ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধ দমন ও অপরাধী শনাক্তকরণ

এনালগের বদলে পুলিশ এখন ডিজিটাল সিস্টেমে

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

এনালগের বদলে পুলিশ এখন ডিজিটাল সিস্টেমে

শংকর কুমার দে ॥ অপরাধ দমনে ও অপরাধী শনাক্তকরণে ‘এনালগ সিস্টেম’ থেকে পুলিশ চলে গেছে ‘ডিজিটাল সিস্টেমে’। অপরাধ ঠেকাতে ও অপরাধী শনাক্তকরণে প্রযুক্তি নির্ভরশীলতায় সফলতা অর্জন করেছে পুলিশ। বিশেষ করে অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে ‘সিসি টিভির ফুটেজ’ ও ‘মোবাইল ফোনের কললিস্ট’। এ ছাড়াও অপরাধ তদন্তে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন, ভেহিক্যাল থ্যোফট এ্যান্ড রিকভারি ডাটাবেজ, মেটাল ডিটেক্টর, ডিজিটাল সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা, ডিএনএ টেস্ট, কলটেকিং, ওয়াকিটকি ইলেক্ট্রনিক্স ট্রাফিক সাইন বোর্ড, মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি সেবার মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দমন উভয়ই করা সহজ হচ্ছে। ই-পুলিশ সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্লুলেস মামলাগুলো প্রযুক্তির সাহায্যে রহস্য উদঘাটনের বর্তমান সময়ের অন্যতম উদাহরণ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও ওয়াহিদা খানম, তার মুক্তিযোদ্ধা পিতাকে হত্যা চেষ্টার ঘটনাটি জ্বলন্ত প্রমাণ। ক্লুলেস অপরাধগুলো খুবই দ্রুত উদঘাটনের জন্য সিসি টিভির ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের কললিস্টের সাহায্য নেয়া হচ্ছে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটনে। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও ওয়াহিদা খানম হত্যা চেষ্টার মামলার কোন প্রত্যক্ষদর্শী নেই। ক্লুলেস এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে একমাত্র নির্ভরশীল প্রযুক্তি হয়ে উঠেছে সিসি টিভির ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই- বাছাই করে খুনী শনাক্ত করার পদ্ধতি। তদন্তের সঙ্গে সংশিষ্ট পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্রে জানা গেছে, শুধু দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে হত্যার চেষ্টা মামলাই নয়, টেকনাফের সেনা কর্মকর্তা সিনহা হত্যাকা-ের বিষয়ে ওসি প্রদীপ, এসআই লিয়াকতসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা কার কি ধরনের তা উদঘাটনেও সিসি টিভির ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই-বাছাইয়ের সাহায্য নেয়া হচ্ছে। প্রথমে ঘটনাস্থল এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এরপর মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ট্র্যাকিং পদ্ধতি অনুসরণ করে খুনী ও খুনের চেষ্টাকারীকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের সাহায্য নেয়া হচ্ছে। এই ধরনের প্রযুক্তির সাহায্যে অপরাধ উদঘাটনে যে সাক্ষ্য, প্রমাণ, আলামত হাজির করা হয় তা মোটামুটি নির্ভুল। কিন্তু প্রযুক্তির বাইরে যেসব সাক্ষ্য, প্রমাণ বা আলামত আছে তা পরিবর্তন করে অপরাধের ঘটনার ধরন পরিবর্তন করা সম্ভবপর। কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্যে অপরাধ উদঘাটনের সত্যতা বিশ্বাসযোগ্য। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে যে জঙ্গী বিরোধী অভিযান চলমান আছে তার সাফল্যের নেপথ্যেও সিসি টিভির ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রযুক্তি কাজ করছে। একজন জঙ্গীকে গ্রেফতারের পর তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট এবং ওই জঙ্গী যেসব জায়গায় গিয়েছে, অবস্থান করেছে, কথা বলেছে তা শনাক্ত করা হচ্ছে এই প্রযুক্তির প্রক্রিয়ায়। এমনকি জঙ্গী গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে অনেক কিছুই অস্বীকার করার পর প্রযুক্তির সামনে আনা হলে তা আর অস্বীকার করতে পারছে না। অনুরূপভাবে অপরাধী, সন্ত্রাসী গ্রেফতারের বেলায়ও এই প্রযুক্তি কাজ করছে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনে এবং অপরাধী গ্রেফতারে বিষয়েও। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ধর্ষণের ঘটনায় উদ্ধারকৃত ভিডিও ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমে ওই এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এরপর মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ট্র্যাকিং পদ্ধতি অনুসরণ করে ধর্ষক মজনুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব। এটা ছিল ক্লুলেস ঘটনা। সেই ধর্ষণ মামলার আসামি মজনু এখন কারাগারে আটক এক বিচারাধীন আসামি। রাজধানীর উত্তরায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডাঃ সারোয়ার আলীর বাড়িতে হামলাকারীরাদের গ্রেফতারের জন্য পলাতক গাড়ি চালক নাজমুলের মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করা হয়। এরপর গ্রেফতার করা হয় দারোয়ান হাসান ও বর্তমান গাড়ি চালক হাফিজকে। অপরাধের ঘটনা বহুল আলোচিত হয়েছে তা প্রযুক্তিনির্ভর করেই রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আলামত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে পুলিশ আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্ষম। ঘটনাস্থল থেকে হাতের ছাপ বা শারীরবৃত্তীয় আলামত যেমন রক্ত, বীর্য, লালা বা অন্যান্য উপাদান সংগ্রহের উপকরণ ও কৌশল এখন থানা পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়েছে। ফলে মামলা উদ্ঘাটনে এখন ফরেনসিক ও বায়োমেট্রিক আলামতের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, সিসি টিভির ফুটেজ, মোবাইল ফোনের কললিস্ট তো আছেই, এ ছাড়াও অপরাধ তদন্তে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন, ভেহিক্যাল থ্যোফট এ্যান্ড রিকভারি ডাটাবেজ, মেটাল ডিটেক্টর, ডিজিটাল সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা, ডিএনএ টেস্ট, কলটেকিং, ওয়াকিটকি, ইলেক্ট্রনিক ট্রাফিক সাইন বোর্ড, মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি সেবার মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দমন উভয়ই করা সহজ হচ্ছে। ই-পুলিশ সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্র¿ণে। বর্তমানে প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করতে উন্নত ধরনের মোবাইল ট্র্যাকিং পদ্ধতি বেশ প্রশংসা ও সফলতা পেয়েছে। মোবাইল ট্র্যাকিং পদ্ধতির মাধ্যমেই দ্রুততার সঙ্গে অপরাধী শনাক্ত ও গ্রেফতারের কারণে পুলিশও প্রশংসা কুড়াচ্ছে। অপরাধ সংঘটিত হলেই এলাকার সিসিটিভি খোঁজ নিয়ে ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। অপরাধী ধরতে মোবাইল ফোনের ভূমিকা ॥ গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কোথাও কোন অপরাধ ঘটামাত্রই আগে শুরু হয় ওই এলাকায় ব্যবহৃত মুঠোফোনের ওপর নজরদারি। সেই মুঠোফোন মালিকদের থেকে বাছাই করা সন্দেহভাজনদের পরিচয় সম্পর্কে তথ্য নিয়ে খোলা হয় তদন্তের খাতা। কেউ হত্যার শিকার হলে তাঁর মুঠোফোন নম্বর আগেই চলে যায় পুলিশের কব্জায়। শুরু হয় বিস্তর বিশ্লেষণ। মোবাইল ফরেনসিকের সব প্রযুক্তি এখন তাঁদের হাতে রয়েছে। একটি মুঠোফোন বা ডিজিটাল ডিভাইস থেকে মুছে ফেলা তথ্যও তাঁরা বের করতে পারেন। কোন অপরাধের শিকার বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুঠোফোন ব্যবহারের অভ্যাস জানলে তাঁর চরিত্র সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা পাওয়া যায়। বর্তমানে তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করেই বেশিরভাগ মামলার তদন্ত করে থাকেন। এর মধ্যে মোবাইল ফোন অন্যতম। খুন, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাই, ধর্ষণ, চুরিসহ গুরুতর সব অপরাধের তদন্ত কাজে তারা প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকেন। এসব মামলার আসামিদের গ্রেফতার এবং শনাক্ত করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়ে থাকে মোবাইল ট্র্যাকার। সন্দেহভাজন আসামি ও তার ঘনিষ্ঠজনদের মোবাইল ফোন শনাক্ত করার পর তা রেকর্ড করে গতিবিধি এবং কথপোকথন রেকর্ড করা হয়। তদন্তের এক পর্যায়ে সন্দেহ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে ওই সন্দেহভাজনকে আটক কিংবা গ্রেফতার করা হয়ে থাকে। এর আগেই তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনের কললিস্ট সংগ্রহ করে সন্দেহভাজনদের তালিকা করে থাকে। যেভাবে ট্র্যাকিং করে অপরাধী ধরা হয় ॥ বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আর মোবাইল ফোনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধী শনাক্ত করা এখন খুব কঠিন কাজ নয়। যে এলাকায় অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে নির্ধারিত সে এলাকায় মোবাইল টাওয়ারের মাধ্যমেই ঘটনার সময়ে থাকা মোবাইল ফোনগুলো চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এরপর এসব মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়। এসব নম্বর থেকে সন্দেহভাজন মোবাইল নম্বর চিহ্নিত করে চলে তদন্তের কাজ। তবে কেউ মোবাইল ফোন থেকে সিম পরিবর্তন করলেও ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বর দিয়ে সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব। তবে অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন সন্দেহভাজন মোবাইল ফোনটি ব্যবহার বন্ধ থাকলে অপরাধীকে খুঁজে পেতে সময়ের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নিকটাত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মোবাইল ফোনের ওপর নজরদারি চলে। দীর্ঘদিন পরে হলেও সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিকটাত্মীয় কিংবা বন্ধুদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করামাত্রই তাকে শনাক্ত করা হয়। এরপরই চলে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির অবস্থান শনাক্তের কাজ। এছাড়া একটি অপরাধ সংঘটনের সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে যেসব ব্যক্তি থাকেন পার্শ্ববর্তী টাওয়ার থেকে তাদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ব্যক্তিগত পরিচয় সংগ্রহ ছাড়াও তাদের গতিবিধি মনিটরিং করা হয়। এতে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে। যে কোন ঘটনা তদন্তে পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকারকে বর্তমানে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, এ খবর এখন অপরাধীদের কাছেও পৌঁছে গেছে। এর ফলে যাদের এ সম্পর্কে ধারণা রয়েছে তারা অপরাধ সংঘটনের পরপরই মোবাইল ফোনটি ফেলে দিচ্ছে অথবা ব্যবহার একেবারেই বন্ধ করে দিচ্ছে। এ কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরাধের মোটিভ উদ্ধারেও বিলম্ব হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, অপরাধ ঘটামাত্রই এখন এলাকায় কোন সিসি ক্যামেরা আছে কিনা, তা খোঁজা শুরু করেন পুলিশের কর্মকর্তারা। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে গাড়ির নম্বর চিহ্নিত করতে পারে এমন সিসি ক্যামেরা। আর কোথাও ক্যামেরা না থাকলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারা এঁকে ফেলার প্রযুক্তিও পুলিশের কাছে রয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, এতদিন পর্যন্ত কেবল নির্দিষ্ট সোর্সনির্ভর হয়ে পুলিশ কাজ করলেও এখন জনগণের সঙ্গে পুলিশের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। এখন জরুরী হেল্পলাইন ৯৯৯ বা বিশেষ কিছু এ্যাপের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ক প্রযুক্তি নির্ভরশীল। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম (সিটি) ইউনিটের এ্যাপ ‘হ্যালো সিটি’ এবং র‌্যাবের ‘রিপোর্ট টু র‌্যাব’ এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে তথ্য পেয়ে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের ধরতে সুবিধা পাচ্ছে পুলিশ। আবার প্রযুক্তির ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধও বেড়েছে। আর তা দমনে ‘সাইবার পুলিশিং’ও বেড়েছে। র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, অপরাধী শনাক্তে পুলিশ গড়ে তুলেছে বিশাল তথ্যভা-ার। প্রায় এক যুগ ধরে কারাগারে যাওয়া সব সন্দেহভাজনেরই আঙুলের ছাপ, ডিএনএ, চোখের আইরিশসহ পাঁচ ধরনের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য তথ্যভা-ারে সংগ্রহে রাখা হচ্ছে। এর সঙ্গে অপরাধী বা অজ্ঞাত পরিচয় মৃতদেহ শনাক্তে ব্যবহৃত হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিশাল তথ্যভা-ার। ছদ্ম পরিচয়ে থাকা কোন ব্যক্তি গ্রেফতারের পরে আঙুলের ছাপ দেয়ামাত্রই জাতীয় তথ্যভা-ার থেকে উঠে আসছে তাঁর আসল পরিচয়। দেশের প্রত্যন্ত এলাকার কোন থানায়ও তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ থাকলে সেটি খুব অল্প সময়েই জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা বা হত্যার শিকার পরিচয়হীন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তেও আঙুলের ছাপ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ঢাকা মহানগরের মধ্যে থাকা সব ভাড়াটে ও বাড়িওয়ালার তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বোমা উদ্ধার ও অপসারণেও যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তি। এখন বোমা নিষ্ক্রিয়করণ যন্ত্রপাতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুটি অত্যাধুনিক রোবট। দূরনিয়ন্ত্রিত রোবটগুলো বোমা খোঁজা, নিষ্ক্রিয় করা থেকে শুরু করে দেয়াল ভাঙ্গা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো কাজও করতে পারে। পিটিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের দিন শেষ হয়ে গেছে, সময় এখন প্রযুক্তির। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে সেটা যেমন নির্ভুল হবে তেমনি মানুষও হয়রানির হাত থেকে বাঁচবে। অপরাধ দমন, নিয়ন্ত্রণ, ক্লুলেস অপরাধের রহস্য উদঘাটন, অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে এখন প্রযুক্তি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে পুলিশ।
×