ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফারহান ইশরাক

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১৬ জুলাই ২০২০

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন

সারা পৃথিবীতে কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ মৃত্যুস্রোত বইছে। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটছে, আক্রান্ত হচ্ছে আরও কয়েকগুণ। তবে এর পাশাপাশি মানুষের সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরার প্রবণতাও বাড়ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই করোনা আক্রান্তদের সুস্থতার হার পূর্বের তুলনায় উর্ধমুখী। জনহপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ও রোগীদের সুস্থতার হার নিয়ে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু নিরেট সত্য হলো, কার্যকরী ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত জীবন-মৃত্যুর মাঝে থেকেই এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষকে লড়াই করতে হবে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে মানুষের সচেতনতা যে পর্যায়ে ছিল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সে তুলনায় সচেতনতা বেড়েছে। আবার এর বিপরীত চিত্রও সমানভাবে দৃশ্যমান। তবে মানুষ শারীরিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য যে ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করছে, মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার্থে তার এক শতাংশও করছে বলে মনে হয় না। বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে উঠে এসেছে, মহামারীর এই সময়ে সামগ্রিকভাবে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে তা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তাই সময় থাকতেই সকলের উচিত হবে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও সমান যতœশীল হওয়া। তিন মাস ধরে লকডাউনের প্রভাবে সমাজের সঙ্গে মানুষের যে স্বাভাবিক সম্পর্ক, সেটি বিনষ্ট হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন ঘরে থাকার কারণে সকলের মধ্যে এক ধরনের মানসিক চাপ ও শঙ্কার সৃষ্টি হচ্ছে, যেটি সবাইকে ঠেলে দিচ্ছে ক্লান্তিহীন বিষণœতার দিকে। মূলত লম্বা সময় ধরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার স্থবিরতাই এর প্রধান কারণ। আর এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে তরুণ প্রজন্ম। এই সময়ে তরুণদের বিষণœতার আরও বেশ কিছু জোরালো কারণ রয়েছে। প্রথমত, গত চার মাসে ইন্টারনেটে প্রচলিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়েছে। সারাদিন ঘরে থাকার ফলে দিনের বেশিরভাগ সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করছেন তরুণেরা। এটি চারপাশের পরিবেশ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহার মানুষের মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তার করে, যা থেকে পরবর্তীকালে বিষণœতা ও অনিদ্রার মতো বিভিন্ন জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিষণœতার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে সামাজিক বলয় থেকে দূরে থাকাকে চিহ্নিত করা যায়। ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সবাইকেই আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে। ভার্চুয়ালি একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলেও মানুষের মাঝে দূরত্ব বাড়ছে, আবার নিজেদের সুরক্ষার জন্য এটি উপেক্ষা করারও উপায় নেই। এর ফলে মানুষের মাঝে এক ধরনের অবসাদের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×