সাক্ষীর নাম দিয়েছেন তাদের কোন অস্তিত্বই নেই। কখনও কখনও কোন বাড়ির ভাড়াটিয়াকে সাক্ষী করা হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পরে কিংবা ভাড়াটিয়া বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ জনকণ্ঠকে বলেছেন, বিচার বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো মামলা মুলতবি করা। আজকে সাক্ষী আসতে পারে নাই, আইনজীবী আছেন তিনি অন্য কোর্টে ব্যস্ত আছেন। আমার প্রস্তাব ছিল তিন মাসের মধ্যে সাবমিশন শেষ করতে হবে। সাক্ষীকে আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, তাকে আনতেই হবে। চার্জশীটের পরে ৯০ দিনে বিচার শেষ করতে হবে। সাক্ষীকে হাজির করতেই হবে। না হলে যে অফিসারের দায়িত্ব তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা হলেই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। ম্যাজিস্ট্রেট বদলি হয়ে যায়, জজ বদলি হয়ে যায়, পিপি বদলি হয়ে যায়। বিচার শেষ করতে ১০/১২ বছর লেগে যায়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেছেন, বিচার বিলম্বের অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে পুলিশের তদন্ত কার্যক্রমে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ। একই সঙ্গে আদালতে সাক্ষীদের হাজিরা নিশ্চিত করা। সাক্ষীদের কারণে অনেক ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশে ফৌজদারি মামলার বিচার দেওয়ানি মামলার তুলনায় অপেক্ষাকৃত অধিকতর বিস্তৃত প্রক্রিয়া। বিশেষত ফৌজদারি মামলার তদন্ত, অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আলামত জব্দ ও সংরক্ষণ, আদালতে সাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, আদালতে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশের নিম্ন আদালতসমূহ প্রসিকিউশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক বলেন, একটি মামলার ক্ষেত্রে যেমন বিচারকের ভূমিকা রয়েছে তেমনি পুলিশ এবং চিকিৎসকদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চিকিৎসকের সাক্ষ্য এবং সুরতহাল রিপোর্ট মামলার মোড়ই ঘুরিয়ে দেয়। ডাক্তারের অবহেলায় যেমন একজন রোগীর জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হয়, তেমনি ডাক্তারের সাক্ষ্য ও সুরতহাল রিপোর্টও মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫০৯ ধারা মতে ডাক্তাররা (চিকিৎসক) আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। খুন, ধর্ষণের মামলায় ডাক্তারের রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৃত্যুর কারণ কিংবা ধর্ষণ নিরূপণের জন্যই ডাক্তারী পরীক্ষার প্রয়োজন। ডাক্তারী রিপোর্টের পরও তাকে আদালতে সাক্ষী হিসেবেও তলব করা হয়ে থাকে। কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণে ডাক্তারের সাক্ষ্য ছাড়াও ময়নাতদন্তের কিংবা ধর্ষণের রিপোর্ট সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এগুলো হচ্ছে যিনি রিপোর্ট করেছেন তিনি যদি মৃত হন, তিনি যদি সাক্ষ্য দিতে অক্ষম হন, তিনি যদি বাংলাদেশের বাইরে থাকেন এবং তাকে অতিরিক্ত ব্যয় ছাড়া হাজির করা না যায়। (৩৭ ডিএলআর ১৫৬; ৬ বিএলডি ৩৪; ৪ বিসিআর ২০৪)। দণ্ডবিধির ১৯৩ ধারায় বলা আছে, যদি কোন ব্যক্তি বিচারাধীন কোন মামলায় ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, তাহলে সে আইনের চোখে অপরাধী। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড হতে পারে। জরিমানাও হতে পারে। ১৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝোলানোর লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় এবং এই বিষয়টি বিচারক বুঝতে পারেন, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। আর যদি ওই সাক্ষ্যের কারণে কোন নিরপরাধ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, তাহলে সাক্ষীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে আদালত। ১৯৫ ধারায় বলা আছে, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার কারণে কোন ব্যক্তির যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, তাহলে মিথ্যা সাক্ষ্যদানকারী যাবজ্জীবন অথবা সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। তবে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত রাসায়নিক পরীক্ষক, সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক, রক্ত পরীক্ষক, হস্তলিপি বিশেষজ্ঞ, আঙ্গুলাঙ্ক বিশারদ অথবা আগ্নেয়াস্ত্র বিশারদদের এই কার্যবিধি অনুযায়ী কোন কার্যক্রম চলাকালীন কোন বিষয়ে পরীক্ষা বা বিশ্লেষণ করিয়ে রিপোর্ট দিতে হলে তাকে আদালতে তলব না করেই কথিত দলিল সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা যাবে। রাসায়নিক পরীক্ষকের রিপোর্টও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাসায়নিক পরীক্ষকের সাক্ষ্যমূল্য সামান্য, যদি না তার পরীক্ষিত বস্তুর পরিচয় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। এসব কারণে সাক্ষী এবং সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ই মামলা নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর যে কোন একটির ঘাটতি হলে মামলা বিলম্বিত হয়।
×