ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় প্রধান দু’টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

নওগাঁয় প্রধান দু’টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ॥ গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নওগাঁর প্রধান দু’টি নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে তৃতীয় পর্যায়ে আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মান্দা এবং আত্রাই উপজেলায় আত্রাই নদীতে পূর্বের ভাঙ্গনগুলো দিয়ে পুনরায় জনপদে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গনস্থানগুলো সময়মত মেরামত না করায় তৃতীয়বার বন্যার কবলে পড়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙ্গন স্থানগুলো মেরামতের আশ্বাস দিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু পাউবোর গাফিলতি ও ঠিকাদারের অবহেলার কারণে সময়মত এসব ভাঙ্গনস্থান মেরামত করা সম্ভব হয়নি। মান্দা উপজেলায় কসব ইউনিয়নে বনপুরা নামকস্থানে আত্রাই নদীর ডানতীরে মুল বাঁধ নুতন করে ভেঙ্গে গেছে। এর ফলে মান্দা উপজেলার কসব, নুরুল্যাবাদ ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নসহ আত্রাই উপজেলা এবং রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উজ্জামান খান জানিয়েছেন, আত্রাই নদীর পানি ৩টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর ধামইরহাটের শিমুলতলী পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার, মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার এবং আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ রেলষ্টেশন পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে নওগাঁ ছোট যমুনা নদীর পানি বিপদসীম্রা ২৪ সিন্টমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, পূর্বের ৩টি স্থানে যে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড সেগুলোর মেরামতের কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু মাটির অভাবে মেরামত কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হতেই তৃতীয় পর্যায়ে পানি বৃদ্ধির কারনে আবারও সেসব স্থান দিয়ে পানি জনপদে ঢুকতে শুরু করেছে। এর ওপর নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় নুতন নুতন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে এখনও কেউ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণ করেন নি। আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সানাউল ইসলাম জানিয়েছেন, বিগত বন্যায় এই উপজেলায় আত্রাই নদীর মোট ৪টি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছিল। এর মধ্যে শিকারপুর, ভাঙ্গাজাঙ্গাল ও মালিপুকুর এই ৩টি স্থানে মেরামত করা হলেও আহসানগঞ্জের নিকটে জাত আমরুল নামক স্থানের বড় ভাঙ্গনটি মেরামত কাজ চলছিল। কিন্তু মেরামত কাজ শেষ না হতেই পুনরায় টানা বর্ষণ এং উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে পুনরায় ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে নদীর পানি জনপদে প্রবেশ করেছে। এর ফলে আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ, পাঁচুপুর এবং নাটোর জেলার খাজুরা এবং নলডাঙ্গার বিশাল এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফসল এবং বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
×